Chhaava Movie Review: মারাঠা, হিন্দুত্বের বিজয়ের গান ‘ছাবা’য়, কেমন ছিল ভিকি কৌশলের নতুন ছবি? রিভিউ পড়ুন
সম্ভাজি মহারাজের চরিত্রে অভিনয় করেছেন ভিকি কৌশল। আর ভিকি কৌশলকে কেন্দ্র করে পুরো ছবি। তাঁর দুর্দান্ত অভিনয়ও একমাত্র দেখার বস্তু। বাকিটা ক্যামেরা।

Chhaava Movie Review: নিজের সেরাটা দিয়ে পারফর্ম করেছেন ভিকি কৌশল, ছাবার রিভিউ কেমন? দেখে নিন
হাইলাইটস:
- মারাঠা রাজা ছত্রপতি সম্ভাজি মহারাজের জীবনকাহিনীর উপর ভিত্তি করে নির্মিত ছাবা
- ছাবা ছবিতে মারাঠা রাজা ছত্রপতি সম্ভাজির ভূমিকায় অভিনয় করেছেন ভিকি কৌশল
- চলতি বছরে গত শুক্রবার অর্থাৎ ১৪ই ফেব্রুয়ারি মুক্তি পায় ছাবা ছবিটি
Chhaava Movie Review: পরিচালক লক্ষ্মণ উতরেকারের পরিচালনায়, ‘ছাবা’ ছবি অভিনেতা ভিকি কৌশল অভিনীত। মারাঠি ভাষায় প্রকাশিত উপন্যাস থেকে মোঘলরাজা ঔরঙ্গজেবের বিরুদ্ধে মারাঠি রাজা শিবাজি মহারাজের পুত্র সম্ভাজি মহারাজের বীরত্ব, তাঁর যুদ্ধের কাহিনি এবং আত্মত্যাগ নিয়ে পরিচালক রায়গড়, নাসিক, পুণের প্রেক্ষাপটে অ্যাকশন এবং নাটকীয়তায় একটি চিত্রনাট্য সাজিয়েছেন।
সম্ভাজি মহারাজের চরিত্রে অভিনয় করেছেন ভিকি কৌশল। আর ভিকি কৌশলকে কেন্দ্র করে পুরো ছবি। তাঁর দুর্দান্ত অভিনয়ও একমাত্র দেখার বস্তু। বাকিটা ক্যামেরা। বিশেষ করে চিত্রনাট্যে মহারাষ্ট্র এবং সমগ্র মারাঠি জাতির প্ৰিয় প্রাণপুরুষ শিবাজি মহারাজ, উপস্থিত না থেকেও রয়েছেন যেভাবে। সংলাপে অনর্গলভাবে হয়েছে ওঁর নাম উচ্চারিত।
We’re now on WhatsApp- Click to join
সপ্তদশ শতকে বাবা শিবাজির পদাঙ্ক অনুসরণ করে মোঘলদের দাসত্ব স্বীকার না করে সম্ভাজি, মারাঠা স্বরাজের পক্ষে করেছিলেন লড়াই। দিল্লিতে তখন ঔরঙ্গজেবের রাজত্ব। সম্ভাজি সিংহাসনে বসেই বুরহানপুরে মোঘলদের সেনা ছাউনিতে আক্রমণ করে ধ্বংস করলে তৎকালীন মোঘলসম্রাট পালটা আক্রমণ করে প্রতিশোধ নিতে শুরু করেন। ওদের প্রতিটি আক্রমণ সম্ভাজি রুখে দেন তাঁর অনুগত সৈনিক ও সেনাপতি হাম্বিররাওয়ের লড়াই কৌশলে। যাকে বলে গেরিলা যুদ্ধ, সেইরকম প্রায়। স্থলে-জলে, অন্তরীক্ষে সম্ভাজির সব সেনারা আরও কতই না ভেলকি দেখিয়েছেন। তাঁরা বেরিয়ে এসেছেন মাটি ফুঁড়ে। আখের ক্ষেতে আখ গাছ হয়েছে ছদ্মবেশে। আবার আকাশ থেকে হঠাৎ নেমে এসেছেন রামায়ণ-মহাভারতের সময়ের মতো। এই ছবির দর্শনীয় এই এতটুকুই।
We’re now on Telegram- Click to join
