Bangla News

Mamata Banerjee: ইংরেজবাজারে যৌথ সভার পর আজ মুর্শিদাবাদে পৃথক পৃথক কর্মসূচি সারবেন মমতা-অভিষেক

Mamata Banerjee: আজ গঙ্গা ভাঙন কবলিত অঞ্চল পরিদর্শনে যাবেন মুখ্যমন্ত্রী

হাইলাইটস:

আজ সামসেরগঞ্জ গঙ্গা ভাঙন কবলিত অঞ্চল পরিদর্শনে যাবেন মুখ্যমন্ত্রী

অন্যদিকে অভিষেকের নেতৃত্বে আজ থেকেই মুর্শিদাবাদ জেলায় শুরু হচ্ছে তৃণমূলে নবজোয়ার কর্মসূচি

নজরে সাগরদিঘির উপনির্বাচন

Mamata Banerjee: গতকাল মালদহের ইংরেজবাজারে ছিল তৃণমূলের হাইভোল্টেজ সভা। কারণ তৃণমূলে নবজোয়ার কর্মসূচির মঞ্চে একই সাথে দেখা গিয়েছিল তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) এবং তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে (Abhishek Banerjee)। মুখ্যমন্ত্রী তিনদিনের জেলা সফরে রয়েছেন। ফলে গতকাল মালদায় অভিষেকের জনসংযোগ যাত্রাতে ‘বিশেষ অতিথি’ হিসেবে যোগ দেন তিনি। এই কর্মসূচির দশম দিনে যোগ দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী জানান, কর্মসূচি যে দিন শেষ হবে অর্থাৎ সাগরে এই কর্মসূচি শেষ হওয়ার কথা, সে দিন তিনি আবারও যোগ দেবেন এই কর্মসূচিতে। তৃণমূলে নবজোয়ার কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে মানুষের উদ্দীপনা দেখে এবার দলনেত্রীও তাতে সিলমহর দিয়ে দিলেন। তিনি বললেন, “মানুষ নবজোয়ারকে সমর্থন করছেন”।

মালদহের পর এবার আজ মুর্শিদাবাদে কর্মসূচি রয়েছে তৃণমূলের প্রধান দুই শীর্ষ নেতানেত্রীর। তবে পৃথক ভাবে। সামনেই রাজ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচন। এইদিকে মুর্শিদাবাদ জেলাতে দলবদল জারি রয়েছে। মুর্শিদাবাদ এখন ভাঙনের সাক্ষী। সেটা রাজনৈতিক হোক বা গঙ্গা–ভাঙন। মুর্শিদাবাদ জেলার ফরাক্কা সামশেরগঞ্জ এলাকা মূলত গঙ্গা–ভাঙন কবলিত এলাকা। তাই আজ গঙ্গা ভাঙন পরিদর্শনে গিয়ে বিধ্বস্তদের সঙ্গে দেখা করতে যাবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অন্যদিকে আজ থেকে শুরু করে আগামী চার দিন মুর্শিদাবাদ সফরে থাকবেন অভিষেক। কারণ আজ থেকেই এই জেলায় শুরু হবে তৃণমূলে নব জোয়ার কর্মসূচি।

গতকাল অর্থাৎ বৃহস্পতিবার মালদহের প্রশাসনিক বৈঠক মুখ্যমন্ত্রী জানান, নয়া প্রযুক্তি কাজে লাগিয়ে এবার ভাঙন প্রতিরোধের কাজ হবে। কারণ গঙ্গা–ভাঙনের জেরে বিঘার পর বিঘা জমি তলিয়ে যাচ্ছে গঙ্গাবক্ষে। যা নিয়ে উদ্বিগ্ন মুখ্যমন্ত্রী। অন্যদিকে মালদা, মুর্শিদাবাদ এবং নদিয়া জেলায় গঙ্গা–ভাঙন রুখতে পঞ্চায়েত দফতর, সেচ দফতর এবং পরিবেশ দফতরকে একসঙ্গে কাজ করার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। ইতিমধ্যেই গঙ্গার পাড় বাঁধাতে রাজ্য সরকার ১ হাজার কোটি টাকা খরচ করেছে বলেও জানান মুখ্যমন্ত্রী। পরিবেশ দফতরের সঙ্গে সমন্বয় রেখে ভাঙন প্রবণ এলাকায় নদীর পাড়ে ভেটিভার ঘাস, সমুদ্রপাড়ের মতো ম্যানগ্রোভ জাতীয় গাছ লাগানো হবে। বিশেষত মালদহ-মুর্শিদাবাদ জেলার এই ভাঙন রোধে দিঘাকে ‘মডেল’ করা হবে। কারণ নতুন প্রযুক্তিতে কাজ হওয়ার ফলে দিঘায় সমুদ্রের পাড় সহজে ধসে পড়ে না।

