আপনার কী মাড়ি থেকে রক্তপাত হয়? এই ৭টি ঘরোয়া টোটকা ব্যবহার করে এটির প্রতিকার করুন
এখানে সাতটি ঘরোয়া টোটকা রয়েছে যা আপনাকে মাড়ির রক্তপাত থেকে মুক্ত করতে পারে
লক্ষণীয় বিষয়:
•মাড়ি থেকে রক্তপাতের কারণ
•আপনার মাড়ির সমস্যার সমাধান করার ঘরোয়া টোটকা
স্বাস্থ্যকর মাড়ি আপনার সুন্দর হাসি বজায় রাখতে সাহায্য করে। মাড়ি হল দাঁতের সহায়ক কাঠামো যা ব্যাকটেরিয়ার জন্য বাধা হিসাবে কাজ করে। মাড়ি না থাকলে ব্যাকটেরিয়া ও খাবারের ধ্বংসাবশেষ চলে যাবে দাঁতের গভীরে। কিছু মানুষ তাদের দাঁত ব্রাশ করার সময় বা শক্ত কিছু খাওয়ার সময় ব্রাশে সামান্য রক্ত লক্ষ্য করে। মাড়ির রোগের কারণে এমনটা হয়।
মাড়ি থেকে রক্ত পড়া আজকালদিনে একটি বড় সমস্যায় পরিণত হয়েছে। এটি শিশু এবং তরুণদের মধ্যে প্রায়সই দেখা যায়, প্রধানত ভুল খাদ্যাভ্যাস এবং দুর্বল মৌখিক স্বাস্থ্যবিধির কারণে। আমরা যখন জাঙ্ক ফুড, বিশেষ করে চিনিযুক্ত খাবার খাই, তখন তা আমাদের দাঁতে আটকে যায়।
মাড়ি থেকে রক্তপাতের কারণ:
কখনও কখনও দুধ, মধু, সোডা, চিনি, কেক, কুকিজ, শুকনো ফল এবং চিপস এই সবই গিয়ে জমা হয় দাঁতের এনামেলে। যদি সেগুলি সঠিকভাবে পরিষ্কার করা না হয় তবে আপনার মুখের মধ্যেকার অংশে ব্যাকটেরিয়ার সৃষ্টি হয়। এই ব্যাকটেরিয়াগুলি অ্যাসিড তৈরি করে যা মাড়িতে একটি ফলক তৈরি করে। সময়ের সাথে সাথে, এটি মাড়িকে জ্বালাতন করে যার ফলে মাড়িতে একপ্রকার জ্বালার সৃষ্টি হয় এবং দাঁতের গোড়া আলগা হয়ে যায়। এটি মাড়িকে দুর্বল করে তোলার ফলে সহজেই রক্তপাত হতে পারে।
মাড়ির রক্তপাত অন্যান্য কারণেও হতে পারে যেমন জিনজিভাইটিস একটি রোগ যা মাড়িতে জ্বালার সৃষ্টি করে। দু’বার ব্রাশ না করা, প্রতিদিন এমন টুথব্রাশ ব্যবহার করা যা খুব শক্ত, পুরানো বা জীর্ণ হয়ে যাওয়া টুথব্রাশ ব্যবহার করা, ডায়াবেটিস এবং লিউকেমিয়ার মতো অবস্থাও মাড়ির রক্তপাতের কারণ হতে পারে।
মাড়ি থেকে রক্তপাত বিষয়টি আতঙ্কজনক শুনতে লাগে, তবে এটি প্রাথমিক পর্যায়ে খুব ভালোভাবে চিকিৎসা করা যেতে পারে। আপনি সর্বদা এই কার্যকর কৌশলগুলির সাথে এগুলি প্রতিরোধ করতে পারেন।
আপনার মাড়ির সমস্যার সমাধানের জন্য ঘরোয়া প্রতিকারগুলি হল:
ত্রিফলা জল দিয়ে কুলকুচি করুন:
ত্রিফলা ভেষজ হল একটি কার্যকরী ভেষজ, যা মাড়ি থেকে রক্তপাত এবং মাড়ির জ্বালা ভাব দূর করতে সাহায্য করে। ত্রিফলার গুণাগুণ রক্তপাত বন্ধ করতে কার্যকরী ভূমিকা নেয়। দিনে ২-৩ বার এটি দিয়ে কুলকুচি করলে রক্ত পড়া বন্ধ হবে এবং মাড়ির প্রদাহ প্রতিরোধ হবে।
