জাতীয় কন্যা শিশু দিবস ২০২৩
প্রতিবছর ২৪শে জানুয়ারি পালিত হয় জাতীয় কন্যা শিশু দিবস
জাতীয় কন্যা শিশু দিবস: প্রতিবছর ২৪শে জানুয়ারি ভারতে জাতীয় কন্যা শিশু দিবস পালন করা হয়। ভারতে কন্যা শিশুদের সমর্থন এবং বিভিন্ন সুযোগ প্রদানের উদ্দেশ্যে এই দিনটি উদযাপিত হয়। এই বিশেষ দিনটি মহিলা ও শিশু উন্নয়ন মন্ত্রকের উদ্যোগে পালিত হয়। আজকের দিনে দাঁড়িয়ে দেশের প্রায় সব ক্ষেত্রেই কন্যাদের অংশীদারিত্ব রয়েছে, কিন্তু একটা সময় ছিল যখন মানুষ কন্যা সন্তানকে গর্ভেই হত্যা করতেন। এমনকি কন্যাসন্তান জন্মালেই তাদের বাল্যবিবাহের আগুনে ঠেলে দেওয়া হত। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে, ভারত কন্যা ও পুত্রের মধ্যে বৈষম্যের বিরুদ্ধে, তাদের উপর অত্যাচারের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করে আসছে। এই দিন মহিলা ও শিশু কল্যাণ মন্ত্রক দেশে লিঙ্গ সমতা সম্পর্কে সচেতনতার বার্তা দিয়ে থাকে দেশবাসীকে।
২০০৮ সালে ভারত সরকার এবং মহিলা ও শিশু উন্নয়ন মন্ত্রণালয়, লিঙ্গ সমতা সম্পর্কে সচেতনতা ছড়িয়ে দেওয়ার উদ্যোগ শুরু করে। সমাজে মেয়েরা প্রতিমুহূর্তে যে লিঙ্গ বৈষম্যের মুখোমুখি হচ্ছে সে সম্পর্কে সচেতনতা ছড়িয়ে দেওয়ার লক্ষ্যেই এটি শুরু করা হয়েছিল। ডঃ মনমোহন সিং সরকারের অধীনে তখন মন্ত্রীর নেতৃত্বে ছিলেন রেণুকা চৌধুরী। বেশ কয়েক বছর ধরে ভারত সরকার মেয়েদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও পুষ্টির গুরুত্ব সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করে তোলার জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে। এই কারণে কন্যা শিশুদের জীবনযাত্রার উন্নতির জন্য বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়াও শুরু হয়েছে। এর মধ্যে ভারত সরকারের কয়েকটি উদ্যোগ হল – ক) সেভ দ্য গার্ল চাইল্ড, খ) বেটি বাঁচাও, বেটি পড়াও, গ) সুকন্যা সমৃদ্ধি যোজনা, ঘ) সিবিএসই উড়ান প্রকল্প, ঙ) শিশু কন্যাদের জন্য বিনামূল্যে বা ভর্তুকি যুক্ত শিক্ষা, চ) কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে মহিলাদের জন্য সংরক্ষণ এবং ছ) ন্যাশনাল স্কিম অফ ইনসেনটিভ টু গার্লস ফর সেকেন্ডারি এডুকেশন। এছাড়া পশ্চিমবঙ্গ সরকারের ‘কন্যাশ্রী’ এবং আরও অন্যান্য।
স্বাধীনতার এতো বছর পরও কন্যা ভ্রূণহত্যা ও কন্যা শিশু হত্যার ঘটনা ঘটেই চলেছে দেশের নানা প্রান্তে। নানা ভাবে মানুষকে এর বিরুদ্ধে সতর্ক ও সচেতন করার উদ্দেশ্যেই পালিত হয় আজকের দিনটি। দেশে কন্যাসন্তানকে প্রথম স্থানে আনতে অনেক পরিকল্পনা ও আইন বাস্তবায়ন করা হয়। ২৪শে জানুয়ারি এই বিশেষ দিনটি উৎযাপনের আরও একটি বিশেষ কারণও রয়েছে। কারণটি ভারতের প্রথম মহিলা প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর সাথে সম্পর্কিত।
জাতীয় কন্যা শিশু দিবসের তাৎপর্য:
•জাতীয় শিশু কন্যা দিবস পালনের অন্যতম প্রধান লক্ষ্য হল কন্যা শিশুদের অধিকার এবং তাদের শিক্ষার বিষয়ে সচেতনতা বাড়ানো।
•ভারতীয় সমাজে ক্রমবর্ধমান কন্যা ভ্রূণহত্যা ও শিশু কন্যা হত্যার ঘটনা বেড়েই চলেছে তাই তাদের সতর্ক করার জন্য জাতীয় কন্যা শিশু দিবস উদযাপন শুরু হয়েছিল।
•মেয়েদের বিনামূল্যে প্রাথমিক শিক্ষা প্রদান করার কথাও ঘোষণা করেছে।
•কন্যা ভ্রূণহত্যা যাতে নিয়ন্ত্রণে আসে তাই জন্য ভ্রূণের লিঙ্গ নির্ধারণের উপরও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
•কন্যা সন্তানের পক্ষে নেওয়া একাধিক উদ্যোগের কারণে দেশে ধীরে ধীরে নারীশিক্ষা ও মেয়েদের স্বাস্থ্যের উন্নতি হচ্ছে।