H3N2 Influenza A Virus: ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই করতে খাদ্যতালিকায় এই খাবারগুলি রাখতে ভুলবেন না
শিশুদের ক্ষেত্রে ইনফ্লুয়েঞ্জা প্রাণঘাতী হতে পারে
হাইলাইটস:
•সারা ভারত জুড়ে H3N2 ভাইরাস দাপিয়ে বেড়াচ্ছে
•অ্যাডিনোভাইরাসের পাশাপাশি এটিও শিশুদের জন্য ক্ষতিকর
•এই ভাইরাস থেকে বাঁচতে একটি স্বাস্থ্যকর খাদ্যতালিকা তৈরি করুন
H3N2 Influenza A Virus: একের পর এক রোগ যেন আমাদের পিছু ছাড়ছে না। কোভিডের পর, আবার দেশে এক আতঙ্কের পরিস্থিতি। অ্যাডিনোভাইরাসের পাশাপাশি এই রোগের কারণ হিসেবে উঠে আসছে আরেকটি ভাইরাসের নাম। যার নাম H3N2 ভাইরাস, ইনফ্লুয়েঞ্জা-A ভাইরাসের একটি সাবটাইপ। ভারতে যা ছড়িয়ে পড়ছে দ্রুতগতিতে। H3N2 ভাইরাস অত্যন্ত সংক্রামক। কাশি, হাঁচি বা কথা বলার সময় নির্গত ফোঁটার মাধ্যমে একজন সংক্রমিত ব্যক্তি থেকে অন্যের কাছে ভাইরাস চলে যায়।
দেশের অধিকাংশ এলাকায় ফ্লু-র মতো পরিস্থিতি গ্রাস করেছে। জ্বর, কাশি, নাক দিয়ে জল পড়া এবং গায়ে ব্যথায় ভুগছেন বহু মানুষ। আবহাওয়ার পরিবর্তনের সময় এরকম হয়েই থাকে। তবে এবার হচ্ছে একটি ভাইরাসের কারণে। এটি মরসুমি ফ্লু নয়, এটি হল H3N2 ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস (H3N2 Influenza A Virus) দ্বারা সৃষ্ট রোগ। এর ভাইরাসের লক্ষণগুলি ঋতুকালীন ফ্লু ভাইরাসের মতোই এবং এর মধ্যে জ্বর, সর্দি, কাশি, নাক দিয়ে জল পড়া, গায়ে ব্যথা, বমি বমি ভাব, ডায়রিয়া অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে। গুরুতর ক্ষেত্রে, এটি শ্বাসকষ্টের কারণ হতে পারে। তখন হাসপাতালে ভর্তি করতে হচ্ছে রীতিমতো। চিকিৎসকদের কথায়, কিছু ক্ষেত্রে ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের এই নয়া স্ট্রেইন রীতিমতো ভয়ের।
এই ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। শহরে এখনও পর্যন্ত প্রায় ৪০% থেকে ৭০% H3N2 ভাইরাসের কেস নথিভুক্ত করা হয়েছে। তবে, এই মরসুমে এই ধরনের রোগের বৃদ্ধি স্বাভাবিক বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। ICMR-এর মতে এই ভাইরাসটি অন্য রোগের তুলনায় অনেক বেশি ক্ষতিকর। ফলে এই ভাইরাস দ্রুত ছড়িয়ে পড়া এক নতুন বিপদের সংকেত হয়ে দাঁড়াচ্ছে। তাই বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন একটি শক্তিশালী রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই ভাইরাসের সাথে মোকাবিলা করতে আপনাকে একটি স্বাস্থ্যকর খাদ্যতালিকা বানাতে হবে। এবার জেনে নিন কোন কোন খাবার খেলে প্রতিরোধ করা সম্ভব এই মারণ ভাইরাসটিকে-
১. প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার খান:
