বয়স বছর ৪০ হলেও আপনাকে লাগবে ২০ বছর বয়সী তরুণীর মতো! ত্বকের যত্ন কী ভাবে নেবেন দেখে নিন

নানা কারণে অসময়েই ত্বকে বয়সের ছাপ পড়ে

হাইলাইটস:

•সময়ের আগেই মুখে বয়সের ছাপ কেন পড়ে?

•অ্যান্টি এজিং ট্রিটমেন্ট কী?

•দৈনন্দিন রুটিনের পরিবর্তনেই ফলাফল পাওয়া সম্ভব

বয়স ৪০ পেরোনোর পর ত্বকে পরিবর্তন আসতে থাকে তার সাথেই বাড়ে দায়িত্ববোধ। তখন সংসারের চাপে নিজের যত্ন নেওয়া হয় না। বয়স চল্লিশ হতে না হতেই ত্বকে বলিরেখা দেয়। সচেতন থেকে যত্ন নিলেই এড়ানো যায় বয়সের ছাপ। চিরসবুজ ত্বক, তরুণ মন নিয়ে ৪০ পেরোনো নারী থাকতে পারেন তারুণ্যে সমুজ্জ্বল। চলতি কথায় আছে, “কুড়িতেই বুড়ি”, তবে পুরোনো ভাবনার দিন এখন ফুরিয়ে গেছে। একটা সময় পর হয়তো আমরা আলাদাভাবে নিজের যত্ন নিতে ভুলে যাই। কাজের ফাঁকে আমরা বয়সের মাপকাঠি ভুলে থাকতে চাই। কিন্তু বয়সের সঙ্গে মানিয়ে নিয়েই নিজের যত্নের একটি ধারা নির্ধারণ করে নেওয়া প্রয়োজন। নইলে বয়সের ছাপ দেখা দিতে পারে আগেভাগেই। মনে হয় যেন, অনেক বেশি বয়স হয়ে গিয়েছে।

সময়ের আগেই মুখে বয়সের ছাপ কেন পড়ে?

•অস্বাস্থ্যকর জীবনশৈলীর জন্য সময়ের আগেই মুখে বয়সের ছাপ পড়তে পারে।

•সূর্যের ক্ষতিকারক রশ্মি ত্বকের ক্ষতি করে, ফলে সময়ের আগেই বুড়িয়ে যায়।

•কোনও অসুখও সময়ের আগেই মুখে বয়সের ছাপকারণ হতে পারে।

•সঠিক পরিমাণে ঘুম না হলেও অসময়ে ত্বক বুড়িয়ে যায়।

•অস্বাস্থ্যকর খাবার খেলেও ত্বকে বয়সের ছাপ পড়ে।

•অতিরিক্ত দুশ্চিন্তাও এর অন্যতম কারণ হয়ে উঠতে পারে।

চিকিৎসকদের মতে, অ্যান্টি এজিং ২০ বছর বয়স থেকেই শুরু করা যায়। কিন্তু এই অ্যান্টি এজিং ট্রিটমেন্ট আসলে কী? প্রকৃতির নিয়মে ধীরে ধীরে বয়সের ছাপ পড়তে শুরু করে। আপনি এটিকে আটকাতে পারবেন না। কিন্তু এই প্রক্রিয়াকে ধীর গতি করতে পারেন। সেই জন্য অনেক আগে থেকেই ত্বকের যত্ন নেওয়া শুরু করা দরকার। বিশেষ যত্নের পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা। যাতে সহজেই আপনার মুখে বলিরেখা না প্রকট হয়। এই প্রক্রিয়াকেই বলে অ্যান্টি এজিং ট্রিটমেন্ট।

ত্বকের বয়স ধরে রাখবেন কী ভাবে?

২০ বছর বয়সেও ত্বকের জেল্লা যেমন থাকে, ৪০ পার করেও কী জেল্লা একইরকম থাকবে? এই প্রশ্ন আমাদের অনেকের মনেই থাকে। বয়স ৪০ হয়েছে তো কী হয়েছে, আপনার ত্বক থাকবে একেবারে ২০ বছরের মতো। যদিও তার জন্য অতিরিক্ত সময়ের প্রয়োজন নেই বা সারাদিন রূপচর্চার দরকার পড়বে না। দৈনন্দিন রুটিনে সামান্য কয়েকটি পরিবর্তন আনলেই ৪০ বছরেও ত্বক থাকবে ২০ বছরের মতো।

