History of Bodhon: বোধন ছাড়া দুর্গাপুজো শুরু হয় না, কিন্তু কেন? জানেন কী এই রীতি আসলে কী এবং কেন হয়?
আচ্ছা, কখনও কী ভেবে দেখেছেন, কেন দেবীর এই বোধন হয়? আর এর তাৎপর্য কী? পুজো শুরুর আগে কেনই বা বোধন অনুষ্ঠান করা হয়?
History of Bodhon: দুর্গাপুজোর সাথে ওতপ্রোত-ভাবে জড়িয়ে বোধন, তবে কী এই প্রথা? জানেন কেন হয়?
হাইলাইটস:
- আপনি কী জানেন কেন দেবীর বোধন হয়?
- দুর্গাপুজো শুরুর আগেই বোধন কেন হয়?
- পুজো শুরুর আগে বোধন অনুষ্ঠানের তাৎপর্য কী?
History of Bodhon: “বিল্ববৃক্ষমূলে দেব্যাঃ বোধনম্”
ষষ্ঠীর সন্ধ্যা। মস্ত দুই’খানা প্রদীপের আলোয় আলো হয়ে আছে আর মণ্ডপের সামনে পোঁতা বেল গাছটির শাখাপ্রশাখা। বেলতলায় এয়ো নারীদের (সধবা) দল এসে জড়ো হয়েছেন। উলুধ্বনিতে মুখরিত প্রাঙ্গণ। উমা এসেছেন, বেল বরণের পরে হবে দেবীর বোধন।
We’re now on WhatsApp- Click to join
আচ্ছা, কখনও কী ভেবে দেখেছেন, কেন দেবীর এই বোধন হয়? আর এর তাৎপর্য কী? পুজো শুরুর আগে কেনই বা বোধন অনুষ্ঠান করা হয়?
বোধন
এই ‘বোধন’ কথাটি মূলত চলিত। সপ্তমী, অষ্টমী এবং নবমী ব্যাপী বিরাট কর্মকাণ্ডের সূচনাকারী পুজোই ‘বোধন’ হিসেবে পরিচিত। মূল শাস্ত্রীয় শব্দটি হচ্ছে ‘কল্পারম্ভ’।
কল্প– বৈদিক প্রথাগত, ধর্মগঠিত ক্রিয়া এবং উৎসব
আরম্ভ– সূত্রপাত
We’re now on Telegram- Click to join
এই বোধন বা কল্পারম্ভের উদ্দেশ্যে হচ্ছে দেবীর ঘুম ভাঙানো। শাস্ত্রবিদেরা বলছেন, বছর হচ্ছে দেবতাদের অহোরাত্র। অর্থাৎ ৬ মাস দিন, ৬ মাস রাত। মাঘ থেকে আষাঢ় মাস হল দিন এবং শ্রাবণ থেকে পৌষ হল রাত। রাত মানেই হচ্ছে ঘুমের সময়। তখন দেবীর ঘুম ভাঙানো নিষ্ঠাভরে হওয়াই উচিত। আচমকাই হাঁকডাক করে ঘুম ভাঙালে ক্রুদ্ধ হতে পারেন তিনি। তাই এই কল্পারম্ভ অথবা বোধন পুজোর অবতারণা। দীর্ঘকাল ধরে ধীরলয়ে মন্ত্রোচ্চারণ করে দেবীর একটু একটু করে ঘুম ভাঙাতে হবে।
View this post on Instagram
এই বোধনেরও তবে ভাগ আছে। বংশানুক্রমে, যেসব বাড়িগুলিতে দেবীর পুজো হয়ে আসছে, তারা দুই প্রকার বোধনের মূলত অনুসারী হন—
১. নবম্যাদি কল্পারম্ভ
২. প্রতিপদাদি কল্পারম্ভ
১. নবম্যাদি কল্পারম্ভ হল ১৩ দিনের পুজো।
কৃষ্ণপক্ষের নবমী থেকে শুক্লপক্ষের ষষ্ঠী অবধি ১৩ দিনের পূজার্চনা।
(সাজার আটচালার পুজো, সবিস্তারে এখানেই প্রকাশিত)
২. প্রতিপদাদি কল্পারম্ভ হল ৬দিনের পুজো।
মহালয়া অমাবস্যার পরদিন, অর্থাৎ প্রতিপদ থেকে ষষ্ঠীর দিন।
শাস্ত্রে আর একটি বোধনের বিধান দেওয়া রয়েছে বারোয়ারি মণ্ডপ বা সর্বজনীন পুজোর জন্য। কারণ, সেখানে ১৩ দিন বা ৬ দিন ধরে করা সম্ভব নয় দেবীর বোধন। তাই ষষ্ঠীর দিনেই বোধন সারা হয়। সেই বোধনেরই নাম হল ‘ষষ্ঠ্যাদি বোধন’।
Read More- এই নবরাত্রিতে মা দুর্গার নয়টি রূপের পুজো করা হয়, জানেন কি সেই নয়টি রূপের নাম কী?
আশেপাশে যত বারোয়ারি পুজোমণ্ডপ, সর্বত্র এই রীতিকে অনুসরণ করে দেবীর নিদ্রাভঙ্গ করা হয়। বলা হয়– হে ঊষা, হে মা, হে ধরিত্রী দুহিতা মাতা–তুমি উদয় হও, প্রকাশ হও–শস্য দাও, প্রাণ দাও, আলো দাও।–সহ বামেন ন উষো বি উচ্ছা দুহিতর্ দিবঃ/ সহ দ্যুম্নেন বৃহৎ বিভাবরী রায়াদেবী দাস্বতী।।”
ঋক বেদ, ১.৪৮.১
তথ্যসূত্র –
বিচিত্র দেবতা ( প্রবন্ধ সঙ্কলন) সঙ্কলক অজ্ঞাত, বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদ
পঞ্জিকা ও পুরোহিত দর্পণ
এইরকম আরও আধ্যাত্মিক প্রতিবেদন পেতে ওয়ান ওয়ার্ল্ড নিউজ বাংলার সাথে যুক্ত থাকুন।