Bangla News

Abhishek Banerjee: কোচবিহার থেকে শুরু হচ্ছে তৃণমূলে নব জোয়ার কর্মসূচি! মদনমোহন মন্দিরে পুজো দিয়ে এই যাত্রা শুরু করতে চলেছেন অভিষেক

মঙ্গলবার থেকে শুরু হতে চলেছে ২ মাস ব্যাপী তৃণমূলের জনসংযোগ যাত্রা

হাইলাইটস:

•মঙ্গলবার থেকে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে শুরু হতে চলেছে তৃণমূলে নব জোয়ার কর্মসূচি

•আজ বিকেলে কোচবিহার পৌঁছবেন অভিষেক

•কোচবিহার পৌঁছেই তিনি মদনমোহন মন্দিরে পুজো দেবেন

কলকাতা: মঙ্গলবার কোচবিহার থেকে শুরু হতে চলেছে তৃণমূলে নব জোয়ার যাত্রা কর্মসূচি। সেই লক্ষ্যে সোমবার অর্থাৎ আজই কোচবিহারে আসছেন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)। দলের তরফে জানানো হয়েছে আজ, বিকেল ৪টে নাগাদ হেলিকপ্টারে কোচবিহারে পৌঁছবেন তিনি। তারপর পুজো দেবেন মদনমোহন মন্দিরে, এবার সেখান থেকে জনসংযোগ যাত্রার বিশেষ বাসে চেপেই তিনি রওনা দেবেন দিনহাটার দিনহাটার বামনহাটের পাথরসনের মাধাইকালী মন্দিরের মাঠের উদ্দেশ্যে। সেখানেই রাত্রিযাপনের কথা রয়েছে তাঁর। সেই জন্য বিশেষ তাঁবুও ব্যবস্থা করা হয়েছে।

এরপর সেখান থেকে আগামীকাল সাহেবগঞ্জে জনসভা করে তিনি শুরু করবেন ২ মাস ব্যাপী তৃণমূলের জনসংযোগ যাত্রা। সভা শেষে গোপন ব্যালটের মাধ্যমে বেছে নেওয়া হবে পঞ্চায়েত ভোটের প্রার্থীদের। অভিষেকের সফর ঘিরে কোচবিহার তৃণমূল কংগ্রেসের দায়িত্ব অনেকটাই বেড়ে গেছে। সমগ্র কোচবিহার জেলায় নব জোয়ার যাত্রাকে কেন্দ্র করে তৈরি হয়েছে সাজ সাজ রব। তৃণমূল কংগ্রেস পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে কোচবিহার জেলাকে বিশেষ গুরুত্ব সহকারে দেখছে। কারণ গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে কোচবিহারে ১২৮টি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে ১২৬টিতেই জয়ী হয় তৃণমূল। ১টি করে গ্রাম পঞ্চায়েতে জয়ী হয় বাম এবং বিজেপি। এমনকি ১২টি পঞ্চায়েত সমিতির নিজেদের দখলে রাখে রাজ্যের শাসকদল। এমনকি পঞ্চায়েতের তিনটি স্তরে ৩৬ শতাংশ আসনেই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয় শাসকদল।

তবে এক বছর পরে লোকসভা নির্বাচনেই উল্টে যায় সমীকরণ। কোচবিহার লোকসভা আসন তৃণমূলের থেকে ছিনিয়ে নেয় বিজেপি। ২০১৯ সালের লোকসভা ও ২০২১ সালের বিধানসভায় উত্তরবঙ্গে বিজেপির ভালো ফল করেছিল। তৃণমূল সেভাবেই প্রভাব বিস্তার করতে পারেনি উত্তরবঙ্গের উল্লেখযোগ্য কোচবিহার জেলাতে। তাই রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, পঞ্চায়েত ভোট এবং ২৪-এর লোকসভা নির্বাচনে অনেকটাই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে কোচবিহার। তাই জন জোয়ার যাত্রায় সফরের তালিকায় প্রথম বাছাই করা হয়েছে কোচবিহার জেলাকে।

