নিৰ্বাচন

Mamata Banerjee in Cooch Behar: কোচবিহার থেকে পঞ্চায়েতের প্রচার শুরু করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, বাম-কংগ্রেস নিয়ে নীরব থেকে শুধু মোদী সরকারকে নিশানা তৃণমূল নেত্রীর

Mamata Banerjee in Cooch Behar: কোচবিহার থেকে পঞ্চায়েত-প্রচার শুরু করে কেন্দ্রীয় সরকার ও বিএসএফ-কে নিশানা করলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

হাইলাইটস:

• সোমবার উত্তরবঙ্গের কোচবিহারে এবারের পঞ্চায়েত ভোটের নির্বাচনী প্রচার শুরু করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

• নির্বাচনী জনসভায় একাধিকবার বিজেপি সরকারকে আক্রমণ করলেন মুখ্যমন্ত্রী

• পঞ্চায়েত নির্বাচনে বিএসএফ-কে নিয়ে চরম সতর্কবাণী দিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো

Mamata Banerjee in Cooch Behar: পঞ্চায়েত ভোটের জোর কদমে প্রচার শুরু করলেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গতকাল উত্তরবঙ্গের কোচবিহার থেকে পঞ্চায়েত ও পাশাপাশি লোকসভা নির্বাচনেরও প্রচার শুরু করলেন তৃণমূল নেত্রী। সোমবার কোচবিহারের চান্দামারি প্রাণনাথ হাই স্কুল ময়দানে প্রথম নির্বাচনী জনসভায় প্রথম থেকেই তাঁর নিশানায় ছিল বিজেপি শাসিত কেন্দ্রীয় সরকার। সিপিএম বা কংগ্রেসের বিরুদ্ধে তিনি সেই ভাবে কোনো কথাই বলেননি গতকাল। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের একাংশ প্রশ্ন তুলছেন, এটি কি পটনায় হওয়া বৈঠকের ফল? মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের গতকালের সভায় পঞ্চায়েত ভোটের পাশাপাশি একাধিক বার উঠে এসেছে ২০২৪- এর লোকসভা নির্বাচনের প্রসঙ্গও। ২৪- এর লোকসভা নির্বাচনের কথা মাথায় রেখে এবং বিজেপির বিরুদ্ধে বিরোধী জোটের কথা মাথায় রেখেই কি এই মুহূর্তে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আক্রমণের লক্ষ্য শুধু বিজেপি? যদিও এই সব তত্ত্বকে উড়িয়ে দিয়ে দলের পক্ষ থেকে এই শীর্ষ নেতা জানান, ‘‘এই ব্যাখ্যা সঠিক নয়। বিজেপির প্রভাব কোচবিহার তথা উত্তরবঙ্গে বেশি। সেখানে বাম বা কংগ্রেসের কোনও শক্তি নেই। তাই বাম-কংগ্রেস নিয়ে ওখানে বলা শব্দের অপচয় ছাড়া কিছু নয়।’’

গতকালের সভায় নিজের বক্তৃতা শুরু করেই বিএসএফের গুলিতে নিহতদের পরিজনদের মঞ্চে ডেকে নেন তৃণমূল নেত্রী। তিনি বলেন, ‘‘খবর আছে সাধারণ মানুষকে বর্ডারে গিয়ে ভয় দেখাবে বিএসএফ। বিএসএফ ভয় দেখালে ভয় পাবেন না। আমাদের এসে জানাবেন। কোচবিহারে বিএসএফ-এর গুলি করে মারা যেন অধিকারের মধ্যে পরে গেছে।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘বিএসএফ ভয় দেখালে ভয়ে ঘরে বসে না থেকে অভিযোগ জানাবেন। মনে রাখবেন, যে শহিদ পরিবার আপনাদের সামনে দাঁড়িয়ে আজ কাঁদছে, এর বদলা নিতে পঞ্চায়েতে তৃণমূলকে ভোট দিতে হবে। আপনার পরিবার যাতে কোনও দিন খালি হয়ে না যায় তার জন্য লক্ষ রাখতে হবে আপনাকেই।’’

সোমবারের সভায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অভিযোগ করেন ২০২৪- এর লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি রাজনৈতিক কাজে বিএসএফ-কে ব্যবহার করতে পারে। এই অভিযোগ করে নেত্রী বলেন, ‘‘প্রশাসনকে নিশ্চয় আমি নজর রাখতে বলব। ১৫ কিলোমিটার যেটা ছিল, গায়ের জোরে সেটা একতরফা ভাবে ৫০ কিলোমিটার করেছে। আমার কাছে খবর আছে, নির্বাচনের সময় বর্ডারে বর্ডারে গিয়ে আপনাদের বিএসএফ ভয় দেখাবে। বলবে তুলে নেব। ইডি লাগাব, সিবিআই লাগাব। আমি বলছি কিছু করতে পারবে না। রাজ্য সরকারের আওতায় পড়ে আইনত আইন-শৃঙ্খলা। কেন্দ্রীয় সরকারের আওতায় তা পড়েনা।’’ কোচবিহারের বিজেপি সাংসদকে নিশীথ প্রামাণিককেও গতকাল নিশানা করেন তৃণমূল সুপ্রিমো। তিনি বলেন, ‘‘একজন গুন্ডাকে মন্ত্রী করেছে বিজেপি। তাও আবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। আফ্রিকা ঘুরে এসে নিজের কনভয় নিয়ে এলাকায় এলাকায় ঘুরে বেড়াচ্ছে সেই মন্ত্রী। ভোটের সময় কি করা যায় এটা? তার বিরুদ্ধে আমরা অভিযোগ জানাব।’’

