lifestyle

হাড়কে মজবুত করতে ক্যালশিয়াম সমৃদ্ধ এই নিরামিষ ৫টি খাবারকে আপনার খাদ্যতালিকায় রাখুন

হাড়ের গঠনে প্রয়োজন হয় ক্যালশিয়াম

বিভিন্ন অঙ্গসমূহের সঠিকভাবে কাজ করতে সহায়তা করে খনিজ ও ভিটামিন। আর বিভিন্ন খনিজের মধ্যে ক্যালসিয়াম হচ্ছে এমন একটি উপাদান, যা আমাদের হাড় ও দাঁতের সুরক্ষা নিশ্চিত করে। তবে এর বাইরেও পেশির কার্যকারিতার জন্যও ক্যালসিয়াম প্রয়োজন। বয়স বৃদ্ধি পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে শরীরে ক্যালসিয়ামের ঘাটতির সম্ভাবনাও বেড়ে যায়। মানবদেহের হাড় গঠনে ক্যালসিয়ামের ভূমিকা অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। এই খনিজটি হাড়ের গঠনে সাহায্য করে। এছাড়া বিপাকীয় নানা কাজে এর ব্যবহার রয়েছে।

আমাদের দেশের খাদ্যাভ্যাসে বৈচিত্র্য রয়েছে। একশ্রেণির মানুষ আমিষ খান তো, অপরশ্রেনি শুধুমাত্র মুখে তোলেন নিরামিষ। মুশকিল বিষয় হল, নিরামিষ খেতে গেলে আপনাকে নিজের খাদ্যতালিকার প্রতি বিশেষ নজর দিতে হবে। যাতে শরীরে একটুও পুষ্টির ঘাটতি না থাকে সেই দিকে লক্ষ্য থাকা দরকার।

আবার নিরামিষ খাবারের মধ্যেও প্রচুর বিকল্প রয়েছে। আপনাকে শুধুমাত্র সঠিক খাবারটি বেছে নিতে হবে। প্রোটিন, কার্বোহাইড্রেট, ফ্যাট, ভিটামিন এবং খনিজের ভারসাম্য রেখে খাবার বাছতে হবে। চিন্তা করবেন না, আজ আমরা আপনার এই কাজকে সহজ করে তোলার জন্য কিছু ক্যালশিয়াম সমৃদ্ধ নিরামিষ খাবারের কথাই আলোচনা করেছি, যারা হাড়কে শক্ত করতে সাহায্য করে। একনজরে দেখে নিন –

রাগি:

রাগি ওজন কমানোর জন্য একটি আশ্চর্যজনক শস্য হিসেবে কাজ করে। এটি ক্যালসিয়ামে সমৃদ্ধ এবং এতে হাই ফাইবার রয়েছে। এছাড়া এতে রাইবোফ্ল্যাভিন, ভিটামিন C এবং ভিটামিন E রয়েছে। এটি ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের জন্য খুবই উপকারী। এছাড়া সহজপাচ্য এবং আয়রন সমৃদ্ধ হওয়ায় শিশুর হাড়কে মজবুত করতে সহায়তা করে। ১০০ গ্রাম রাগিতে থাকে প্রায় ৩৬ মিলিগ্রাম ক্যালশিয়াম। ফলে শরীর সুস্থ রাখতে এবং হাড়ের স্বাস্থ্য বজায় রাখতে নিজের খাদ্যতালিকায় রাগি রাখুন।

কিশমিশ:

কিশমিশ হল শুকনো আঙ্গুর। কিশমিশ বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে উৎপাদিত হয় এবং এটি সরাসরি খাওয়া যায় ও বিভিন্ন খাদ্য রান্নার সময় উপকরণ হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এটি প্রাচীনকাল থেকে শক্তি বা ক্যালরির চমৎকার উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। কিশমিশ আমরা সবাই খেতে ভালোবাসি। কিশমিশে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন C, আয়রন, B6, ম্যাগনেশিয়াম, পটাশিয়াম এবং ক্যালসিয়াম। ১০০ গ্রাম কিশমিশে প্রায় ৭৩ গ্রাম ক্যালশিয়াম থাকে। তাই শরীরে ক্যালসিয়ামের ঘাটতি দেখা দিলে প্রতিদিন কিশমিশ খেতে হবে।

ছোলা:

ছোলা একটি ডালজাতীয় খাদ্যশস্য যা প্রোটিনে সমৃদ্ধ। ছোলা মূলত পুষ্টিগুনে ভাণ্ডার। এতে থাকে ভিটামিন C, আয়রন, ভিটামিন B6, ক্যালশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, সোডিয়াম এবং পটাশিয়াম। ১০০ গ্রাম ছোলায় রয়েছে ১৫০ মিলিগ্রাম ক্যালশিয়াম। শরীরে ক্যালশিয়ামের ঘাটতি সঠিক থাকতে এবং হাড়কে মজবুত থাকতে আপনার প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় ছোলা রাখুন।

খেজুর:

খেজুর অত্যন্ত সুস্বাদু ও বেশ পরিচিত একটি ফল। যা ফ্রুকটোজ এবং গ্লাইসেমিক সমৃদ্ধ। এটা রক্তে শর্করার পরিমাণ বাড়ায়। মিষ্টি খাবারের মধ্যে অন্যতম হল খেজুর। তাই খেজুরকে চিনির বিকল্প হিসেবে ধরা হয়ে থাকে। এতে রয়েছে পটাশিয়াম, আয়রন, ভিটামিন B6, ম্যগনেশিয়াম এবং ফাইবার। এই উপাদানগুলি খেজুরকে করে তোলে অনন্য। তাই নিয়মিত খাওয়ার চেষ্টা করুন। ১০০ গ্রাম খেজুরে আছে প্রায় ৭১ মিলিগ্রাম ক্যালশিয়াম। খেজুর শক্তির একটি ভালো উৎস। তাই খেজুর খাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই শরীরের ক্লান্তিভাব দূর হয় এবং হাড়ও মজবুত থাকে।

নটে শাক:

নটে শাক অন্যতম শ্রেষ্ঠ শাক এবং দামেও সস্তা। নটে শাক সাধারণত বাজারে দু ধরনের পাওয়া যায় সবুজ নটে ও রাঙা নটে। আর এক রকমের হলো কাঁটা নটে। এই শাকের শিকড় ও পাতা নানা রোগে ওষুধ হিসেবেও খাওয়া হয়। আমরা বাঙালিরা শাক খেতে প্রচন্ড ভালোবাসি। শরীরে ক্যালশিয়ামের ঘাটতি পূরণ করতে নটে শাক কার্যকরী ভূমিকা নেয়। এই শাকে রয়েছে ভিটামিন C, ভিটামিন K, ভিটামিন B6, ভিটামিন A, আয়রন, পটাশিয়াম এবং ম্যাগনেশিয়াম। ১০০ গ্রাম নটে শাকে প্রায় ৩৩০ মিলিগ্রাম ক্যালশিয়াম। হাড়কে শক্ত করতে আপনার খাদ্যতালিকায় নটে শাক রাখতে ভুলবেন না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button