আপনার বাজেটের মধ্যে হোলি পার্টির জন্য আদর্শ পোশাক কিনতে চান?
শপিং করতে চলে আসুন কলকাতার এই ৪টি মার্কেট অঞ্চলে
হাইলাইটস:
•আগামী মঙ্গল এবং বুধবার রঙের উৎসবের উৎযাপন হতে চলেছে
•কী রকম পোশাক পরা উচিত রঙের উৎসবের দিন
•হোলি পার্টির জন্য সস্তা দামের পোশাক কোথায় পাবেন?
দোলযাত্রা বা হোলি উৎসব আর এক সপ্তাহও বাকি নেই। আগামী মঙ্গলবার দোল পূর্ণিমা এবং বুধবার হোলি উৎসব। সুতরাং রঙ খেলায় মেতে ওঠার দিন শীঘ্রই আসতে চলেছে। ফলে আট থেকে আশি সকলের মনের উৎসাহ দেখা দিতে শুরু করেছে। আর যদি থাকে হোলি পার্টি তাহলে তো মজার শেষ নেই। বাজেট কম থাকায় হোলি পার্টিতে কোন লুকে ধরা দেবেন এই ভেবে কী আপনি চিন্তিত? তাহলে বলি চিন্তার কোনও কারণই নেই। কলকাতা শহরে এমন অনেক মার্কেট আছে যেখানে কম বাজেটেও শপিং করা সম্ভব। আবার অন্যদিকে রঙ খেলার দিনে খুব দামি পোশাক কেউই পরতে চান না। বরং, সস্তায় সুন্দর দেখতে কিছু পোশাক কিনতে চান সবাই। কারণ ওই পোশাকটি আর অন্য সময় পরার সুযোগ হবে না।
দেশের যে প্রান্তেই যান না কেন, কলকাতার মতো সস্তা আর বৈচিত্র্যময় কেনাকাটার জায়গা আর কোথাও পাবেন না। যারা দেশ বিদেশ ঘুরতে ভালোবাসেন এবং নতুন জায়গায় গিয়ে চুটিয়ে কেনাকাটাও করেন এরকম মন্তব্য তারা প্রায়ই করে থাকেন। শাড়ি, জামা, হস্তশিল্পের জিনিস, পোড়ামাটির জিনিস, ছবি, গয়না, পুতুল, জুতো, আসবাবপত্র, ঘড়ি, বাসন, বই, ফুল এমনকি খাবার যাই কিনুন না কেন, দাম মধ্যবিত্তের পকেটের নাগালেই থাকে। তাছাড়া দরদাম করার সুযোগ তো ১০০ শতাংশ রয়েছে।
মূলত যে পোশাকগুলি হোলি পার্টির জন্য বেছে নেবেন:
দোলের দিন অথবা হোলি পার্টিতে পরার জন্য এমন পোশাক বেছে নিতে হবে, যেটি পরে আপনি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করবেন। সেই পোশাকের ফ্যাব্রিক যেন কোনওভাবেই আপনাকে বিরক্ত না করে। আবার অন্যদিকে এমন ফ্যাব্রিকই পরা উচিত যা তাড়াতাড়ি শুকিয়ে যেতে পারে। কারণ রঙ খেলার সময় বারবার রঙের জলে ভিজে যেতে পারে আপনার পোশাক। সেই জল গায়ে বসে ঠান্ডা লেগে যেতে পারে। তাই সুতি বা জর্জেটের ফ্যাব্রিক বেছে নিন। কারণ এই পোশাকগুলি জলে ভিজে গেলেও তাড়াতাড়ি শুকিয়ে যায়।
এবার দেখে নিন কোন কোন মার্কেটগুলি শপিং করার জন্য আদর্শ ঠিকানা:
নিউ মার্কেট, ধর্মতলা:
কলকাতার অন্যতম পুরোনো বাজার নিউ মার্কেটের বর্ণনা আশা করি আর কাউকে দিতে হবে না। ১৮৭৪ সালে এই বাজারটি প্রতিষ্ঠিত হয়। এটিই কলকাতার প্রথম মিউনিসিপ্যাল মার্কেট। ১৯০৩ সালে স্যার স্টুয়ার্ট হগের নামানুসারে এই বাজারের নাম রাখা হয় হগ মার্কেট। লোকে বলত, হগ সাহেবের বাজার। শপিং-মল তো হালে হয়েছে। ঔপনিবেশিক যুগের প্রাচীনতম মার্কেট নিউ মার্কেট এখন ক্রেতাদের স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়েছে। এই বাজারের ২০০০ হাজারেরও বেশি দোকান রয়েছে। এখনে জুতো সেলাই থেকে চণ্ডীপাঠের যাবতীয় জিনিস পেয়ে যাবেন ন্যায্য দামে। এখানে আপনি হোলি পার্টির জন্য কম বাজেটের মধ্যে টি-শার্ট, সাদা কুর্তা সেট সবকিছুই পেয়ে যাবেন।