শুধু তা-ই নয়, গঙ্গার ভাঙনের কবল থেকে মালদহ ও মুর্শিদাবাদের লক্ষ লক্ষ মানুষকে বাঁচাতে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনাও করা হচ্ছে। ঘাস আর ম্যানগ্রোভের পাশাপাশি গঙ্গার পাড় থেকে পাঁচ কিলোমিটার দূর পর্যন্ত আর নতুন করে কোথাও কোনও বাড়ি তৈরি করা যাবে না। মালদহের প্রশাসনিক বৈঠক থেকে সরকারের এই সিদ্ধান্তের বিষয়টি স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। আবার কেন্দ্রের বিরুদ্ধে এই নিয়ে কোনও সহায়তা না করার অভিযোগও তোলেন তিনি। বর্ষার আগে গঙ্গার পার বাঁধাতে এবং নিকাশি ব্যবস্থা ঠিক করার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। তার জন্য রাজ্যের পক্ষ থেকে ৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হবে বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী।

এইদিকে মুর্শিদাবাদ জেলা বললেই প্রথমে মাথায় আসে সাগরদিঘি উপনির্বাচনের ফলাফলের কথা। গত লোকসভা নির্বাচনে এই জেলার তিন আসনের দুটি গিয়েছিল তৃণমূলের দখলে৷ একুশের বিধানসভা ভোটেও তৃণমূল কংগ্রেস এখানে ভালো ফল করেছে৷ সাগরদিঘি বিধানসভা কেন্দ্রে প্রায় ৫০ হাজার ভোটে জয়লাভ করেছিলেন তৃণমূলের তিন বারের বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী সুব্রত সাহা। তাঁর অকাল মৃত্যুতে ওই কেন্দ্রে পুনরায় হয় উপনির্বাচন। আর ২রা মার্চ এই উপনির্বাচনের ফলাফলই রাজ্য-রাজনীতি তোলপাড় করে দেয়। কারণ তৃণমূলের জেতা আসার ছিনিয়ে নেয় বাম সমর্থিত কংগ্রেসপ্রার্থী বায়রন বিশ্বাস। আর এখানেই শুরু হয় রাজনৈতিক তরজা। কারণ ওই কেন্দ্রে সংখ্যালঘু ভোটের বেশিরভাগই তাই যায় কংগ্রেসপ্রার্থীর ঝুলিতে। ২০১১ সালের পর থেকে সংখ্যালঘুদের সমর্থন ছিল তৃণমূল সাথে। তবে কী সংখ্যালঘুরা তৃণমূলের থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন? এই প্রশ্নই বারবার উঠছিল রাজনৈতিক মহলে।

সাগরদিঘির উপনির্বাচনে হারের কারণ পর্যালোচনা করতে ৫ সংখ্যালঘু মন্ত্রীকে দায়িত্ব দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়। সেই দলে ছিলেন সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী, সাবিনা ইয়াসমিন, গোলাম রব্বানি, জাভেদ খানেরা৷ সূত্রের খবর, সাগরদিঘি উপনির্বাচনের হারে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বকেই দুষেছে মুখ্যমন্ত্রীর তৈরি কমিটি। তবে এই হারের আরও একাধিক কারণ রয়েছে। মূলত স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের মধ্যে সমন্বয়ের অভাব এবং রাজ্য সরকারের প্রকল্পের সঠিক প্রচার ও সুবিধা থেকে বঞ্চিত হওয়ার কারণে স্থানীয় মানুষ শাসকদলের বিরুদ্ধে রায় দিয়েছে বলে মনে করেছে কমিটি। যদিও কমিটির এই রিপোর্টকে ‘মনগড়া রিপোর্ট’ বলে মনে করছেন বিক্ষুব্ধ জেলা নেতৃত্বের একাংশ। এমনকি এই রিপোর্টে ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন তৃণমূল নেত্রীও। ফলে সাগরদিঘির উপনির্বাচনের ফলাফল নিয়ে কিছুটা হলেও অস্বস্তিতে পড়েছে রাজ্যের শাসকদল৷ এই অবস্থায় মুর্শিদাবাদ জেলায় চার দিন ধরে রয়েছে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের জনসংযোগ কর্মসূচি। ইতিমধ্যে একেবারে বুথ স্তরের সংগঠনের হাল হকিকত দেখতে ময়দানে নেমে পড়েছেন তিনি। অন্যদিকে আজ সামসেরগঞ্জ গঙ্গা ভাঙন কবলিত অঞ্চল পরিদর্শনে যাবেন মুখ্যমন্ত্রীও। সুতরাং রাজ্যের পঞ্চায়েত নির্বাচনকে কেন্দ্র করে মুর্শিদাবাদ জেলা নিয়ে তৃণমূলের পরবর্তী পরিকল্পনা কী হয়, সে দিকেই তাকিয়ে রাজনৈতিক মহল।

এইরকম রাজনৈতিক বিষয়ক প্রতিবেদন পেতে ওয়ান ওয়ার্ল্ড নিউজ বাংলার সাথে যুক্ত থাকুন। 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button