এপ্রিল মাসের মধ্যেই ১২ হাজার প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ, বড়ো ঘোষণা করলেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু
সাংবাদিক সম্মেলনে এই কথা ঘোষণা করেছেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী
হাইলাইটস:
•এপ্রিল মাসের মধ্যেই ১২ হাজার প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ করতে চলেছে রাজ্য সরকার
•এমনই ঘোষণা করলেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু
•শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে কিছু নিয়মের কথাও এইদিন জানালেন শিক্ষামন্ত্রী
কলকাতা: সামনেই রাজ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচন। তাই আগেভাগেই প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ করতে চাইছে রাজ্য সরকার। যে শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে এত দুর্নীতি, রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষা মন্ত্রী দুর্নীতির দায়ে জেলবন্দী, একের পর এক তৃণমূল নেতা জড়িত এই দুর্নীতির সাথে, সেখানেই পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু জানিয়েছেন, আগামী এপ্রিল মাসের মধ্যেই ১২ হাজার শিক্ষক নিয়োগ হতে চলেছে রাজ্যে। তাঁর কথায়, ‘এপ্রিলের মধ্যেই আমরা ১২ হাজার প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ করতে পারব। এমনটাই আমরা আশা করছি। প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের ইন্টারভিউ চলছে।’
গত বছর অক্টোবর মাসে রাজ্যের প্রাথমিক স্কুলে প্রায় ১১,৭৬৫টি শূন্যপদে সহকারী শিক্ষক নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল। ইন্টারভিউ শুরু হয়েছিল ডিসেম্বরের শেষে। রাজ্যে একাধিক জেলার আবেদনকারী চাকরিপ্রার্থীদের ইন্টারভিউ নেওয়ার প্রক্রিয়াও শেষ করে ফেলেছে পর্ষদ। সম্প্রতি অষ্টম দফার ইন্টারভিউয়ের সূচি প্রকাশ করেছে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ। এই দফায় আগামী ২০ থেকে ২১শে মার্চ পর্যন্ত কর্মস্থান হিসাবে হাওড়া জেলা নির্বাচনকারী প্রার্থীদের ইন্টারভিউ নেওয়া হবে। পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে ইন্টারভিউ প্রক্রিয়াকে শেষ করার জন্য ইন্টারভিউ প্রক্রিয়ায় গতি এনেছিল পর্ষদ।
রাজ্যজুড়ে শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির তদন্ত করছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলি। তাদের তদন্তে প্রত্যেকদিন নতুন নতুন তথ্য সামনে আসছে। রাজ্যের শাসকদলের মন্ত্রী থেকে নেতা, বেশ কয়েকজন এই নিয়োগ দুর্নীতির কারণেই এই মুহূর্তে জেলের মধ্যে রয়েছেন। লাগাতার শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি তদন্ত নিয়ে আন্দোলন করছেন বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি। টাকার বিনিময়ে চাকরির অভিযোগে বহু অযোগ্য প্রার্থীর চাকরি বাতিল হয়েছে। অন্যদিকে যোগ্যদের নিয়োগ দ্রুত করার দাবিতে মাসের পার মাস আন্দোলন করছেন চাকরি প্রার্থীরা। গ্রুপ সি, গ্রুপ ডি, থেকে নবম-দশম, একাদশ-দ্বাদশ, সব ক্ষেত্রেই চাকরি প্রার্থীদের একটা বড় অংশ আন্দোলনে নেমেছেন এবং তার সাথে সরকারের উপর নিয়োগের জন্য চাপ বাড়িয়ে চলেছেন। তবে তার মাঝেই রাজ্যে ১২ হাজার প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগকে যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে দেখা হচ্ছে। যা চাকরিপ্রার্থীদের একাংশের কাছে যথেষ্ট ইতিবাচক মনোভাব তৈরি করতে পারবে বলেই আশা করছে বিশিষ্ট মহল।
এই শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু আরও জানালেন যে, শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে কিছু নিয়ম পরিবর্তন করা হয়েছে। এবং তার সাথে কিছু বিধি নিষেধ ধার্য করা হয়েছে। ভিডিওর আন্ডারে ইন্টারভিউ প্রক্রিয়া নেওয়া হচ্ছে। তার মধ্যে ইন্টারভিউ-এ কত নম্বর পাচ্ছে প্রার্থীরা তা সরাসরি পাঠিয়ে দেওয়া হবে পর্ষদের কেন্দ্রীয় সার্ভারে। অর্থাৎ এক্ষেত্রে আর কোনওভাবেই সেই নম্বরকে বদলানো সম্ভব নয়। সেই চাকরিপ্রার্থী ইন্টারভিউতে কত নম্বর পেয়ে গেলেন সেটাও সঙ্গে সঙ্গে চূড়ান্ত হয়ে যাবে। তার সাথে ওএমআর শিটও ১০ বছর সংরক্ষণ করা হবে৷ কারণ সাম্প্রতিক সময়ে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার তদন্তে বারবারই ওএমআর শিট টেম্পারিং-এর অভিযোগ উঠেছিল। রাজ্য মন্ত্রিসভায় অনুমোদন পেলেই এবার থেকে এই ওএমআর শিট ১০ বছরের জন্য সংরক্ষণ করা হবে। সুতরাং প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগকে স্বচ্ছভাবে করার জন্য একাধিক পদক্ষেপ করেছে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ।
এইরকম রাজনৈতিক বিষয়ক প্রতিবেদন পেতে ওয়ান ওয়ার্ল্ড নিউজ বাংলার সাথে যুক্ত থাকুন।