পশ্চিমবঙ্গের উচ্চশিক্ষায় উন্নয়ন সংক্রান্ত অবদানের জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ডি’লিট সম্মানে ভূষিত করতে চলেছে সেন্ট জেভিয়ার্স বিশ্ববিদ্যালয়
এর আগে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে মুখ্যমন্ত্রীকে দেওয়া হয়েছিল ডি’লিট সম্মান
৬ই ফেব্রুয়ারি অর্থাৎ আজ সেন্ট জেভিয়ার্স বিশ্ববিদ্যালয় তরফে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ডি’লিট সম্মানে ভূষিত করা হবে। মুখ্যমন্ত্রীকে কয়েক মাস আগেই চিঠি দিয়ে ডি’লিট দেওয়ার প্রস্তাবটি পাঠিয়েছিল সেন্ট জেভিয়ার্স বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। সেখানেই সাম্মানিক ডি’লিট দেওয়ার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এই চিঠি হাতে পাওয়ার পর সাম্মানিক ডি’লিট নিতে সম্মতি জানিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আজ আনুষ্ঠানিকভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের এই সম্মান গ্রহণ করবেন মুখ্যমন্ত্রী। বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতে ডি’লিট তুলে দেবেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস।
ইতিমধ্যেই এই সম্মান জানানোর কারণ হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে একটি বিবৃতি দেওয়া হয়েছে। বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়েছে “পশ্চিমবঙ্গের উচ্চশিক্ষায় উন্নয়ন সংক্রান্ত অবদানের জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ডি’লিট সম্মানে ভূষিত করা হবে।” সেন্ট জেভিয়ার্স বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠান হবে রাজারহাট ক্যাম্পাসে৷ সেখানেই স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর মোট ৭৭০ জন ছাত্রছাত্রীর হাতে সার্টিফিকেট তুলে দেওয়া হবে। এবার একমাত্র একজনকেই ডি’লিট সম্মানে ভূষিত করা হবে৷ তিনি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। উচ্চশিক্ষায় অবদানের জন্যই বিশেষ সম্মান পেতে চলেছেন তিনি৷ মঞ্চে উপস্থিত থাকার পাশাপাশি সেন্ট জেভিয়ার্স বিশ্ববিদ্যালয়ের এই অনুষ্ঠান নিয়ে বিস্তারিত বক্তব্য রাখবেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস।
প্রসঙ্গত, এই বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তোলার জন্য মুখ্যমন্ত্রীর অনেক অবদান আছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যে ক্ষমতায় আসার পরই সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয় করে তোলার প্রস্তাব দিয়েছিলেন। সেন্ট জেভিয়ার্স বিশ্ববিদ্যালয় উদ্বোধন অনুষ্ঠান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরেই হয়েছিল। তবে এই প্রথম কোনও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে ডি’লিট সম্মান দেওয়া হবে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। বর্তমান রাজ্য সরকারের আমলেই রাজারহাটে সেন্ট জেভিয়ার্সের দ্বিতীয় ক্যাম্পাস তৈরি হয়৷ এই বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অতীতেও হাজির থেকেছেন মুখ্যমন্ত্রী৷ বর্তমান রাজ্য সরকারের আমলে সরকারি, বেসরকারি একাধিক বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি হয়েছে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে৷
২০১৮ সালে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ডি’লিট সম্মানে ভূষিত করেছিল কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়। তৎকালীন রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠীর হাত থেকে ডি’লিট সম্মান নিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। যদিও সেই সম্মান নিয়েও বিতর্ক তৈরি হয়েছিল। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডি’লিট ছাড়াও আরও একটি কলেজের পক্ষ থেকে সাম্মানিক ডক্টরেট পেয়েছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। ভুবনেশ্বরের ‘কলিঙ্গ ইনস্টিটিউট অব ইন্ডাস্ট্রিয়াল টেকনোলজি’ (KIIT) মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সাম্মানিক ডক্টরেট দেয়। এবার দ্বিতীয় সাম্মানিক ডি’লিট পেতে চলেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আর তাঁকে এই সম্মান দিচ্ছে সেন্ট জেভিয়ার্স বিশ্ববিদ্যালয়। ইতিমধ্যেই মুখ্যমন্ত্রী নানা পুরস্কার ও সম্মান পেয়েছেন। এমনকী বিদেশ থেকেও একাধিকবার ডাক পেয়েছেন তিনি। সূত্রের খবর, সেন্ট জেভিয়ার্সে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের নবনির্বিত প্রশাসনিক ব্লকটির উদ্বোধন করবেন। এই বিল্ডিং এই উপাচার্য, রেজিস্ট্রার এবং কন্ট্রোলারের অফিস হতে চলেছে।
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় যখন মুখ্যমন্ত্রীকে ডি’লিট দিয়েছিল তখন তা নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছিল। এমনকী কলকাতা হাইকোর্টে মামলাও হয়েছিল। যদিও তা তেমন কোনও প্রভাব ফেলেনি। সেই সময় সমালোচকদের জবাব দিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বই বিক্রি হলেও কেন তাঁকে সমালোচনার মুখে পড়তে হয় সেই নিয়েও প্রশ্ন তুলেছিলেন তিনি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আরও জানিয়েছিলেন, পুরস্কার স্পৃহা তাঁর নেই। তিনি কাজের মধ্যেও লেখালিখি করেন। মুখ্যমন্ত্রীর পাশে দাঁড়িয়েছিলেন শুভাপ্রসন্ন থেকে শুরু করে একাধিক বুদ্ধিজীবী। উল্লেখযোগ্যভাবে, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ব্যস্ততার মাঝেই কবিতা লেখেন। তাঁর একাধিক বই রয়েছে এবং কলকাতা আন্তর্জাতিক বইমেলার অন্যতম আকর্ষণ তাঁর লেখা বই।