আপনি কী নতুন মা হয়েছেন? আপনার কী ব্রেস্ট মিল্ক ঠিক করে তৈরি হচ্ছে না? তাহলের এই ৫টি খাবার খাদ্যতালিকায় যুক্ত করুন
একটি শিশুর জন্য প্রথম ৬ মাস ব্রেস্ট মিল্ক খুবই প্রয়োজনীয়
হাইলাইটস:
•সদ্যজাত শিশুর জন্য ব্রেস্ট মিল্ক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ
•পুষ্টিবিদের পরামর্শ নেওয়া জরুরি
•ব্রেস্ট মিল্ক উৎপাদনে সাহায্যকারী খাবারগুলি দেখে নিন
জন্মের পর থেকে মোটামুটি ৬ মাস বয়স পর্যন্ত সদ্যজাত শিশুর একমাত্র খাদ্য হল ব্রেস্ট মিল্ক। কিন্তু সব মায়ের ক্ষেত্রে সমানভাবে ব্রেস্ট মিল্ক উৎপাদন হয় না। অনেক মায়ের স্তনে বাচ্চার জন্য দুধের পরিমাণ কম থাকে অর্থাৎ বাচ্চা যত চেষ্টাই করুক না কেন বুকের দুধ তার মুখে কম যায়। দুধ না পেলে বাচ্চার ক্ষুধা মেটে না, চিৎকার ও কান্নাকাটি করে। এমন অবস্থায় শিশুটির জন্য বিকল্প খুঁজে বের করাও কঠিন। কারণ ছয় মাসের আগে তাকে অন্য কোনো খাবার দেওয়া যায় না। নতুন মায়েদের অভিজ্ঞতা অনেক কম তাই তারা প্রথমেই ভয় পেয়ে যান।
পরিচর্যার সময়, মায়েদের খাদ্য সম্পর্কিত অনেক যত্ন নেওয়া উচিত কারণ এটি কেবলমাত্র স্তনের দুধের পরিমাণ এবং গুণমানকে প্রভাবিত করে না, মায়ের প্রসব পরবর্তী আরোগ্যলাভকেও প্রভাবিত করে। খাদ্যতালিকা তৈরির সময় একজন পুষ্টিবিদের পরামর্শ নেওয়া জরুরি, যাতে তিনি বুকের দুধ বাড়াতে পারে এমন খাদ্যের সাথে অন্যান্য প্রয়োজনীয় পুষ্টি সংক্রান্ত বিষয়গুলির সামঞ্জস্য রেখে তালিকা প্রস্তুত করতে পারেন। কিছু খাবার রয়েছে যেগুলি নতুন মায়েদের খাবারের তালিকায় যোগ করলে ব্রেস্ট মিল্কের উৎপাদন অনেক বাড়ে। চলুন তবে জেনে নেওয়া যাক সেই খাবারগুলি সম্পর্কে বিস্তারিত-
ওটমিল:
এটি দেহে শক্তি যোগায় এবং প্রসব পরবর্তী ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের জন্য দুর্দান্ত একটি উৎস। ওটসকে বলা হয় সুপারফুড। ওটসের মধ্যে থাকে ক্যালসিয়াম, ফাইবার, আয়রন এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান। তাই এই খাবার খেলে তা ব্রেস্ট মিল্কের উৎপাদন বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। সেইসঙ্গে এটি বজায় রাখে হরমোনের ভারসাম্যও। পুষ্টিবিদরা স্তন্যদুগ্ধ বৃদ্ধি করতে যে কোনও খাদ্যতালিকাতেই ওটস যোগ করার সুপারিশ করে থাকেন। ওটসের মতো যেকোনো দানাশস্য খেতে পারেন। তাতেও উপকার পাবেন।
মেথি:
সারা পৃথিবীতে স্তন্যদুগ্ধ বৃদ্ধির জন্য বহু প্রজন্ম ধরে মেথি ব্যবহার করা হয়েছে। মেথির নানা গুণ সম্পর্কে আমরা সবাই জানি। এটি কিন্তু প্রসূতি মায়ের ব্রেস্ট মিল্কের উৎপাদন বাড়াতেও সাহায্য করে। সেজন্য নতুন মায়েরা খেতে পারেন মেথি দানা কিংবা মেথি শাক। মেথির মধ্যে থাকে এস্ট্রোজেন নামক উপকারী উপাদান, যা ব্রেস্ট মিল্কের উৎপাদন বাড়াতে সাহায্য করে। আবার এটি ওমেগা -৩ ফ্যাট সমৃদ্ধ যা আপনার শিশুর মস্তিষ্কের বিকাশের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ। বিটা–ক্যারোটিন, ভিটামিন B, ক্যালসিয়াম এবং লৌহ সমৃদ্ধ খাদ্য হিসাবে আপনি মেথি পাতাও ব্যবহার করতে পারেন। চা বানানোর সময়ও মেথি বীজ ব্যবহার করা যেতে পারে বা সবজির তরকারীতে ব্যবহার করা যেতে পারে।
গাজর:
গাজর স্তন্যদুগ্ধ বৃদ্ধিতে একটি বড়ো ভূমিকা পালন করে এবং এটি ভিটামিন A সমৃদ্ধ যা বুকের দুধের মান উন্নত করে। স্যালাডের আকারে কাঁচা গাজর খান অথবা সকালে এক কাপ রস করে ব্রেকফাস্টের সাথে পান করুন। গাজর বিশ্বের সর্বত্রই পাওয়া যায় এবং এটি বুকের দুধ বৃদ্ধি করার জন্য সেরা খাবারগুলির মধ্যে একটি।
রসুন:
রসুনকে বলা হয় প্রাকৃতিক অ্যান্টিবায়োটিক। এটি আমাদের শরীরের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয় ভেষজ উপাদান। বুকের দুধ খাওয়াচ্ছেন এমন মায়েদের জন্য রসুন বেশ উপকারী। এটি দুধের পরিমাণ বৃদ্ধি করার পাশাপাশি মাতৃত্বকালীন সংক্রমণের হাত থেকেও রক্ষা করে। ফলে শিশুর রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা দ্রুত গতিতে বাড়ে। রসুন রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা বৃদ্ধির পাশাপাশি হৃদরোগ প্রতিরোধ এবং প্রতিষেধক বৈশিষ্ট্য থাকার জন্যও সুপরিচিত। রসুন মূলত বুকের দুধের স্বাদ এবং গন্ধকে প্রভাবিত করতে পারে তাই এটি সীমিত ও সতর্কভাবে ব্যবহার করতে হবে।
তিল বীজ:
ব্রেস্ট মিল্ক বাড়ানোর জন্য বহু লোক তিলের বীজ বা তিল ব্যবহারের পরামর্শ দিয়ে থাকেন। তাই নতুন মায়েদের তিলের নাড়ু, তিলের ভর্তা এসব খেতে দেওয়া হয়। এর পেছনে কারণও রয়েছে। নতুন মায়েদের জন্য তিল অত্যন্ত উপকারী খাবার। এই শস্যে থাকে ওমেগা-৬ ফ্যাটি অ্যাসিড, ইস্ট্রোজেনের মতো উপাদান রয়েছে। এগুলি ব্রেস্ট মিল্কের উৎপাদন বাড়াতে সাহায্য করে। আবার এই বীজ ক্যালসিয়ামের একটি অসাধারণ দুগ্ধ বর্জিত উৎস যা আপনার শিশুর বৃদ্ধির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এমনকি প্রসবের পরে, মায়ের কর্মক্ষমতা ফিরে পেতে এবং স্বাস্থ্য পুনরুদ্ধারের জন্য ক্যালসিয়াম বিশেষ প্রয়োজনীয়। আপনি আপনার দৈনন্দিন রান্নার মধ্যে তিল ব্যবহার করতে পারেন বা এটি দিয়ে মিষ্টি খাবার তৈরি করতে পারেন।
এইরকম স্বাস্থ্য এবং জীবনধারা সম্পর্কিত সবরকম আপডেট পেতে ওয়ান ওয়ার্ল্ড নিউজ বাংলার সাথে যুক্ত থাকুন।