lifestyle

আপনি কী “বিউটি স্লিপ” সম্বন্ধে ওয়াকিবহাল? যদি আপনি এটির বিষয়ে কিছুই না জেনে থাকেন, তাহলে আজকের এই প্রতিবেদনটি পড়ে দেখুন উপকার পাবেন

ঘুম শরীর ও মন উভয়ের জন্যই খুবই গুরুত্বপূর্ণ

শরীর ও মনকে সুস্থ রাখতে আমাদের প্রত্যেকেরই পর্যাপ্ত পরিমানে ঘুমের প্রয়োজন। আবার স্বাস্থ্যের মতো সৌন্দর্য বাড়াতেও ঘুম জরুরি। কারণ আপনি যখন ভালো এবং গভীর ঘুম ঘুমোন, তখন ব্রেন রিলাক্স হয় এবং শরীর নিজেকে মেরামত করে। এই মেরামতের মধ্যে ত্বক মেরামতও অন্তর্ভুক্ত। রাতে ঘুম না হলে পরদিন সকালে ক্লান্তি থেকে যায়। কাজ করার শক্তি চলে যায়। সারাদিন ঘুম পায়। মনে হয়, দিনের মাঝে একটু ঘুমিয়ে নিলে শরীর চাঙ্গা হয়ে যাবে। দিনের পর দিন যদি রাতে এভাবেই ঘুম না হয়, তাহলে মুশকিলের। ঘুমের অভাব হলে শরীরের হরমোনের তারতম্য ঘটে। এতে স্ট্রেস হরমোন কর্টিসল ক্ষরণের পরিমাণ বেড়ে যায়। এতে যেমন মানসিক চাপ বাড়ে তেমনই ত্বকের উপরও নানা সমস্যা দেখা দেয়। স্বাস্থ্যোজ্জ্বল ত্বক পেতে গেলেও ঘুমের প্রয়োজন। গবেষণায় দেখা গিয়েছে, সাত থেকে আট ঘণ্টা ঘুম না হলে তা শরীরের উপর মারাত্মক প্রভাব ফেলে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয় আমাদের ইমিউনিটি সিস্টেম। ফলে সহজেই রোগে পড়ে যেতে পারেন আপনি। ত্বকও কিন্তু আমাদের শরীরেরই একটা অংশ। সুতরাং রোগ-প্রতিরোধের ক্ষমতা কমে গেলে তার প্রভাব তো ত্বকেও পড়বে। এক্ষেত্রে চর্মরোগের সমস্যা বেশি দেখা যেতে পারে। এগজ়িমার মতো চর্মরোগের পিছনে অনেক সময় ঘুমের অভাবও দায়ী হতে পারে। ঘুম আমাদের শরীরের ক্ষত নির্মূল করতে সাহায্য করে। পর্যাপ্ত পরিমানে ঘুম আপনার সৌন্দর্য ও দীপ্তি বাড়ায় এবং একে বলে “বিউটি স্লিপ”।

বিউটি স্লিপ কী?

সময়মতো ঘুমনো এবং প্রতিদিন সময়মতো ঘুম থেকে উঠার সাথে সাথে ৭-৮ ঘন্টা ঘুমনো উচিত। শুধু ঘণ্টা পূর্ণ হলেই চলবে না, ঘুমও ভালো ও গভীর হওয়া উচিত। এই ধরনের ঘুমের পর যখন আপনি জেগে ওঠেন, তখন আপনি মানসিক এবং শারীরিকভাবে সতেজ বোধ করেন। বিউটি স্লিপের মতোই বিউটি ন্যাপও আছে। আপনি যদি দিনের কাজের মাঝখানে সময় বের করেন মাত্র ১৫ থেকে ২০ মিনিটের জন্য, তাহলে সেই সময়টুকু আপনি চোখ বন্ধ করে শুয়ে থাকুন বা হালকা ঘুমিয়ে নিন। এটি আপনার ত্বকের জন্য বিউটি স্লিপের মতোই কাজ করে। তবে মনে রাখবেন দিনে ২৫-৩০ মিনিটের বেশি বিউটি ন্যাপ নিলে দেহের ওজন বাড়তে পারে। তাই সৌন্দর্য ধরে রাখার জন্য মাত্র ১৫ থেকে ২০ মিনিটের বিউটি ন্যাপই যথেষ্ট।