পাওনা টাকার প্রসঙ্গে মোদী সরকারকে আক্রমণ করতে গিয়ে সোমবারের সভায় মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের থেকে ১০০ দিনের কাজের টাকা আদায় করে ছাড়ব। বাংলার বাড়ির টাকাও বিজেপি সরকার বন্ধ করে দিয়েছে। বাংলার টাকা না দিলে আগামী দিনে রাজনৈতিক ভাবে বিজেপিকে পরাজিত করব। নতুন সরকার আসতে দিন। দিল্লি থেকে টাকা নিয়ে আসব। আমরা বাংলার বাড়ি করে দেব। একটু ধৈর্য ধরুন।’’এমনকি রাজ্য সরকারের লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্প নিয়ে বিজেপির আরও এক ধাপ এগিয়ে বড় ঘোষণা নিয়েও গতকাল তুমুল আক্রমণ শানান মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, “বিজেপি বলে বেড়াচ্ছে যে লক্ষ্মীর ভান্ডার ৩০০০ টাকা করে দেব। মিথ্যা কথা বলছে বিজেপি। তোমরা তো উজ্জ্বলা দেবে বলেছিলে? আগে সেটা ফিরিয়ে দাও। তোমাদের কাজ শুধু মিথ্যা কথা বলা।” মোদী সরকারকে নিশানা করে মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ‘‘বলছে ডাবল ইঞ্জিন সরকার কাজ করবে। আগেই ফুটো হয়ে গেছে একটা ইঞ্জিন। আমি বলছি, পঞ্চায়েত নির্বাচনে ভোট দিয়ে একটা আরও বিকল করে দিন। আর একটা ইঞ্জিন আগামী বছর লোকসভা নির্বাচনে ভোট দিয়ে বিকল করে দেবেন।’’

সোমবার রাজ্য সরকারের বিভিন্ন সামাজিক প্রকল্পের ‘সাফল্য’ তুলে ধরেন মুখমন্ত্রী। পাশাপাশি তিনি আশ্বাস দেন, এবার তিনি পঞ্চায়েত স্তরে দুর্নীতি রুখতেও সক্রিয় হবেন। তৃণমূল সুপ্রিমো বলেন, “পঞ্চায়েত এবার থেকে আমরা নিজেরা নিয়ন্ত্রণ করব। কাউকে চুরি করতে দেবেন না। যদি কেউ টাকা চায় তাঁর ছবি তুলে রাখবেন। সেই ছবি আমাকে পাঠিয়ে দেবেন।” নেত্রীর বক্তব্য, ‘‘পঞ্চায়েত ভোটের আগে গোটা রাজ্যে ঘুরেছে অভিষেক, ওর টিম। এই কাজে যুব সংগঠনও ছিল। প্রার্থী বাছাই ৯৯ শতাংশ আসনে হয়তো ঠিক হয়েছে। ১ শতাংশ কেউ কেউ আছে, যারা চুরিও করবে আবার টিকিটও চাইবে। আমরা দিচ্ছি না সেটা।”

আজ তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উত্তরবঙ্গের আর এক জেলা জলপাইগুড়িতে নির্বাচনী জনসভা করবেন। কোচবিহার ও জলপাইগুড়ি, দুই জেলাতেই বিজেপির দখলে রয়েছে লোকসভা আসন। ২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনে কোচবিহারের ৯টি বিধানসভা আসনের মধ্যে ৭টি আসনে জিতেছিল বিজেপি। ২টি আসনে জয়লাভ কিরেছিল তৃণমূল। পরবর্তীতে সাংসদ নিশীথ বিধায়ক পদ ছেড়ে দেওয়ার জন্য দিনহাটা কেন্দ্রে উপনির্বাচন হয়। সেই নির্বাচনে তৃণমূল বিজেপিকে পরাজিত করেছিল। মোট ৭টি বিধানসভা আসন রয়েছে জলপাইগুড়িতে। তার মধ্যে ৪টি বিজেপির দখলে ও ৩টি তৃণমূলের দখলে রয়েছে।

বিজেপির দখলে থাকা কোচবিহার এবং জলপাইগুড়ি লোকসভাকেই এবারের পঞ্চায়েত ভোটের প্রচারের ক্ষেত্রেও বেছে নিয়েছেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

এইরকম পঞ্চায়েত নির্বাচন বিষয়ক আরও প্রতিবেদন পেতে ওয়ান ওয়ার্ল্ড নিউজ বাংলার সাথে যুক্ত থাকুন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button