lifestyle

বাঙালিয়ানা খাবার আপনার আত্মাকে পরিতৃপ্ত করতে পারে

রসগোল্লা থেকে মাছের ঝোল বাঙালিয়ানা সব খাবারই জিভে জল আনে

বাঙালিরা যেমন মিষ্টি মনের মানুষ, তেমন তাদের খাবারও খুব চমৎকার হয়। যখন খাবারের কথা আসে, তখন বাঙালিয়ানা খাবারই শ্রেষ্ঠ। আমরা বাঙালি, তাই আমরা এই বিষয়ে সবচেয়ে ভালো জানি। কিন্তু আমরা আমাদের খাবার, বিশেষ করে আমাদের বাঙালিয়ানা খাবার থেকে কিছুটা সরে যাই, তখন আমাদের মন খারাপ হয়ে যায়। বাঙালিরা বিশ্বের সমস্তরকম কুলচা, ছোলাবাটোরা এবং বাটার চিকেন খেতে এবং খাওয়াতে দুই-ই পারে, কিন্তু তবুও তাদের হৃদয় সর্বদা সেই পদ্মা নদীর ইলিশের জন্য ব্যাকুল হয়ে থাকে।

কোনো চীনা বা ইটালিয়ান খাবার কখনোই নলেন গুড়ের রসগোল্লার সাথে মিলবে না, যা আপনি শুধুমাত্র শীতকালেই পাবেন। বাঙালিয়ানা খাবারগুলি মুখরোচক এবং আমরা নিশ্চিত যে, একবার আপনি এটি পেয়ে গেলে এর সাথে আপনার প্রেমের সম্পর্ক দীর্ঘস্থায়ী প্রমাণ হতে পারে।

বাঙালিরা ধার্মিক, কিন্তু তারা ঐতিহ্যের প্রতি বেশি যত্নশীল, বিশেষ করে যেগুলিতে কিছু খাবার জড়িত। যদিও পুরানো প্রজন্ম সম্ভবত আচার সম্পর্কে বেশি যন্ত্রশীল ছিল, সেই সময় যেকোনো পুজো-পার্বনে খিচুড়ি ভোগ তার সাথে পাঁচ রকমের ভাজা এবং সবজির তরকারি পরিবেশনের রীতি ছিল।

অনেক উত্তর ভারতীয় মানুষ কড়ি চাওয়ালে শান্তি খুঁজে পায়, কিন্তু এই বাঙালিরা গরম ভাতের সাথে মাছের বা মাংসের ঝোল খেতে ভালোবাসে। মাছ ঝাঁঝালো এবং মুরগি দেশী হলে আর তো কোনো কথাই নেই। আবার মাঝে মাঝে, আলুসেদ্ধ ভাতও বাঙালিদের ভাঙা আত্মাকে প্রশমিত করে। সেই আলুসেদ্ধ কাঁচালঙ্কা, কাঁচা পেঁয়াজ, এবং সরিষার তেল দিয়ে মাখা হয়, যা আপনাকে স্বর্গ সুখ এনে দেবে। আপনি যদি এই খাবারটি খেয়ে দেখতে চান তাহলে একবার বাড়িতে চেষ্টা করুন বানানোর, বিশ্বাস করুন একটুও বিরক্তিকর মনে হবে না।

খাবারের সঙ্গে বাঙালির ভালোবাসা জন্মের আগে থেকেই শুরু হয়। এর সাথে জড়িয়ে আছে শত শত বছরের ইতিহাস। এর মধ্যেও এপার বনাম ওপার বাংলার যুদ্ধ লেগেই থাকে, দেশভাগের এই ঘটনা সম্ভবত কখনোই শেষ হবে না। কিন্তু যখন গোটা বিশ্ব খুঁজে বের করার চেষ্টা করে কারা ঘটি আর কারা বাঙাল, তখন বাঙালিরা এপার-ওপার দুই বাংলার খাবার খেতে ব্যস্ত থাকে। তারা যেমন পছন্দ করে সর্ষে ইলিশ তেমন অন্যদিকে চিংড়ি মাছের মালাইকারি বা রুইমাছের কালিয়ার উপরও ঝাঁপিয়ে পড়ে একইভাবে।

যদি আপনার তালিকায় কোনো বাঙালি বন্ধু থাকে তবে আপনি এই বিশ্বের সবচেয়ে ভাগ্যবান একজন ব্যক্তি। আপনাদের কথা মানুন আর বাঙালিয়ানা খাবার তৃপ্তি করে খান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button