বিউটি স্লিপের উপকারিতা:

আমাদের শরীরের কোষ মেরামত শুধুমাত্র ঘুমনোর সময় ঘটে। এর মধ্যে ত্বকের কোষও রয়েছে। ঘুম ভালো ও গভীর হলে ত্বকের কোষ মেরামতও ভালো হয়। এভাবে ত্বকের গ্লো বাড়ে। মস্তিষ্কে সতেজতা থাকলে মেজাজ ভালো থাকে এবং এতে ডোপামিন ও সেরোটোনিনের মতো হ্যাপি হরমোনের ক্ষরণ বেড়ে যায়। এগুলি ত্বককে সুস্থ ও উজ্জ্বল রাখতে যেমন সাহায্য করে, তেমনই মুখের আকর্ষণ বাড়ায়। ভালো এবং পর্যাপ্ত ঘুম শরীরে ফোলাভাবের সমস্যা দূর করে। অতএব পাফিনেস থেকেই মুক্তি মেলে। ত্বকের বলিরেখা এবং ফ্রিকেলসের সমস্যা থেকে দূরে থাকতে ঘুমের মান বজায় রাখা খুবই জরুরি।

ঘুমোনোর সময় কী কী কাজ করবেন না?

•অনেকেই আছেন যারা বালিশ নিয়ে ঘুমোতে ভালোবাসেন। বালিশে পাশ ফিরে ঘুমালে মুখে চাপ পড়ে, যার কারণে ত্বকে বলিরেখা হয়। আসলে ঘুমানোর সময় বালিশে আমাদের মুখের ত্বকে চাপ পড়ে যায়, এতে ত্বক কুঁচকে যায়। শুধু তাই নয় এটি ত্বকের কোলাজেনকেও প্রভাবিত করে। চিত হয়ে অর্থাৎ স্বাভাবিক অবস্থায় ঘুমানোর চেষ্টা করুন। এ সময় বালিশ ব্যবহার করবেন না, যা ত্বকের জন্য ভালো।

•বেশির ভাগ মানুষেরই রাতে ঘুমানোর সময় ফোন ব্যবহার করার অভ্যাস রয়েছে। আপনিও যদি এটি করেন, তাহলে আপনার সৌন্দর্যে ব্যাঘাত ঘটতে পারে। বিশেষজ্ঞদের মতে, আপনার ফোনের স্ক্রিনের আলো হরমোনগুলিকে উদ্দীপিত করে। যা ঘুমকে বাধা দেয়। ঘরের আলো বন্ধ করার পর ফোনটিকে আপনার থেকে দূরে রাখার চেষ্টা করুন।

•ব্রেকআউট, পিম্পলস ইত্যাদি সমস্যা এড়াতে মেকআপ তুলে ঘুমানোর প্রয়োজন। আসলে মেকআপ আপনার ছিদ্রগুলিকে ব্লক করে দেয়, যার কারণে ত্বক শ্বাস নিতে পারে না। সর্বদা এই রুটিনটি অনুসরণ করুন। কারণ একটি দিনের ভুলও ত্বককে খারাপভাবে প্রভাবিত করতে পারে

•মাঝে মাঝে আমাদের ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে, কারণ মাঝরাতে হঠাৎই জল তেষ্টা পায়। আসলে ওই সময় ত্বক জলশূন্য হয়ে পড়ে, তাই ঘুমানোর আগে জল খেতে ভুলবেন না। ঘুমানোর আগে চা বা কফি জাতীয় জিনিস একেবারেই খাবেন না। এতে ঘুম পুরোপুরি দূরে চলে যাবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button