দেখে নিন দৈনন্দিন রুটিনে কী কী আপনার করণীয়-

•যতটা সম্ভব শরীরের অতিরিক্ত ওজন ঝরিয়ে ফেলুন। অতিরিক্ত ওজন শুধু ত্বকে বয়সের ছাপ ফেলে না, উপরন্তু আপনার আত্মবিশ্বাস কমিয়ে দেয়। ব্যায়াম এবং খাবার নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে আপনি খুব সহজেই ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারবেন, তবে একেবারে খাওয়া বন্ধ করলে চলবে না। সেক্ষেত্রে হিতে বিপরীত হতে পারে। চেহারায় নেমে আসবে অকাল পার্থক্য। প্রতিদিনের খাদ্যতালিকা রাখতে হবে পুষ্টিগুণ সম্পন্ন খাবার।

•দৈনন্দিন খাদ্যতালিকায় রাখতে হবে প্রচুর শাকসবজি আর মৌসুমী ফল। বিশেষ করে পালং শাক, বেরি, ব্রকোলি রাখুন। কারণ এইগুলিতে থাকে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট। এছাড়া গ্রিন টি-তেও অ্যান্টি অক্সিড্যান্ট থাকে। ফাস্ট ফুড এবং জাঙ্ক ফুড খাবার যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলতে হবে। যদি মদ্যপান অথবা ধূমপানের অভ্যাস থাকে তবে চিরতরে বিদায় জানাতে হবে।

•ওজন কমাতে গিয়ে অনেকেই সকালের প্রাতঃরাশটি একেবারেই বাদ দিয়ে দেন। যা অত্যন্ত খারাপ একটি অভ্যাস। কারণ শরীরের মেটাবলিজম সিস্টেমে একবার গোলমাল হলে তখন আরো বেশি বেশি খিদে পায়। বারবার খেলে নিজের ক্ষতি নিজেই ডেকে আনবেন। তাই ব্রেকফাস্ট কখনোই বাদ দেবেন না।

•সূর্যের ক্ষতিকারক রশ্মি অসময়েই ত্বক বুড়িয়ে যাওয়ার অন্যতম কারণ। তাই রোদে বেরোনোর আগে অবশ্যই সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন। এই সানস্ক্রিন আপনার ত্বককে সূর্যরশ্মির ক্ষতি থেকে রক্ষা করবে। পাশাপাশি অক্সিডেটিভ স্ট্রেস থেকেও রক্ষা করে।

•অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট সমৃদ্ধ স্কিনকেয়ার প্রোডাক্টও ব্যবহার করা দরকার। নানা প্রাকৃতিক উপাদান অ্যান্টি-অক্সিড্যান্টে ভরপুর হয়। আপনি সেগুলিও ব্যবহার করতে পারেন। গোলাপ জলের মতো সহজলভ্য উপাদানও ত্বকের জন্য খুব উপকারী। এতে আপনার ত্বকের কোষের উপর অক্সিডেটিভ স্ট্রেস কম হয়। আবার স্কিনকেয়ার রুটিনে যোগ করুন রেটিনল। এই উপাদানের ব্যবহারে ত্বকে সহজেই বয়সের ছাপ পড়ে না।

•অতিরিক্ত দুশ্চিন্তাও কিন্তু অসময়েই ত্বক বুড়িয়ে যাওয়ার অন্যতম প্রধান কারণ হয়ে উঠতে পারে। তাই সেদিকেও নজর রাখার দায়িত্ব শুধুমাত্র আপনার। তাই অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা করবেন না। দুশ্চিন্তা কম করার জন্যে প্রয়োজনে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।

•ত্বক ভালো রাখতে যোগাসন ও মেডিটেশন করতে পারেন। এবং তার সাথেই পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমানো প্রয়োজন। তাই দিনে অন্তত ৭-৮ ঘণ্টা ঘুমান।

•অতিরিক্ত মিষ্টি জাতীয় খাবার বা কোমল পানীয় থেকে যতটা দূরে থাকবেন ততই ত্বকের জন্য ভালো। একেবারেই যে মিষ্টি খাওয়া চলবে না এমনটা নয়, তবে খেতে হবে পরিমিত পরিমাণে।

এইরকম বিউটি সম্পর্কিত প্রতিবেদন পেতে ওয়ান ওয়ার্ল্ড নিউজ বাংলার সাথে যুক্ত থাকুন। 

Sanjana Chakraborty

Professional Content Writer

Leave a Reply

Your email address will not be published.