Mamata At Oxford: অক্সফোর্ডে বক্তৃতার সময় পোস্টার নিয়ে বিক্ষোভ! একাই সবটা সামলালেন মুখ্যমন্ত্রী নিজেই
বিক্ষোভকারীদের দেখে মুখ্যমন্ত্রী শান্ত স্বভাবেই উত্তর দেন এবং বলেন, “আপনাদের সকলকে আমি খুব ভালোবাসি। আপনাদের পার্টিকে আপনারা আরও মজবুত করুন, যাতে আমার সাথে তাঁরা লড়তে পারে!” তিনি তাঁদের মনে করিয়ে দিয়েছেন যে, ভারতের প্রতিনিধি হিসেবেই বিলেতে তিনি এসেছেন, এবং অক্সফোর্ডে বক্তৃতা করছেন।
Mamata At Oxford: চরম বিক্ষোভের শিকার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, বিক্ষোভের নেপথ্যে কারা?
হাইলাইটস:
- মুখ্যমন্ত্রীর বিলেত সফরের মাঝেই ঘটে বিপত্তি
- কেলগ কলেজে বক্তৃতা দেওয়ার সময় চরম বিক্ষোভ
- শান্ত জবাবে পরিস্থিতি সামলালেন মুখ্যমন্ত্রী একাই
Mamata At Oxford: বিলেত সফরে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের কেলগ কলেজে বক্তৃতা দেওয়ার সময়ে চরম বিক্ষোভের কবলে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মাননীয়া মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার অর্থাৎ গতকাল ‘সামাজিক উন্নয়ন: নারী, শিশু এবং প্রান্তিক অংশের উন্নয়ন’ প্রসঙ্গে বক্তব্য রাখার সময়ে হঠাৎই একদল বিক্ষোভকারীরা স্লোগান দিতে শুরু করেন। ‘ভোট পরবর্তী সন্ত্রাস’ বিরোধী পোস্টার ছিল তাঁদের হাতে।
We’re now on WhatsApp- Click to join
বিক্ষোভকারীদের দেখে মুখ্যমন্ত্রী শান্ত স্বভাবেই উত্তর দেন এবং বলেন, “আপনাদের সকলকে আমি খুব ভালোবাসি। আপনাদের পার্টিকে আপনারা আরও মজবুত করুন, যাতে আমার সাথে তাঁরা লড়তে পারে!” তিনি তাঁদের মনে করিয়ে দিয়েছেন যে, ভারতের প্রতিনিধি হিসেবেই বিলেতে তিনি এসেছেন, এবং অক্সফোর্ডে বক্তৃতা করছেন। বিক্ষোভকারীদের উদ্দেশে তিনি বলেছেন, “অপমান আমাকে করুন, তবে দেশকে অপমান করবেন না।”
We’re now on Telegram- Click to join
যদিও বিক্ষোভকারীদের বেশিক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকা সম্ভব হয়ে ওঠেনি। উপস্থিত দর্শকদের পাল্টা প্রতিবাদের মুখে পড়ে হল ছেড়ে বেরিয়ে যেতে হয় তাঁদের। মুখ্যমন্ত্রী রসিকতা করে বলেছেন, “আমায় ওঁরা মিস করলেন।” এরপর জনপ্রিয় একটি ইংরেজি গান ‘ইফ ইউ মিস দ্য ট্রেন অ্যাম অন, ইউ উইল নো দ্যাট আই অ্যাম গন! ইউ ক্যান হিয়ার দ্য হুইসল ব্লো আ হানড্রেড মাইলস’ গেয়ে তিনি পরিস্থিতি সামাল দেন।
প্রতিবাদ এবং পাল্টা প্রতিক্রিয়া:
প্রথমে, সভাকক্ষের পিছন থেকে বিক্ষোভকারীরা বিক্ষোভ শুরু করলে তাতে বাধা দেন প্রয়াত মন্ত্রী সাধন পাণ্ডের কন্যা শ্রেয়া পাণ্ডে। তিনি বলেছেন, “এটি কোনও সাংবাদিক সম্মেলন না যে প্রশ্ন করবেন আপনারা।” শিল্পপতি সিকে ধানুকাও বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধেও প্রতিবাদ জানিয়েছেন। তবে মুখ্যমন্ত্রী একাই সকলকে শান্ত হতে বলেন, “গণতন্ত্রের বিরুদ্ধ-স্বর থাকবেই।”
বিক্ষোভে ওঠে আরজি কর প্রসঙ্গও। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রসঙ্গ তুললে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “ইউ আর মাই সুইট ব্রাদার, অ্যান্ড আই লভ ইউ অল।” তিনি বিক্ষোভকারীদের উদ্দেশে বলেছেন, “আপনাদের আমি মিষ্টি দেব। আপনাদের মতাদর্শকেও খাওয়াব চকোলেট।” এরপর আরও বলেছেন, “আমি অক্সফোর্ডে আসব বছরে দুবার করে। যতবার বলবেন, ততবারই আসব। ভয় দেখিয়ে আমাকে লাভ নেই।”
বিক্ষোভের নেপথ্যে ছিলেন কারা?
