গঙ্গাসাগর মেলার আগে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ২ দিনের গঙ্গাসাগর সফর
তিনি কপিল মুনির আশ্রমে পুজো দেন
গঙ্গাসাগর: গত ২ বছরের করোনা পরিস্থিতির পরে এবছরের গঙ্গাসাগর মেলা শুরু হবে ৭ই জানুয়ারি থেকে। প্রতি বছরের মতো এই বছরেও মেলার প্রস্তুতিপর্ব খতিয়ে দেখতে যাওয়ার কথা ছিল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের।
গতকাল ডুমুরজলা হেলিপ্যাড থেকে হেলিকপ্টারে চড়ে গঙ্গাসাগরের উদ্দেশ্যে রওনা দেন তিনি। হেলিপ্যাডে কড়া নিরাপত্তার সাথে প্রচুর সিসিটিভি এবং প্রশাসনিক নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছিল তাঁর সফরকে কেন্দ্র করে। নিরাপত্তা বলয়ে মুড়ে দেওয়া হয়েছিল হেলিপ্যাড থেকে ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘ, কপিল মুনির আশ্রম সবকিছুই। মুখ্যমন্ত্রী সেখানে পৌঁছে নতুন স্থায়ী হেলিপ্যাডের উদ্বোধন করেছেন। তারপরে সেখান থেকে তিনি সোজা পৌঁছে গেছেন ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘে। সেখানে গঙ্গাসাগর মেলার প্রস্তুতি নিয়ে সঙ্ঘের আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। ইতিমধ্যেই গঙ্গাসাগর মেলার প্রস্তুতি নিয়ে নবান্নে বৈঠক করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। জেলা প্রশাসনকেও একাধিক নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এর সাথে তিনি কপিল মুনির আশ্রমে পুজোও দিয়েছেন। এই দুদিনের সফরে সবকিছুই সেরেছেন তিনি। এবছরে মেলার ভিড় অতীতের সব রেকর্ডকে ছাপিয়ে যেতে পারে বলে অনুমান করছে প্রশাসন। তার জন্য পুলিশকে বিশেষভাবে সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। এখানে এসে তিনি কেন্দ্রের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন। আর চারিদিক পরিদর্শন করে রাতে একটি আবেগঘন ফেসবুক পোস্ট করেন মুখ্যমন্ত্রী।
আর মাত্র কয়েকটা দিন। আগামী ৭ই জানুয়ারি থেকেই শুরু হতে চলেছে গঙ্গাসাগর মেলা। সুষ্ঠভাবে এই মেলার আয়োজন করার জন্য ইতিমধ্যেই একাধিক ব্যবস্থা নিয়েছে রাজ্য সরকার। সাংবাদিক বৈঠক করে সেই সমস্ত ব্যবস্থার কথা ঘোষণাও করা হয়েছে। এবার মেলা শুরুর আগে সমস্ত পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে গতকাল থেকে ২ দিনের জন্য গঙ্গাসাগর পরিদর্শনে গেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আজই তাঁর ফিরে আসার কথা, ডুমুরজলা হেলিপ্যাডে তার হেলিকপ্টার নামবে।
ভিড় সামলানোর জন্য যাতে সব রকমের ব্যবস্থা থাকে, তা নিয়ে বিশেষ নির্দেশও দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ইতিমধ্যেই গঙ্গাসাগর মেলায় অস্থায়ী স্বাস্থ্যশিবির তৈরি করার পাশাপাশি এয়ার অ্যাম্বুল্যান্সের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এরই সঙ্গে দক্ষিণ ২৪ পরগনায় একাধিক হাসপাতালকেও প্রস্তুত রাখা হয়েছে। জলপথে যাতে নজরদারি চালানো হয়, তার জন্য কোস্টাল পুলিশকেও বিশেষভাবে নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গঙ্গাসাগর মেলায় নজরদারির জন্য মেগা কন্ট্রোলরুম তৈরি করা হয়েছে। ট্রাফিক সিস্টেম সুষ্ঠভাবে পরিচালন করার জন্য ১১টি বাফার জোন, ১০টি পার্কিং জোন করা হয়েছে। বিভিন্ন জায়গায় ক্যাম্পের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। পুলিশ বিভিন্ন জায়গায় ক্যাম্প করবে। ১১৫০টি সিসিটিভি ক্যামেরা, ২০টি ড্রোন থাকছে। ইন্টিগ্রেটেড কন্ট্রোল রুম থাকছে। ২,১০০ সিভিল ডিফেন্স ও অন্যান্য ভলান্টিয়ার নিয়োগ করা হয়েছে। ১০টি অস্থায়ী ফায়ার স্টেশন ও ২৫টি দমকলের ব্যবস্থা থাকবে। ভারত সেবাশ্রমের তরফে ৬,৫০০ ভলেন্টিয়ার থাকবে। ১০, ০০০ এর বেশি শৌচাগার থাকবে। ৭টি সলিড ওয়েস্ট মানাজেনমেন্ট থাকছে। প্লাস্টিক ফ্রি মেলা হবে। চিকিৎসার জন্য ৩০০ বেড। একটি এয়ার অ্যাম্বুলেন্স, ৪টি ওয়াটার অ্যাম্বুলেন্স ও ১০০টি অ্যাম্বুলেন্স ও পোস্টমর্টেম ব্যবস্থাও থাকবে ২৪ ঘণ্টার জন্য। সব মিলিয়ে এইবারের গঙ্গাসাগর মেলাতে যাতে কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে সেই দিকে নজর রাখবে প্রশাসন।