আক্কেল দাঁতের তীব্র যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পেতে এই ঘরোয়া উপায়গুলির উপর ভরসা রাখুন
আক্কেল দাঁতের যন্ত্রনা খুবই বেদনাদায়ক
আট থেকে আশি কমবেশি আমরা সবাই আক্কেল দাঁতের সমস্যায় ভুগে থাকি। আক্কেল দাঁত মুখের অন্য দাঁতগুলির ক্ষতি করে। দাঁতে ব্যথা যেমন যন্ত্রণাদায়ক, দাঁতের চিকিৎসাও ঠিক তেমনই কষ্টকর। মুখের শেষ সীমানায় দুই পাশের উপর ও নিচের চারটি দাঁতকে বলা হয় আক্কেল দাঁত। যাদের মুখে ৩২টি দাঁতের জায়গা থাকে না তাঁদের আক্কেল দাঁত ওঠার সময় প্রচণ্ড ব্যথা হয়। কারণ দাঁত বের হওয়ার জায়গা পায় না। ফলে প্রচণ্ড ব্যথা হয় ও ফুলে যায় মাড়ির স্থানটি। আক্কেল দাঁত তোলা বা দাঁতে অস্ত্রপচারের মতো কষ্টদায়ক চিকিৎসার মধ্যে দিয়ে যাওয়ার থেকে বাড়িতেই কিছু ঘরোয়া টোটকা মেনে আক্কেল দাঁতের ব্যথা কমান। ধরে রাখুন দাঁতের স্বাস্থ্য।
আক্কেল দাঁত উঠার লক্ষণগুলি হল:
•আক্কেল দাঁতে সবসময় ব্যথা হয় না, তবে যখন আক্কেল দাঁতে সংক্রমণ হয় তখন এটি অন্য দাঁতকে ক্ষতিগ্রস্থ করে। এ জাতীয় পরিস্থিতিতে দাঁত সম্পর্কিত সমস্যা এবং লক্ষণগুলি দেখা যায়।
•একটি আক্কেল দাঁত দাঁতের একদম শেষে হয়, সুতরাং মাড়ির শেষের অংশে ব্যথা অনুভব হয়। এগুলি ছাড়াও আক্কেল দাঁতে ভুলভাল ভাবে গজালে চরম ব্যথা হয়।
•আক্কেল দাঁতের ফলে মাড়ি ব্যাথায় ফুলে যায়। অনেকের খাবার খাওয়ার সময় আক্কেল দাঁতে ব্যাথা হয় এবং মুখ খুলতে অসুবিধা হয়।
•অনেক ক্ষেত্রে আক্কেল দাঁতে ব্যাথার কারনে চোয়াল ফুলে যায়। সমস্যাটি বাড়ার সাথে সাথে অন্যান্য দাঁত এবং মাড়ির ক্ষতি হয়। এমন পরিস্থিতিতে ব্যক্তির চোয়ালে ফোলাভাব, মুখে ফোলাভাব, সাইনাস ইত্যাদি সমস্যা দেখা দেয়।
•আক্কেল দাঁত এমন একটি জায়গায় হয় যা পরিষ্কার করা খুব কঠিন। আপনি জানেন যে আক্কেল দাঁত মাড়ির ভিতরে থাকে। ব্যাকটিরিয়া আক্কেল দাঁতের নিকটে থাকতে শুরু করে এবং মুখের স্বাদ নষ্ট করে দেয়।
•আক্কেল দাঁতের ফলে মাড়ি থেকে রক্তপাত হতে পারে এবং শ্বাসে দুর্গন্ধ থাকতে পারে।
আক্কেল দাঁতের তীব্র যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পেতে ঘরোয়া উপায়গুলি জেনে নিন –
নুন জল দিয়ে কুলকুচি:
নুন জল দাঁতের মধ্যেকার ব্যাকটেরিয়া দূর করতে সর্বাধিক ভূমিকা নেয়। ফলে এই জলে কুলকুচি করা ভীষণই কার্যকরী। অনেক সময় দেখা যায়, ব্যাকটেরিয়া বাসা বাঁধে আক্কেল দাঁতের মাঝে। ফলে সংক্রমণ ছড়ায় আক্কেল দাঁতে। এই পরিস্থিতিতে নুন জল সমস্যার সমাধান করতে পারে।
ভিনিগার:
রান্নাঘরে ভিনিগার থাকলে এক চা চামচ ভিনেগারের সঙ্গে সমপরিমাণ জল মিশিয়ে নিন। এর মধ্যে একটি তুলো ভিজিয়ে আক্কেল মাড়ির স্থানে দাঁত দিয়ে চেপে ধরে রাখুন। দেখবেন দ্রুত ব্যথা কমে গেছে। ব্যথা না কমা পর্যন্ত এই পদ্ধতি অনুসরণ করুন।
আইস প্যাক:
আক্কেল দাঁতের তীব্র যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পেতে আপনি আইস প্যাক ব্যবহার করতে পারেন। দাঁতের গোড়ায় বরফ দিলে সেই জায়গাটা অসাড় হতে পারে। এক্ষেত্রে একটি ব্যাগে বরফ নিন। তারপর সেই ব্যাগটি গালের উপর থেকে মাড়িতে লাগান। এভাবে ১৫ মিনিট রাখতে পারলেই আরাম পাবেন। এতে কিছুটা সময়ের জন্যে হলেও ব্যথা থেকে উপশম পাওয়া যায়।
পেঁয়াজ:
পেঁয়াজের অ্যান্টিসেপটিক গুণ যে কোনও ক্ষত, ব্যথা সারাতে সাহায্য করে। পেঁয়াজে রয়েছে অনেকটা পরিমাণে অ্যান্টিইনফ্লেমেটরি ও অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল গুণ। এই কারণে ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে সহজেই লড়াই জেতা যায়। দাঁতে ব্যথা হলে এক টুকরো কাঁচা পেঁয়াজ চিবিয়ে খেয়ে নিন। পেঁয়াজ আক্কেল দাঁতের ব্যথা কমাতেও কার্যকরী ভূমিকা নেয়। যদি বেশি ঝাঁঝ লাগে তবে দাঁতের উপর পেঁয়াজ রাখলেও কিছুটা আরাম পাবেন।
লবঙ্গ:
আক্কেল দাঁতের উপর একটা লবঙ্গ রেখে দিন। চিবানোর দরকার নেই। যতক্ষণ না ব্যথা কমছে লবঙ্গটা ফেলবেন না। লবঙ্গ তেলও ব্যবহার করতে পারেন। শুধু আক্কেল দাঁত নয়, এমনি দাঁতের ব্যথাতেও কাজ দেয় লবঙ্গ। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে, লবঙ্গ দারুণ একটি উপকরণ ব্যথা নিবারণের ক্ষেত্রে। এই উপকরণটি ব্যথার পাশাপাশি ফোলা কমাতে পারে।