প্রতিটি মানুষের উচিত শরীরের ওজন অনুযায়ী ০.৪ থেকে ১ গ্রাম প্রোটিন খাওয়া। ফলে খাদ্যতালিকায় প্রোটিন রাখতেই হবে। আপনার শরীরের কোষ মেরামত করতে এবং নতুন কোষ তৈরি করতে আপনার খাদ্যে প্রোটিনের প্রয়োজন। আবার প্রোটিন ইমিউনিটি পাওয়ার বাড়াতেও সাহায্য করে। তাই প্রোটিন খাওয়া এই সময়ে বাড়াতে হবে।
দুধ, পনির, সয়াবিন, মুসুর ডাল, বাদাম, মাছ, মাংস এবং ডিম আপনার প্রোটিনের ঘাটতি কমাতে পারে। এইগুলি খাদ্যতালিকায় রাখলে প্রোটিনের চাহিদা মেটানো সম্ভব।
২. ভিটামিন C যুক্ত খাবার খাওয়া উচিত:
আসলে ভিটামিন C হল একটি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। এই অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কয়েকগুণ বৃদ্ধি করতে পারে। তাই ইমিউনিটি কমে গেলে খেতে হবে ভিটামিন C যুক্ত খাবার। কারণ ইনফ্লুয়েঞ্জার মতো ভাইরাস কিন্তু রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমিয়ে দেয়। তাই সেই সময়ে ভিটামিন C যুক্ত খাবার বেশি করে খাওয়া দরকার। এক্ষেত্রে যে কোনও ধরনের লেবু, আমলকী, আপেল ইত্যাদি খেতে পারেন। এই ধরনের ফলে রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমানে ভিটামিন C।
৩. ভেষজ চা (Herbal Tea) পান করলে উপকার পেতে পারেন:
ইনফ্লুয়েঞ্জার লক্ষণ শরীরে দেখা দিলে মুখে কোনও স্বাদ পাওয়া যায় না। এইরকম পরিস্থিতিতে ভেষজ চা আপনার মুখে স্বাদ এনে দিতে পারে। তুলসী, আদা, লবঙ্গ, দারচিনির সংমিশ্রণে তৈরি করুন ভেষজ চা (Herbal Tea)। এই চায়ে থাকে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং পলিফেনলস। তাই ইনফ্লুয়েঞ্জার লক্ষণ শরীরে দেখা দিলে সারাদিনে অন্তত ২ বার ভেষজ চা পান করতে পারেন।
৪. রঙিন সবজি খাদ্যতালিকায় রাখতে পারেন:
আপনার যদি ইনফ্লুয়েঞ্জার লক্ষণ থাকে তবে রঙিন সবজি রাখুন খাদতালিকায়। আসলে রঙিন সবজি রয়েছে ভিটামিন এবং খনিজ। এছাড়াও রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমানে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। এই উপাদানগুলি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তুলতে সাহায্য করে। তাই আপনার প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় টমেটো, বাঁধাকপি, রাঙা আলু এবং পালং শাক রাখতে ভুলবেন না।
৫. ওআরএস (ORS) ছাড়া কার্যত অসম্ভব:
ইনফ্লুয়েঞ্জার লক্ষণ যদি শরীরে দেখা দেয় তবে শরীরে জলের ঘাটতি হয়। তাই সারাদিন ওআরএস খাওয়ার চেষ্টা করুন। বেশি খেতে না পারলেও অল্প অল্প করে খান। তবেই রোগ থেকে মুক্তিলাভ সম্ভব। শরীরে যদি জলের যোগান না থাকে তবে ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব না। কিন্তু যদি আর শ্বাসকষ্ট বা অক্সিজেন স্যাচুরেশন কমে যায় তবে সময় নষ্ট না করে দ্রুত হাসপাতালে যান।
এইরকম স্বাস্থ্য এবং জীবনধারা সম্পর্কিত প্রতিবেদন পেতে ওয়ান ওয়ার্ল্ড নিউজ বাংলার সাথে যুক্ত থাকুন।