১. এক গ্লাস গরম জলে ১ চা চামচ পূর্ণ ত্রিফলা গুঁড়ো দিন।
২. ৫ মিনিট থাকতে দিন। ত্রিফলা কিছুটা স্থির হোক।
৩. তারপর জলটি ছেঁকে নিন তারপর এটি দিয়ে কুলকুচি করুন।
যেকোনো আয়ুর্বেদিক দোকানে আপনি এই ত্রিফলা গুঁড়ো খুব সহজেই পেতে পারেন।
লবঙ্গ তেল লাগান:
মাড়ি থেকে রক্তপাতের জন্য অত্যন্ত কার্যকরী একটি চিকিৎসা হল লবঙ্গ তেল।
•আঙুল দিয়ে কয়েক ফোঁটা লবঙ্গ তেল লাগান।
•এটি দিয়ে আপনার মাড়িটি ম্যাসাজ করুন।
•বিকল্পভাবে, আপনি প্রতিদিন দুটি লবঙ্গ নিতে পারেন।
কখনও কখনও এটি সামান্য জ্বলন্ত সংবেদন সৃষ্টি করতে পারে, তবে এটি উল্লেখযোগ্যভাবে প্রদাহকে মুক্তি দেবে।
ভিটামিন C-এর গ্রহণ বাড়ান:
ভিটামিন C যুক্ত খাওয়ার পরিমাণ বাড়ালে মাড়ির রক্তপাত কম হবে।
আপনার খাদ্যতালিকায় কমলালেবু, মিষ্টি চুন, কিউই, এমনকি আনারস, আমলকী, বেরি যেমন রাস্পবেরি এবং ব্লুবেরির মতো সাইট্রাসজাতীয় ফল যোগ করুন।
হলুদের পেস্ট লাগান:
ইনফেকশন, দাঁতে হোক বা মাড়িতে, মাড়ি থেকে রক্তপাত হতে পারে।
•আপনি সামান্য মধু এবং হলুদ নিয়ে একটি পেস্ট তৈরি করতে পারেন।
•এই পেস্টটি আপনার মাড়ির পাশাপাশি দাঁতেও লাগান। এটি জিনজিভাইটিসের লক্ষণগুলি থেকে মুক্তি দেবে।
হলুদে প্রাকৃতিক অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি বৈশিষ্ট্য রয়েছে।
করমড়ে সবজি খান:
শাকপাতা এবং গাজরের মতো সবজি আপনার দাঁতকে সুস্থ রাখবে। এই করমড়ে ভাবটি আপনার দাঁতের মধ্যে থাকা খাবারের অবশিষ্টাংশ অপসারণ করতে সাহায্য করবে। তাদের কম চিনি এবং কার্বোহাইড্রেটের ফলে আপনার দাঁত ও মাড়ি থাকবে সুস্থ এবং স্বাস্থ্যকর।
স্বাস্থ্যবিধি অনুশীলন:
সাধারণ স্বাস্থ্যবিধি হল এমন একটি অভ্যাস যার মধ্যে ব্রাশ করার পরে আপনার মুখ পরিষ্কার করা এবং ধুয়ে ফেলা অন্তর্ভুক্ত। প্রতিদিন মাড়ি ম্যাসাজ করা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।
আপনার খাবার শেষ করার পরে ৪-৫ বার জল দিয়ে কুলকুচি করুন।
আবার প্রদাহ এবং সংক্রমণ রোধ করতে আপনি উষ্ণ লবণ জল দিয়েও কুলকুচি করতে পারেন।
নিম ডাল:
https://www.instagram.com/p/CSGQH4fh6iM/?igshid=YmMyMTA2M2Y=
মাড়ির সমস্যা এড়াতে আরেকটি কার্যকরী সমাধান হল একটি তাজা নিম ডাল চিবানো।
•এটিকে ব্রাশ বানিয়ে দাঁত ব্রাশ করুন।
•তারপর জল দিয়ে কুলকুচি করুন।
এটি সমস্ত মৌখিক সমস্যার প্রতিরোধে সাহায্য করবে।
এই সব সহজ কৌশল আপনার দাঁত সংক্রমণ মুক্ত করবে এবং আপনাকে একটি স্বাস্থ্যকর হাসি উপহার দেবে।