সম্ভাজি এবং ঔরঙ্গজেবের মধ্যে ফাইনাল যুদ্ধ হয় পুণের কাছে ভীম নদীর পাড়ে তুলাপুর নামের একটি জায়গাতে। যেখানে ঔরঙ্গজেব সম্ভাজি এবং তাঁর অন্যতম অমাত্য কবি কালাশকে নিয়ে যান বন্দী করে। বন্দিদশায় জিভ কেটে দেওয়া হয় কবির। আর উপড়ে নেওয়া হয় চোখ সম্ভাজির। মৃত্যুর আগের মুহূর্ত পর্যন্ত মারাঠিরাজ লড়ে যান একা শতাধিক মোঘল সৈন্যের সাথে। সে লড়াই সত্যি অসম্ভব। ভিকি কৌশল কিন্তু পুরো ছবি জুড়ে তাঁর অভিনয়ে প্রশংসা কুড়িয়েছেন দর্শকদের। এবং কৌশল করেই নানাভাবে সরাসরি হিন্দুত্বের জয়গান করে যান। এক সংলাপে সম্ভাজি বলেন “তুমি আমার সাথে যোগ দিয়ে হয়ে যাও মারাঠি, সেজন্য করতে হবে না তোমাকে ধর্ম ত্যাগ। সুখে থাকবে!” সেই পরিপ্রেক্ষিতে দেখতে গেলে, এই ছবিতে প্রচ্ছন্নভাবে মারাঠি মহানতার পাশাপাশি প্রচার হল হিন্দুত্বেরও।
এক দৃশ্যে শত্রুপক্ষের উদ্দেশ্যে মারাঠা রাজের সরাসরি বক্রোক্তি- “বাঘ কখনও কুকুরের ঘেউ ঘেউ শুনে পালিয়ে যায়না।” ভিকি কৌশলকে যে পরিচালকরা পরবর্তীতে আরও চ্যালেঞ্জিং চরিত্রের জন্য বেছে নেবেন তা ‘ছাবা’ ছবি দেখলেই বোঝা যাচ্ছে। ভিকির পরই যাঁর নাম উঠে আসছে তিনি হলেন অক্ষয় খান্না। ঔরঙ্গজেবের চরিত্রে ‘নেগেটিভ রোল’ পেয়েও ছক্কা হাঁকিয়েছেন। আশুতোষ রানার হাম্বিররাও, বিনীত সিংয়ের কবি কালাশও তাল মিলিয়েছেন সমানভাবে। সম্ভাজির স্ত্রীর চরিত্রে ছিলেন অভিনেত্রী রশ্মিকা মন্দানা, তিনি বেশ শান্ত থেকেও ভেতরের যন্ত্রণা দক্ষতার সাথে ফুটিয়ে তুলেছেন। সোয়রাবাইয়ের চরিত্রে ছিলে দিব্যা দত্ত তেমন একটা সুযোগ পাননি যদিও। এ আর রহমানের আবহসঙ্গীত যুদ্ধের দৃশ্যে বেশ ভালোই আর গানও তেমন মন্দ লাগে না, বিশেষ করে ‘জানে তু’ গানটি।
এবার ছবির কারিগরি দিকটায় আসা যাক, যেহেতু এটি পিরিয়ড ড্রামা তাই সেদিকটা বরাবরই থাকে বিশেষ নজরে। আউটডোরের অনেকটাই শুট করা হয়েছে পুণের পার্শ্ববর্তী এক মিলিটারি গ্রামে। তবুও নানা সেট তৈরির কাজে সেই সপ্তদশ শতকের ছোঁয়াটা এনেছেন সুন্দর, দুই বঙ্গতনয় সুব্রত চক্রবর্তী এবং অমিত রায়। এছাড়া পোশাক-পরিচ্ছদের ভার শীতল শর্মার ওপর ছিল। তিনি রিসার্চ করে মারাঠি এবং মুঘলদের সাজকাহন ভালোই তৈরি করেছেন। তাঁর কাজও বেশ প্রশংসার দাবি রাখে।
Read More- ‘ছাবা’ দেখার পর ক্যাটরিনা কাইফ কেন তার স্বামী ভিকি কৌশলকে ‘গিরগিটি’ বলে ডাকলেন?
একেকটা দৃশ্যে সুন্দর আলো-আঁধারি বিশ্বজিৎ মুখোপাধ্যায় তৈরি করেছেন। আর সবচেয়ে বড় কৃতিত্ব যার তিনি হলেন সিনেম্যাটোগ্রাফার সৌরভ গোস্বামী। এঁদের পরিশ্রমের ফল হল ‘ছাবা’। যদি সম্পাদক মণীশ প্রধান প্রথম পর্বটি আরেকটু কাঁট-ছাট করতেন, তবে সিনেমাটা আরও ভালো হত। যদিও সেটা পরিচালক লক্ষ্মণ উতরেকারের অনুমতি ছাড়া সম্ভব নয়।
এইরকম আরও বিনোদন জগতের প্রতিবেদন পেতে ওয়ান ওয়ার্ল্ড নিউজ বাংলার সাথে যুক্ত থাকুন।