বড়বাজার মার্কেট:
ভারতের প্রাচীনতম পাইকারি বাজারগুলির মধ্যে একটি হল বড়বাজার মার্কেট। যেটি এম জি রোড মেট্রোর কাছে অবস্থিত। শহরের সবচেয়ে পুরোনো বাজার এটি। পাইকারি দরে জিনিস কিনতে গেলে বড়বাজার সেরা। এই পাইকারি বাজারটি বৃহত্তম বাজারগুলির মধ্যে একটি এবং উৎসবের মরসুমে প্রধান ভিড়ের আবাসস্থল। শহরের এই কোলাহলপূর্ণ এলাকায় যা কিছু প্রশংসনীয় তা পাওয়া যাবে। শাড়ি, জামা, ইলেক্ট্রনিক জিনিসপত্র, প্রসাধনী, ঘরের জিনিসপত্র, গয়না সবই এখানে পাবেন পাইকারি দরে। কলকাতা তো বটেই বাংলা এমনকি সংলগ্ন রাজ্যের ব্যবসায়ীরাও এখান থেকে পাইকারি দরে জিনি কিনে নিয়ে যান। বহু ছোটো-বড়, নামী-অনামী সংস্থা নিজেদের কাঁচামাল এই বাজারটি থেকেই কেনে। বড়বাজার মার্কেট থেকেও আপনি আপনার বাজেটের মধ্যে হোলি পার্টির জন্য আদৰ্শ পোশাক কিনতে পারেন।
গড়িয়াহাট মার্কেট:
কলকাতায় কেনাকাটার জন্য একটি প্রধান আকর্ষণ হল গড়িয়াহাট মার্কেট। কলকাতায় যত বড় বাজারই থাকুক না কেন দক্ষিণ কলকাতার আধুনিক বাঙালির কাছে গড়িয়াহাট সেরা। এখানে বড় দোকান ছাড়াও অনেক অস্থায়ী তাঁবু রয়েছে, কম দামে জিনিসপত্র বিক্রি হয়। এখানে একগুচ্ছ রেস্তোরাঁ এবং খাবারের স্টল রয়েছে। দরদাম করতে যারা ভালোবাসেন তারা এই বাজারে কেনাকাটা করতেও ভালোবাসেন। শাড়ি, গয়না, পোশাক, জুতো, ব্যাগ, বাসন, ঘর সাজানোর জিনিস, প্রসাধনী, খেলনা যা চান সব পাবেন। পকেটে খুব বেশি টাকা না থাকলেও চলবে। সবচেয়ে বড় কথা এই বাজারে হাল ফ্যাশনের জিনিস খুবই সহজলভ্য। গোলপার্ক থেকে বালিগঞ্জ, কসবা থেকে রাসবিহারী রোড জুড়ে থাকা এই বাজার যেন খোলা আকাশের নীচে অবস্থিত একটি শপিং মল। গড়িয়াহাট মার্কেট দিয়েও আপনি হোলি পার্টিতে পরার জন্য কুর্তা সেট, টি-শার্ট ইত্যাদি কিনতে পারেন কম বাজেটে।
হাতিবাগান মার্কেট:
হাতিবাগান মূলত উত্তর কলকাতার প্রাণকেন্দ্র। একসময় বিভিন্ন পাখি এবং প্রাণীর জন্য বিখ্যাত ছিল যা বিক্রি হত, আগুনে বেশিরভাগ পুড়ে যাওয়ার আগে। উত্তর কলকাতায় কেনাকাটার জন্য এই জায়গাটি এখনও স্টার থিয়েটারের জন্য বিখ্যাত, একটি সিনেমা কমপ্লেক্স যা সত্যিই সাশ্রয়ী মূল্যে সিনেমা দেখায়। এটি জামাকাপড় থেকে শুরু করে অক্সিডাইজড গহনার সেরা ঠিকানা। হাতিবাগান মার্কেটে ঘুরে ঘুরে সঠিক দরদাম করে শপিং করলে হোলি পার্টির জন্য আদর্শ পোশাক জলের দামে পেয়ে যাবেন।
এইরকম মূল্যবান প্রতিবেদন পেতে ওয়ান ওয়ার্ল্ড নিউজ বাংলার ওয়েবসাইটে চোখ রাখতে ভুলবেন না।