অনেকেই মনে করছেন যে, মুখ্যমন্ত্রীর বক্তৃতা ভণ্ডুল করতেই এই বিক্ষোভকারীরা এসেছিলেন। কেউ কেউ মনে করছেন তাঁদের বিজেপি সমর্থক, কারণ তাঁদের পোস্টারে ‘ভোট পরবর্তী সন্ত্রাস’ নিয়েই ছিল প্রতিবাদ। আবার, বিক্ষোভকারীদের মধ্যে মমতাকে কেউ কেউ যাদবপুরে যাওয়ারও আহ্বান জানাচ্ছিলেন, যা দেখে মনে করা হচ্ছে থাকতে পারে অতিবাম মনোভাবাপন্ন গোষ্ঠীও। তবে, সিপিএমের ছাত্র সংগঠন এসএফআই-এর ব্রিটেন শাখা এহেন স্বীকার করেছে যে, বিক্ষোভে অংশ নিয়েছিলেন তাদের সদস্যরা।
অক্সফোর্ড কর্তৃপক্ষের প্রতিক্রিয়া:
অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে জানানো হয়েছে, যাঁরা গোলমাল করেছিলেন, তাঁরা কেউই বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক বা পড়ুয়া নন, তাঁরা হলেন বহিরাগত। মুখ্যমন্ত্রীর কাছে দুঃখপ্রকাশও করেছে কর্তৃপক্ষ।
বক্তৃতা চালিয়ে যান মুখ্যমন্ত্রী:
বিক্ষোভের পরেও মুখ্যমন্ত্রী তাঁর বক্তৃতা চালিয়ে গিয়েছেন। কেলগ কলেজের প্রেসিডেন্ট জোনাথন মিকি এবং গবেষক লর্ড কর্ণ বিলিমোরিয়ার উপস্থিতিতে তিনি পশ্চিমবঙ্গের উন্নয়ন নিয়েও কথা বলেছেন। বিলিমোরিয়া তাঁকে প্রশ্ন করেছেন, “এত উদ্যম আপনি পান কোথা থেকে?” উত্তরে মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, “মা-মাটি-মানুষই হল আমার প্রেরণা। আর আমার পদবি হল ব্যানার্জি, তাই এত এনার্জি।”
এই উত্তরে হেসে ওঠে গোটা সভাকক্ষ। এমনকি যখনই রাজ্যের উন্নয়ন নিয়েও তাঁকে প্রশ্ন করা হয়েছে, তখনই রসিকতা করে তিনি বলেন ওঠেন, “এগুলো ওঁদের (বিক্ষোভকারীদের) দিয়ে দিন একটু।”
Read More- ‘ওরা বল করলে, আমি তো ছক্কা হাঁকাবোই…’ অক্সফোর্ডে যাওয়ার আগেই বিস্ফোরক মুখ্যমন্ত্রী
যদিও সভাকক্ষ ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন বিক্ষোভকারীরা, তবে মুখ্যমন্ত্রীর এরূপ সংযত আচরণে অনেকেই মনে করেছেন, তিনি পরিস্থিতি দক্ষতার সাথে সামাল দিয়েছেন। বক্তৃতা শেষে মুখ্যমন্ত্রীকে ঘিরে প্রবাসী বাঙালিদেরও বিশেষ উচ্ছ্বাসও দেখা যায়। লন্ডনে ফেরার পথে তাঁর বাসকে ঘিরে ছবি তুলতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন বহু মানুষ।
এইরকম আরও গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন পেতে ওয়ান ওয়ার্ল্ড নিউজ বাংলার সাথে যুক্ত থাকুন।