নবান্নের শিল্প বৈঠক থেকে ৪১ লক্ষ চাকরির ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের
বুধবার ছিল নবান্নের সভাঘরে ইন্ডাস্ট্রিয়াল প্রমোশন বোর্ডের বৈঠক
হাইলাইটস:
•বুধবার নবান্নে ছিল মুখ্যমন্ত্রী তত্ত্বাবধানে শিল্পপতিদের নিয়ে বৈঠক
•আগামী ২১-২৩শে নভেম্বর অনুষ্ঠিত হতে চলেছে বিশ্ব বাংলা বাণিজ্য সম্মেলন
•ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পে ৪১ লক্ষ কর্মসংস্থানের আশ্বাস দেন মুখ্যমন্ত্রী
কলকাতা: বুধবার নবান্নের সভাঘরে শিল্পপতিদের সঙ্গে বৈঠক করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৈঠকে উপস্থিত রয়েছেন রাজ্যের মুখ্যসচিব ও বিভিন্ন দফতরের সচিবেরা। সেখানেই চলতি বছরে বিশ্ব বাংলা বাণিজ্য সম্মেলনের দিনক্ষণও ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী। আগামী ২১-২৩শে নভেম্বর অনুষ্ঠিত হতে চলেছে ওই সম্মেলন। শিল্প সম্মেলনের আগে রাজ্যে ৪-৫টি রোড শো করার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। এর পাশাপাশি, রাজ্যের শিল্প এবং ইকোনমিক করিডর নিয়ে প্রচারের জন্য তিনি নির্দেশ দিয়েছেন মন্ত্রী শশী পাঁজা এবং চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যকে। তথ্য এবং পর্যটন দফতরের হোর্ডিংয়ে বিভিন্ন শিল্প এবং ইকোনমিক করিডরের কথা তুলে ধরে প্রচার চালানোর নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
কলকাতাকে বাণিজ্যে আন্তর্জাতিক স্তরে পৌঁছে দিতে বড় পদক্ষেপ করতে চলেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কলকাতায় তৈরি হতে চলেছে একটি ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার। তা শহরের মুকুটে ‘নতুন পালক’ বলে আখ্যা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। আগামী ২১শে মার্চ সংশ্লিষ্ট বেসরকারি কোম্পানির সঙ্গে মৌ স্বাক্ষর করবে রাজ্য সরকার। ১৫০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করা হবে ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারটি তৈরি করতে। ৩৫ হাজার বর্গ ফুটের ওই ট্রেড সেন্টারে আনুমানিক ৩৫ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হবে বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
গতকাল নবান্নে শিল্পপতিদের সঙ্গে বৈঠকে বিভিন্ন ক্ষেত্রে আরও নিয়োগের ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রীর। পরিসংখ্যান তুলে ধরে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের ক্ষেত্রে রাজ্যে বিপুল সংখ্যক কর্মসংস্থানের কথা জানান তিনি। সেখানেই তিনি জানান, বাংলা এগিয়ে গিয়েছে কর্মসংস্থানে। সেই প্রসঙ্গে উঠে আসে ওই ক্ষেত্র নিয়ে রাজ্যের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার কথাও। মমতা সাফ জানিয়ে দেন, আগামীদিনে ৪১ লক্ষ মানুষের কর্মসংস্থান হবে ওই শিল্পে। তিনি এদিন আলোচনা সভায় আরও বলেন, কেবল মাত্র সরকারি চাকরির দিকে তাকিয়ে থাকলে হবে না৷ বিভিন্ন বেসরকারি ক্ষেত্রেও চাকরিও তো চাকরি৷ সেই কাজে আরও বেশি পরিমাণ মানুষ যুক্ত হবেন৷ ক্ষুদ্র, মাঝারি ও কুটির শিল্পের ক্ষেত্রে এই পরিসংখ্যান যে কেন্দ্রের তরফ থেকেই দেওয়া হয়েছে, সাংবাদিকদের সামনে এ কথাও বলেন মুখ্যমন্ত্রী৷
গতকাল নবান্নের সভাঘরে ইন্ডাস্ট্রিয়াল প্রমোশন বোর্ডের বৈঠকে ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। ছিলেন অন্য মন্ত্রীরাও। শিল্পের জন্য জমি অধিগ্রহণের জট কাটাতে বৈঠক হয় বলে খবর। তবে জোর করে জমি নেওয়া হবে না বলেও এই বৈঠকে শিল্পপতিদের জানান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ইতিমধ্যেই ৮ হাজার একর জমি অধিগ্রহণের জন্য চিহ্নিত করা হয়েছে। এখানেই তাঁর দাবি, এমএসএমই সেক্টরে ১ লক্ষ ১৪ হাজার লাখ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে। রাজ্যে যে এই সেক্টরে বিরাট সাফল্য এসেছে, তা ইতিমধ্যেই কেন্দ্রীয় রিপোর্টেও উল্লেখ করা হয়েছে। এই ব্যাপারে এদিন বানতলার কথাও তুলে ধরেন তিনি।
মুখ্যমন্ত্রী এইদিন জানিয়েছেন, বিশ্ব বাংলা বাণিজ্য সম্মেলনে চেম্বার অফ কমার্সকে শরিক করা হবে। মুম্বইয়ে শিল্প সম্মেলনের প্রচারের দায়িত্বে ফিকি, চেন্নাইয়ের দায়িত্বে সিআইআই, দিল্লির দায়িত্বে অমিত মিত্র, কর্ণাটকের দায়িত্বে ইন্ডিয়ান চেম্বার্স, রাজস্থানের দায়িত্বে উমেশ-হর্ষারুদ্ররা। মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, ডাটা সেন্টার হিসাবে উঠে আসছে বাংলা। লজিস্টিক হাব তৈরি হচ্ছে। ফ্লিপকার্ট এসেছে কল্যাণীতে। প্রচুর কর্মসংস্থান হবে। আমাজনের ৭টি লজিস্টিক হাব আছে। ১২ হাজার লোক কাজ করছে। আগামী দিনে আরও কর্মসংস্থান গড়ে উঠবে। মুখ্যমন্ত্রী আরও জানিয়েছেন, দু’টো ওয়াগন কারখানা এসেছে বাংলায়। সেখানেও আগামী দিনে বিপুল সংখ্যক কর্মসংস্থান হয়েছে। টাটানগর ফ্যাক্টরি বন্ধ করে টাটা হিতাচি খড়গপুরে আসছে। মালদহ, বালুরঘাট, কোচবিহারে এয়ারপোর্ট তৈরি হচ্ছে। যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত করার জন্য সবরকমের চেষ্টা হচ্ছে। সুতরাং বলা যায়, গতকালের বৈঠকে শিল্পপতিদের নিয়ে অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আলোচনা করছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এইরকম রাজনৈতিক এবং গুরুত্বপূর্ণ খবর সবার আগে পেতে ওয়ান ওয়ার্ল্ড নিউজ বাংলার সাথে যুক্ত থাকুন।