Bangla News

Jyoti Basu Birthday Anniversary: কমরেড জ্যোতি বসুর ১১০ তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে আলো-আঁধার বিতর্ক নিয়ে তাঁর বঙ্গ রাজনীতির মহীরুহ হয়ে ওঠার গল্পটি জেনে নিন

Jyoti Basu Birthday Anniversary: ভারতবর্ষ তথা পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে জ্যোতি বসু একটি বড় নাম

হাইলাইটস:

• আজ কমরেড জ্যোতি বসুর ১১০ তম জন্মবার্ষিকী

• তিনি পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর পদে একটানা ২৩ বছর রাজত্ব করেছেন

• স্বাধীনতা পরবর্তী জাতীয় তথা বঙ্গ-রাজনীতির ইতিহাসে জ্যোতি বসু একটি অবিস্মরণীয় নাম

Jyoti Basu Birthday Anniversary: আজ কমরেড জ্যোতি বসুর ১১০ তম জন্মবার্ষিকী। তিনি ছিলেন দেশের একজন কিংবদন্তি রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর পদে একটানা ২৩ বছর (১৯৭৭ সাল – ২০০০ সাল পর্যন্ত) রাজত্ব করেছেন তিনি। যা বিশ্বের রাজনীতিতেও নজিরবিহীন ঘটনা। শুধুমাত্র ২৩ বছর ধরে বাংলার মসনদে রাজত্বই করেন নি, বরং তিনি প্রায় দু’দশক ধরে সফল বিরোধী দলনেতাও ছিলেন।

বাংলায় ৩৪ বছরের যে বামফ্রন্ট সরকার রাজত্ব করেছিল তাঁর প্রধান কারিগর ছিলেন কমরেড জ্যোতি বসু। ৩৪ বছরের মধ্যে তিনিই একটানা ২৩ বছর পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী পদে বিরাজমান ছিলেন। দশকের পর দশক ধরে শরিকদের নিয়ে তিনি চালিয়ে ছিলেন তৎকালীন বামফ্রন্ট সরকার। উল্লেখ্য, কমিউনিস্ট পার্টির নেতৃত্বে সংসদীয় ব্যবস্থায় এত বছরের সরকার চালানোর ইতিহাস বিশ্বে আর কোথাও দেখা যায় নি।

উচ্চশিক্ষার জন্য ইংল্যান্ডে পড়াশোনা করতে গিয়ে গিয়ে কমিউনিস্ট ভাবাদর্শে উদ্বুদ্ধ হন তিনি। বিলেতে পড়াশোনা শেষ করে দেশে ফিরে তাঁর হাতেখড়ি হয় কমিউনিস্ট রাজনীতিতে। তারপর ১৯৪০ সালে গ্রহণ করেন ভারতের কমিউনিস্ট পার্টির সদস্যপদ। ঠিক এরপর থেকে তাঁর প্রবাদপ্রতিম জননেতা হয়ে উঠার ইতিহাস প্রায় সকলেই জানেন।

স্বাধীনতার ঠিক একবছর আগে অর্থাৎ ১৯৪৬ সালে অবিভক্ত বাংলা প্রদেশের প্রাদেশিক আইনসভায় কমিউনিস্ট পার্টির প্রতিনিধি রূপে নির্বাচিত হয়েছিলেন কমরেড জ্যোতি বসু। তারপর দেশভাগের পর পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার প্রতিনিধি হিসাবে নির্বাচিত হন তিনি। স্বাধীনতার পর পশ্চিমবঙ্গের প্রথম মুখ্যমন্ত্রী ড. বিধানচন্দ্র রায়ের শাসনকালে পশ্চিমবঙ্গের বিরোধী দলনেতার পদ সামলান তিনি।

এরপর ১৯৬৪ সালে ভারতের কমিউনিস্ট পার্টির বিভাজনের পর ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি (মার্ক্সবাদী) দলে যোগ দেন জ্যোতি বাবু। ঠিক তিন বছর পর অর্থাৎ ১৯৬৭ সালের যুক্তফ্রন্ট সরকারের উপমুখ্যমন্ত্রী পদে নির্বাচিত হন তিনি। এরপর বাকিটা ইতিহাস।

প্রায় ১০ বছর পর ১৯৭৭ সালের ২১শে জুন তিনি শপথ নেন পশ্চিমবঙ্গের বামফ্রন্ট সরকারের প্রথম মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে। বামফ্রন্ট সরকারের ৩৪ বছরের রাজত্বে জ্যোতি বসুর ভূমিকা অপরিসীম। তিনি নিজেই একটানা ২৩ বছর রাজত্ব করেছেন। তাঁর শাসনকালে যেমন পঞ্চায়েত ব্যবস্থার শক্তিবৃদ্ধি, ভূমি সংস্কারের মতো সামাজিক-রাজনৈতিক ক্ষেত্রে মোড় বদলে দেওয়ার মতো কাজ হয়েছিল বাংলায়, তেমনই অন্যদিকে তাঁর রাজত্বকালে অসংখ্য বিতর্কেরও সৃষ্টি হয়েছিল। কমরেড জ্যোতি বসু শুধুমাত্র একজন রাজনীতিবিদ ছিলেন না, তাঁর রাজত্বকালে আলো-অন্ধকার মিলে মিশে তাঁকে বঙ্গ-রাজনীতির মহীরুহ করে তুলেছিল।

স্বাধীনতার পর সাত দশকেরও বেশি সময় কেটে গেলেও কোনও বাঙালিকে প্রধানমন্ত্রীর চেয়ার বসতে দেখেনি ভারত। তবে ১৯৯৬ সালে সেই সুযোগ এসেছিল। ভারতের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি নাম বিবেচিত হলেও, তিনি কমিউনিস্ট পার্টির সিদ্ধান্তে সেই মুহূর্তেই প্রধানমন্ত্রী পদ প্রত্যাখ্যান করেন।

একটানা ২৩ বছর মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব পালনের পর শারীরিক অসুস্থতার কারণে ২০০০ সালের ৬ই নভেম্বর মুখ্যমন্ত্রীত্ব থেকে সরে দাঁড়ান তিনি। এবং তাঁর মন্ত্রীসভার সদস্য বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের হাতে মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব অর্পণ করে নিজে অবসর জীবন বেছে নেন। তবে তিনি ২০০৮ সাল পর্যন্ত সিপিআই(এম) দলের পলিটব্যুরোর সদস্য ছিলেন। তার দুবছর পর ২০১০ সালে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। তবে কমরেড জ্যোতি বসুর ১১০ তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে একথা বলা যায়, স্বাধীনতা পরবর্তী জাতীয় তথা বঙ্গ-রাজনীতির ইতিহাসে তাঁর নাম স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে আজীবন।

এইরকম গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন পেতে ওয়ান ওয়ার্ল্ড নিউজ বাংলার সাথে যুক্ত থাকুন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button