আবার অন্যদিকে রাজনৈতিক সংঘর্ষজনিত কারণেও বারবার সংবাদ শিরোনামে উঠে এসেছে কোচবিহারের দিনহাটা। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বনাম উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রীর লাগাতার রাজনৈতিক লড়াইয়েই সাক্ষী থেকেছে দিনহাটা৷ ফলে তৃণমূলে নবজোয়ার কর্মসূচি শুরু হচ্ছে সেই দিনহাটা থেকেই যা রাজনৈতিকভাবে যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ। কোচবিহারে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে স্বাগত জানাতে প্রস্তুত জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব। সাহেবগঞ্জ, গোসানিমারি ও শীতলকুচিতে সভামঞ্চের কাজ চলছে জোরকদমে। গতকাল সাহেবগঞ্জে সভার প্রস্তুতি খতিয়ে দেখতে যান উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী এবং কোচবিহারের দাপুটে নেতা উদয়ন গুহ।

তিনি সভামঞ্চ পরিদর্শন করে বলেন, প্রস্তুতি প্রায় শেষ পর্যায়ে। বাংলার এই কর্মসূচি দিনহাটা থেকে শুরু হচ্ছে। এই কর্মসূচিতে ঘিরে কর্মীরা উজ্জীবিত ও উচ্ছ্বসিত। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় দিনহাটাকে বেছে নিয়েছেন। এটা কর্মীদের কাছে গর্বের ব্যাপার। এটা ইতিহাস তৈরি করবে বলে আমার মনে হয়। উনি মানুষের কথা শোনার জন্যই আসছেন। গঠনমূলক কথা জানানো হলে আমরাও স্বাগত জানাবো।”

আগামীকাল সাহেবগঞ্জের সভা থেকে গোসানিমারি, শীতলখুচিতে একাধিক কর্মসূচি সেরে অভিষেক পৌঁছবেন মাথাভাঙার কলেজ মাঠে। সেখানে রাত্রিযাপন করবেন তিনি। এরপর ২৬শে এপ্রিল একইভাবে একাধিক জায়গায় রোড শো এবং সভা করে তুফানগঞ্জের মহকুমা ক্রীড়া সংস্থার মাঠে গিয়ে রাত্রিযাপন করবেন অভিষেক। তারপর কোচবিহার সফর শেষ করে ২৭ শে এপ্রিল বিজেপির শক্ত ঘাঁটি হিসাবে পরিচিত আলিপুরদুয়ারে জনসংযোগ কর্মসূচি রয়েছে তাঁর।

অভিষেকের সফর ঘিরে কড়া নিরাপত্তা বলয়ে মুড়ে নেওয়া হচ্ছে সমগ্র কোচবিহার জেলাকে। যেখানে যেখানে অভিষেকের রাত্রিযাপন এবং সভা করার কথা আছে সেই স্থানগুলি একাধিক বার পরিদর্শন করেছেন রাজ্য পুলিশের উত্তরবঙ্গ শাখার শীর্ষ কর্তারা। অভিষেকের যাত্রাপথও কয়েক দফায় পরিদর্শন করেছেন তাঁরা। এমনকি অভিষেকের দায়িত্বে থাকা নিরাপত্তাকর্মীরাও দফায় দফায় পরিদর্শন করেছেন। প্রশাসন সূত্রে খবর, সভাস্থল এবং রাত্রিযাপনের স্থানগুলি ঘিরে নেওয়া হয়েছে সিসি ক্যামেরায়। স্নিফার ডগ চষে বেড়াচ্ছে সেখানে। অভিষেককে ঘিরে থাকবে দু’টি নিরাপত্তা বলয়। একটি হল অভিষেকের দায়িত্বে থাকা নিরাপত্তা রক্ষীরা এবং অপরটি হল কোচবিহার জেলা পুলিশের কর্মীরা। প্রশাসন সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় জেড প্লাস নিরাপত্তা পান। সে ক্ষেত্রে তাঁর গাড়ির সামনে এবং পিছনে পাইলট ভ্যান এবং পুলিশ ভ্যান থাকবে। অবশ্য অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই কর্মসূচিকে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি বিরোধী শিবির।

এইরকম রাজনৈতিক বিষয়ক প্রতিবেদন পেতে ওয়ান ওয়ার্ল্ড নিউজ বাংলার সাথে যুক্ত থাকুন। 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button