Panchayat Elections 2023: আরও ৮০০ কোম্পানি বাহিনী চেয়ে কেন্দ্রকে চিঠি কমিশনের, ২০১৩-এর থেকেও বেশী সংখ্যক বাহিনী এবারের পঞ্চায়েত ভোটে
Panchayat Elections 2023: শীর্ষ আদালতের নির্দেশে মোট ৮২২ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী চেয়ে কেন্দ্রকে চিঠি কমিশনের
হাইলাইটস:
• মাত্র ২২ কোম্পানি বাহিনী ভোটের জন্য পর্যাপ্ত নয় জানালো আদালত
• কেন্দ্রের কাছে আরও ৮০০ কোম্পানি কেন্দীয় বাহিনীর আবেদন করলো রাজ্য নির্বাচন কমিশন
• ২০১৩ এর থেকেও বেশী বাহিনী এবারের পঞ্চায়েত ভোটে
Panchayat Elections 2023: পঞ্চায়েত ভোটের জন্য কেন্দ্রের কাছ থেকে রাজ্য নির্বাচন কমিশন ৮০০ কোম্পানি বাহিনী চাইল। ২২ কোম্পানি থেকে একধাক্কায় বাড়িয়ে ৮২২ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী চাইল রাজ্য নির্বাচন কমিশন। বুধবার পঞ্চায়েত ভোট মামলায় কমিশনকে একটি নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা শীর্ষ আদালত। সেই নির্দেশানুসারে ২০১৩ সালের পঞ্চায়েত ভোটে রাজ্যে যে পরিমাণ কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছিল, কম পক্ষে সেই পরিমান বা তার বেশি কেন্দ্রীয় বাহিনী এ বারের ভোটেও মোতায়েন করতে বলে হাইকোর্ট। পাশাপাশি ২৪ ঘন্টার মধ্যে কেন্দ্রকে আবেদন করার নির্দেশ দিয়েছিলো আদালত। প্রথমে হাইকোর্টের নির্দেশে ২২ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করার জন্য কেন্দ্রের কাছে আবেদন জানিয়েছিল নির্বাচন কমিশন। এরপর বৃহস্পতিবার কেন্দ্রের কাছে আবারও পঞ্চায়েত নির্বাচনের জন্য আরও ৮০০ কোম্পানি বাহিনীর আবেদন করেছে কমিশন। কিন্তু রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী এরপরও দাবি করেছেন নির্বাচন কমিশন কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশ মানেনি। তিনি আরও বলেন, এখনও অনেক গলদ আছে। সেই গলদ কোথায় আছে তা দেখানোর জন্য তাঁরা আবারও আদালত মুখী হবেন।
নির্বাচন কমিশন তথা কমিশনারকে আদালতে তীব্র ভর্ৎসনার মুখে পড়তে হয় পঞ্চায়েত ভোটের জন্য কেন্দ্রের কাছে মাত্র ২২ কোম্পানি বাহিনী চেয়ে আবেদন করার কারণে। হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানম মামলা চলাকালীন বলেছিলেন, ‘চাপ রাখতে না পারলে ছেড়ে দিন।’ পাশাপাশি প্রধান বিচারপতি এও উল্লেখ করেন, ২২টি জেলার ভোটের জন্য যে ২২ কোম্পানি বা ১৭০০ জওয়ান পর্যাপ্ত নয়। এই সামান্য সংখ্যক কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে একদিনে পঞ্চায়েত নির্বাচন সামলানো কঠিন হয়ে যাবে বলেও মন্তব্য করেছিলেন বিচারপতি। অধিক বাহিনী চাইতে নির্বাচন কমিশনের কাছে ২৪ ঘণ্টা সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছিল হাইকোর্টের তরফে। সেই নির্দিষ্ট সময় শেষের আগেই আরও ৮০০ কোম্পানি বাহিনী চাইলো কমিশন। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, আদালত নির্দেশ দেওয়ার পর অধিক বাহিনী চাওয়া ছাড়া রাজ্য নির্বাচন কমিশনের কাছে আর কোনও পথ ছিল না।
প্রথম থেকেই নবনির্বাচিত নির্বাচন কমিশনার রাজীব সিনহা রাজ্য পুলিশের ওপর আস্থা রাখার কথা বলেছিলেন। পরে বিরোধীরা মামলা করলে কলকাতা হাইকোর্ট কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের নির্দেশ দেয়। সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে যায় কমিশন। সুপ্রিম কোর্টও হাইকোর্টের নির্দেশই বহাল থাকে। এরপর নির্বাচন কমিশন গত মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কাছে ২২ কোম্পানি বাহিনী চেয়ে আবেদন জানায়। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক থেকে জানিয়েও দেওয়া হয় বাহিনী পাঠানোর কথা। এরপরই বিরোধীদের প্রশ্ন ওঠে মাত্র ২২ কোম্পানি বাহিনী দিয়ে সুষ্ঠ নির্বাচন সম্ভব কি না।
প্রসঙ্গত, গত ১৫ই জুন কলকাতা হাইকোর্ট কমিশনকে নির্দেশ দিয়েছিল, কেন্দ্রীয় বাহিনীর নজরদারিতেই গোটা রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোট করাতে হবে। আদালত আরও জানায় ওই নির্দেশের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে বাহিনী চাইতে হবে। এরপর মঙ্গলবার নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, কেন্দ্রের কাছে রাজ্যের ২২ টি জেলার জন্য ২২ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনীর অনুরোধ করেছে তারা। কিন্তু বিরোধীরা বলে, জেলাপিছু এক কোম্পানি করে কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকা আর না থাকা সমান। বিরোধীদের সেই দাবিকে প্রাধান্য দেন প্রধান বিচারপতি। বিচারপতি তাঁর পর্যবেক্ষণে জানান, ‘‘২০১৩ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনের মতো নিরাপত্তা এইবারের নির্বাচনেও দেওয়া প্রয়োজন। আমরা জেনে বিস্মিত হয়েছি যে, সেই সময় কমিশন স্বয়ং কেন্দ্রীয় বাহিনীর জন্য রাজ্যের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছিল। আমরা আশা করব, নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য এবারও স্বাধীন এবং সক্রিয় ভূমিকা পালন করবে কমিশন।’’
সম্প্রতিই পঞ্চায়েত ভোট প্রসঙ্গে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, এ বারে অনেক বেশি শান্তিপূর্ণ পঞ্চায়েত ভোট। গত বেশ কয়েক বছরের পঞ্চায়েত ভোটের পরিসংখ্যান প্রকাশ করে তৃণমূল সুপ্রিমো মন্তব্য করেন, রাজ্যে এর আগে এত শান্তিপূর্ণ ভোট হয়নি। এবারের ভোট ঘিরে অশান্তি এবং ভোটের জেরে মৃত্যুর সংখ্যা নগণ্য গত তিন বারের ভোটের তুলনায়।
এইরকম রাজনৈতিক বিষয়ক প্রতিবেদন পেতে ওয়ান ওয়ার্ল্ড নিউজ বাংলার সাথে যুক্ত থাকুন।