আপনার বাচ্চার স্মৃতিশক্তি বাড়ানোর জন্য তাদের খাদ্যতালিকায় এই খাবারগুলি অন্তর্ভুক্ত করুন
বাচ্চার স্মৃতিশক্তি বাড়ানো ভীষণই দরকার
হাইলাইটস:
•শিশুদের স্মৃতিশক্তি বাড়ানো উচিত
•খেলাধুলার কারণেও বাচ্চাদের স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি পায়
•স্মৃতিশক্তি বাড়ার জন্য যে খাবারগুলি খাওয়া অত্যন্ত জরুরি
স্মৃতিশক্তির মূলে জিনের বড়ো ভূমিকা থাকলেও মানুষের হাতেও কিছু আছে। কিছু খেলা আছে, কিছু খাবার আছে, জীবনযাপনের কিছু নিয়ম আছে যা একদম ছোট থেকে মেনে চললে শুধু স্মৃতিশক্তি নয়, বুদ্ধিও বাড়ে আপনার বাচ্চার। এর ফলে তাদের পরীক্ষার ফলাফল ভালো হয়, আত্মবিশ্বাস এবং স্মার্টনেসও বাড়ে। খেলাধুলার কারণে বুদ্ধি ও স্মৃতি বাড়ানোর চেয়ে ভালো বিষয় আর কিছুই নেই। ঠিক তেমনই তাদের খাদ্যতালিকায় শাকসবজি ও খাদ্য বস্তু অন্তর্ভুক্ত করা উচিত, যা তাদের সামগ্রিক বিকাশেও সাহায্য করে। ফলে আপনার বাচ্চার স্মৃতিশক্তি বাড়ানোর জন্য উপকারী খাবারগুলি জেনে নিন:
বুকের দুধ:
৬ মাসের কম বয়সী শিশুদের জন্য একমাত্র সুষম খাদ্য হচ্ছে মায়ের দুধ। ২ বছর পর্যন্ত অন্য খাবারের পাশাপাশি বুকের দুধ খাওয়া চলতে থাকে। এতে রয়েছে সব ধরণের ভিটামিন, অ্যান্টিবডি, মিনারেল, ফ্যাট, প্রোটিন সবই শিশুর সুস্থ বিকাশের জন্য জরুরি। শিশুর রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে কার্যকরী, শিশুর সুস্থ বিকাশে সহায়ক।
ডিম:
শিশুরা ডিম খেতে খুবই পছন্দ করে। আমরা বড়রাও অবশ্য কম পছন্দ করি না। ডিমের পুষ্টিগুনেরও শেষ নেই। প্রোটিনে সমৃদ্ধ ডিমকে আবার নিউট্রিশনের পাওয়ার হাউসও বলা হয়। ডিম সহজলভ্য প্রোটিনের উৎস হিসেবে পরিচিত হলেও, এতে রয়েছে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড ও লুটেইন। আর রয়েছে কোলিন যা ফুসফুসের জন্য ভালো, স্মৃতিশক্তি বাড়াতেও সহায়ক। একটি সমীক্ষা অনুযায়ী প্রতিদিন দুটি করে ডিম খেলে বাচ্চাদের দৈর্ঘ্য বৃদ্ধি পায়। ডিমের হলুদ অংশে স্বাস্থ্যকর ফ্যাট বর্তমান, যা বাচ্চাদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশ ঘটিয়ে থাকে। ডিমের কুসুম আর সাদা অংশ, দুটোই শিশুর জন্য উপকারী।
সবুজ শাকসবজি:
মেথি শাক, পালং শাক, লেটুস শাক, বাধাকপির মতো পাতাযুক্ত সবজিগুলি ভিটামিন C, ভিটামিন K, ক্যালশিয়াম, আয়রন এবং ম্যাগনেশিয়ামে ভরপুর। এটি শরীরে পুষ্টিকর উপাদানের জোগানের পাশাপাশি বাচ্চাদের উচ্চতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে থাকে।
কলা:
সব শিশুরাই কলা খেতে কম-বেশি পছন্দ করে। কলা হচ্ছে সবচেয়ে নিরাপদ উৎস আপনার শিশুর মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বাড়ানোর জন্য। কলা পটাশিয়ামে ভরপুর। পটাশিয়াম ছাড়াও এতে রয়েছে আয়রন, ভিটামিন B6, ভিটামিন C এবং ক্যালসিয়াম। বাচ্চাদের কলা খাওয়াতে খুব বেশি ঝামেলা হয় না। ভালো করে হাত ধুয়ে আঙুল দিয়ে চটকেই শিশুকে কলা খাইয়ে দেওয়া যায়। আবার আপনার শিশুর জন্য কলা দিয়ে একটি মিল্ক শেক বানাতে পারেন- একটা কলা, আগের রাতে ভেজানো কিশমিশ, কাজুবাদাম, আলমন্ড বাদাম আর দুধ একসঙ্গে ব্লেন্ড করে নিন। সঙ্গে স্বাদ বাড়াতে চিনি বা মধু দিন। শিশুরা এটি খেতে খুবই পছন্দ করে।
স্যালমন মাছ:
মাছ আর মাছের তেলে আছে প্রোটিন আর ওমেগা ৩ ফ্যাটি এসিড, যা শিশুকে মানসিকভাবে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। স্যালমন মাছে প্রচুর পরিমাণে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড বর্তমান। হৃদযন্ত্রকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে ওমেগা-৩। তার পাশাপাশি শারীরিক বিকাশেও এটি উপকারি। বিশেষজ্ঞদের মতে ওমেগা-৩ হাড় মজবুত করার জন্য জরুরি।
ওটস:
ওটসে আছে জিঙ্ক, ভিটামিন B-কমপ্লেক্স আর ভিটামিন E। এবং তার সাথেই থাকে পটাশিয়াম। এটি বাচ্চাদের মস্তিষ্কের স্বাস্থ্যের জন্য লাভজনক। ওটস স্মৃতিশক্তি বাড়াতেও কার্যকর। এটি আপনার শিশুর শরীর আর মস্তিষ্ক দুটোতেই শক্তি সরবরাহ করে। এতে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে, যা বাচ্চাদের পাচন তন্ত্রকে সঠিক রাখে। পাশাপাশি এতে উপস্থিত প্রোটিন বাচ্চাদের উচ্চতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। ওটস দিয়ে একটি শেক বানাতে পারেন – ওটস ঘন দুধের সঙ্গে ক্ষীরের মতো রান্না করে বাচ্চাকে খাওয়ান। শিশুরা এই শেক খুবই পছন্দ করে।
ডাল:
ডাল হল প্রোটিন ও ফাইবারে সমৃদ্ধ। এতে আবার ফ্যাট কম থাকে। বাড়ন্ত বাচ্চাদের শারীরিক গঠনের জন্য এগুলি অত্যন্ত জরুরি। তাই প্রতিদিন বাচ্চাদের বিভিন্ন ধরনের ডাল খাওয়ানো উচিত। যেমন- মসুর, মুগ, কলাই, খেসারি, সিমের বীজ এগুলিতে আছে প্রচুর পরিমানে ফাইবার আর প্রোটিন। ডাল রান্না করতেও সোজা, পুষ্টিগুনেও সেরা। পাঁচমিশালি ডাল ও সবজি দিয়ে খিচুড়ি রান্না করে খাওয়ান শিশুকে। সবজি হিসেবে দিন আলু, গাজর, বেগুন, পালং শাক বা অন্য যেকোনও ১/২ পদের শাক।
এইরকম স্বাস্থ্য এবং জীবনধারা সম্পর্কিত প্রতিবেদন পেতে ওয়ান ওয়ার্ল্ড নিউজ বাংলার ওয়েবসাইটে চোখ রাখুন।