আপনার কী মোশান সিকনেসের অসুবিধা আছে? তাহলে রোগ থেকে নিরাময়ের উপায়গুলি জেনে নিন
অনেকের বাসে এবং গাড়িতে উঠলেই বমি পায়
হাইলাইটস:
•মোশন সিকনেস কী?
•মোশন সিকনেস কেন হয়?
•মোশন সিকনেস থেকে বাঁচার উপায়গুলি জেনে নিন
অনেক মানুষ আছেন যাদের বাস বা গাড়িতে উঠলেই বমি পায়। এইরকম সমস্যাকে বলা হয় মোশন সিকনেস। এটি হল অভ্যন্তরীণ কানের একটি খুব সাধারণ ব্যাঘাত। এটি একটি যানবাহন থেকে বারবার গতি বা অন্য কোনও নড়াচড়ার কারণে ঘটে যা ভিতরের কানকে বিরক্ত করে। বিশেষ করে দীর্ঘ সফরের ক্ষেত্রে এই সমস্যা আরও প্রকট হয়ে ওঠে। এই অসুখ সকলেরই হতে পারে। সেভাবে নির্দিষ্ট করে কোনও বয়স, লিঙ্গ বা গোষ্ঠীকে চিহ্নিত করা যাবে না। তবে এই রোগ সাধারণত ছোট থেকেই শুরু হয়ে যায়। এই রোগে আক্রান্ত হলে শরীরে দেখা দিতে পারে মারাত্মক জটিলতা। আপনারও যদি এই সমস্যা থাকে একদমই লজ্জা পাবেন না। আমাদের মধ্যে এমন অনেকেই আছেন যারা এই সমস্যায় ভোগেন। কিন্তু কীভাবে যে মুক্তি মিলবে, তা বুঝতে পারেন না কেউই।
মোশান সিকনেস এক গুরুতর সমস্যা। মোশান সিকনেস যাদের রয়েছে একমাত্র তারাই জানেন এটি ঠিক কতটা কষ্টের। তারা এই কষ্টটি বুঝতে পারেন না কেউই। তাই এই অসুখের সমাধান খুঁজে বের করা সবার আগে জরুরি। চিকিৎসকদের মতে, সাধারণত গাড়ি ও বাসে এই সমস্যা বেশি হয়। ট্রেনে তেমন একটা সমস্যা হয় না। তবে কিছু ক্ষেত্রে ট্রেনেও বমি পেতে পারে।
মোশান সিকনেস কেন হয়?
গাড়িতে ওঠার পরই কানে ভেস্টিবুলার অ্যপ্রেটাসের অবস্থানে বদল আসে। শরীরের গতি-সংবেদনকারী অংশগুলি মস্তিষ্কে তথ্য প্রেরণের কারণে এমনটা হয়। মস্তিষ্ক এতে বিভ্রান্ত হয়ে যায়। ফলে স্থির বা গতিশীল পরিস্থিতি ব্রেন প্রসেস করতে পারে না। তার প্রতিক্রিয়া হিসাবে বমি হয় এবং মাথা ঘোরে। মূলত রাস্তা গোল হয়ে ঘুরে গেলেই এই সমস্যার আশঙ্কা থাকে বেশি। সেভাবে দেখতে গেলে পাহাড়ি রাস্তাতেই মোশান সিকনেস বেশি হয়। এছাড়াও অনেকের গাড়ির গতির অভিমুখের বিপরীতে মুখ করে বসার কারণে সমস্যা হতে পারে।
তবে ভ্রমণের সময় আপনার আর ভয় পাওয়ার দরকার নেই কারণ আমরা কিছু জীবন রক্ষাকারী খাবার নিয়ে এসেছি যা আপনি অসুস্থতা এবং বমি এড়াতে খেতে পারেন। তাই দুশ্চিন্তা না করে দেখে নিন সেগুলি –
এলাচ:
মোশন সিকনেসের জন্য এলাচ একটি কার্যকর প্রতিকার। এক বা দুটি এলাচের বীজ চিবিয়ে নিন কারণ এটি স্বাদ পরিবর্তন করে যা বমি সংবেদনকে প্রশমিত করতে সাহায্য করবে। এলাচ পিত্তকে উদ্দীপিত করে। ফলে একটি এলাচ মুখে নিয়ে দীর্ঘ পথ অতিক্রম করুন।
আদা:
আদা স্বাস্থ্য গুনে ভরপুর যা বমি বমি ভাব কমাতে সাহায্য করতে পারে। এটি পেটের জ্বালা কমাতে পারে এবং তাৎক্ষণিক স্বস্তিও আনতে পারে। আদা চা, আদা মিছরি খাওয়ার চেষ্টা করুন অথবা আপনি এক চা চামচ আদা গুঁড়ো করে গরম জলে মিশিয়ে পান করতে পারেন যা আপনাকে সেই অস্বস্তিকর অনুভূতি কার্যকরভাবে কাটিয়ে উঠতে সাহায্য করবে।
কলা:
আপনি ডিহাইড্রেটেড এবং বমি বমি ভাব অনুভব করলে একটি কলা খালি পেতে খেয়ে নিন। কলা পটাসিয়াম পুনরুদ্ধার করতে সাহায্য করতে পারে, যা প্রায়শই ডায়রিয়া এবং বমির ফলে ক্ষয় হয়। এতে স্টার্চও ভালো পরিমাণে থাকে।
বাদাম:
বাদাম প্রোটিন-সমৃদ্ধ এবং আপনার ক্ষয়প্রাপ্ত শক্তি পূরণ করে যা বমি বমি ভাব দূরও করবে। আপনার কাছে সবসময়ই এটি অল্প পরিমাণে থাকা উচিত। আপনি যখন বমি বমি ভাবের সাথে লড়াই করছেন তখন স্টার্চি খাবারে সমৃদ্ধ একটি কম চর্বিযুক্ত, কম প্রোটিন খাবারের পরিকল্পনা সবচেয়ে ভালো সমাধান।
জল:
জল আপনাকে হাইড্রেটেড রাখে। সাধারণ জলের ছোট চুমুক খাওয়া একই কাজ করবে এবং প্রায়শই বমি বমি ভাব সহ মাথাব্যথা এড়াবে। ধীরে ধীরে অল্প পরিমাণে পান করা শুরু করুন এবং খুব বেশি পান করবেন না কারণ এটি অবস্থাকে আরও খারাপ করে তুলবে।
আবার অনেকের ক্ষেত্রে চুইং গাম চিবালে বমি ভাব কম আসে। ভ্রমণের সময় আপনি গাড়ির সামনের সিটে বসতে পারেন এবং সঙ্গে রাখতে পারেন জোয়ান, গন্ধলেবুর পাতা ইত্যাদি। এগুলি সাময়িক ভাবে আপনাকে স্বস্তি দেবে। অথবা যাত্রার আগে এক গ্লাস জলে ৭৫ মিলিগ্রামের ট্যাবলেট হিসাবে লিকোরিস রুট বা মুলেথি নিন। আবার যদি দীর্ঘ সময়ের জন্য ভ্রমণের প্রয়োজন হয়, তাহলে মোশন সিকনেস নিরাময়ের জন্য ১০০ মিলিগ্রাম লিকারিস রুট খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। তবে যে কোনও ওষুধ নেওয়ার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে নিন।
এইরকম স্বাস্থ্য এবং জীবনধারা সম্পর্কিত প্রতিবেদন পেতে ওয়ান ওয়ার্ল্ড নিউজ বাংলার সাথে যুক্ত থাকুন।