আপনার পোষ্য প্রাণীটিই আপনার এবং আপনার সন্তানের সবচেয়ে প্ৰিয় বন্ধু

পোষ্য প্রাণীটির চেয়ে বড়ো সঙ্গী আপনার জীবনে আর কেউ নেই

শুধু মানুষ নয়, বন্ধুত্ব হতে পারে অন্য প্রাণীর সঙ্গেও। সুখ কিংবা দুঃখও যেন তাদের সঙ্গে ভাগাভাগি করা যায়। পোষ্য প্রাণীটির সঙ্গে আনমনে কথাও বলেন কিন্তু অনেকে। পাশ্চাত্যে তো বটেই, আমাদের দেশেও অনেকে প্রাণী পোষেন বাড়িতে। কুকুর, বিড়ালের মতো পোষ্য প্রাণী বাড়িতে আনার পর দায়িত্বের শেষ নয়, বরং বলা যায় শুরু। ওদের যত্ন নেওয়া, ওদের সময় দেওয়া এবং পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার দিকে খেয়াল রাখার কাজগুলি করতে হবে পরিবারের সবাইকে মিলে। বিশেষ করে ছোট বাচ্চাদের মনে পোষা কুকুর বা অন্য কোনও পোষ্যর প্রতি ভালোবাসা থাকে। অনেকের মনে প্রশ্ন জাগে যে, পোষ্য প্রাণী কী শিশুর মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর প্রভাব বিস্তার করে? বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন যে, পোষ্য প্রাণীটি নানা ভাবে আপনার সন্তানের মানসিক বিকাশে সাহায্য করতে পারে। একটি পোষ্য প্রাণীর সাথে সহজেই আপন হয়ে যেতে পারে একটি শিশু। দেখা গিয়েছে, পোষ্যরাও বাড়ির অন্য সদস্যদের তুলনায় শিশুর সঙ্গে বেশি তাড়াতাড়ি মিশে যেতে পারে। বাচ্চারা তাদের সাথেই খেলাধুলো করে। আপনার শিশুর মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর পোষ্য প্রাণী কেমন প্রভাব ফেলে তা জেনে নিন-

পোষ্য প্রাণীটি আপনার সন্তানকে ​​সহানুভূতির শেখাবে:

বাড়ির পোষ্য প্রাণীটি সম্পূর্ণভাবে আপনার ওপর নির্ভরশীল থাকে। সেই দেখে আপনার সন্তানও শিখবে সহানুভূতি প্রদর্শন করা। বাড়িতে পোষ্য প্রাণী আনলে বিশেষ করে শিশুরা তাদের যত্ন নেওয়ার বিষয়ে সচেতন ও সতর্ক থাকে। বিশেষত কুকুররা বিদ্যুৎ চমকানো, ঝড়, বৃষ্টিকে ইত্যাদিকে ভয় পায়। এইসব প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে শিশুদেরও ভয় থাকে। এইরকম পরিস্থিতিতে আপনার সন্তানের সাথে পোষ্য প্রাণীটিকে রাখুন, তবে তারা বুকে একটু বল পাবে।

পোষ্য প্রাণীটি নিঃশর্ত ভালোবাসা দেয়:

একটি পোষা প্রাণী নিঃশর্ত ভাবে ভালোবাসতে জানে। তারা প্রভু ভক্ত হয়। তারা তাদের প্রভুর সাথে কোনওদিন বেইমানি করে না। আপনার যদি একটি মাত্র সন্তান হয় তবে অবশ্যই বাড়িতে পোষা প্রাণী রাখতে পারেন। কারণ আপনার সন্তানও তার খেলার উপযুক্ত সঙ্গী পাবে। পোষ্য প্রাণীর মধ্যে বাচ্চারা একজন ভালো শ্রোতাও পেয়ে য়ায়। পোষ্য প্রাণীটি কথা বলতে না পারলেও শিশুকে স্বচ্ছন্দ ও সমর্থন প্রদান করতে সক্ষম। তারাও আবেগ বোঝে, অতএব সন্তান নিজের মনের কথা তাদের সামনে বললে, তা তারা মন দিলে শুনবে আর লেজ নাড়বে।

আপনার পোষ্যটি আপনার সন্তানকে ​দায়িত্ব ও আত্মবিশ্বাস শেখাবে:

বাড়িতে যদি একটি কুকুর থাকে আপনার সন্তান নিজেই তার দায়িত্ব নিয়ে নেয়। সে প্রতিদিন তাকে বাইরে ঘোরাতে নিয়ে যাবে, এমনকি খাবারও খাইয়ে দেবে। এর থেকেই বোঝা যায় তার মধ্যে দায়িত্ববোধের জন্ম হয়েছে। আবার পোষ্য প্রাণীটির যত্ন নিতে পারলে তার মনে মধ্যেও আত্মবিশ্বাসের সঞ্চার হয়েছে। অল্প বয়স থেকে দায়িত্ববোধ ও আত্মবিশ্বাস থাকলে ভবিষ্যতে তার অনেক সুবিধা হবে। কী ভাবে অন্যের যত্ন নিতে হয় এবং কী ভাবে দায়িত্ব পালন করতে হয়, তা পোষ্যর খেয়াল রাখতে রাখতেই শিখে যেতে পারে আপনার সন্তান। ফলে সে অনেক বেশি পরিপক্ক হয়ে যাবে।

আপনার সন্তান​ রাগ নিয়ন্ত্রণ করতে শিখবে:

বাড়িতে একটি পোষ্য প্রাণী থাকলে সেই হয় আপনার সন্তানের পরম বন্ধু। যতোরকম দুষ্টুমি তার মূলে থাকে তারা দুজন। আপনার সন্তানের সাথে সমস্ত কৃতকর্মে তার সঙ্গী থাকে আপনার পোষ্যটি। অনেক সময় বাচ্চারা নিজের রাগেরঅপর নিয়ন্ত্রণ হারায়। তারা রাগের বশে ভুলভাল কাজ করে ফেলে। তবে বাড়িতে একটি পোষা কুকুর থাকলে তারা বাচ্চাকে ভালোবাসবে। তার সাহচর্য পেয়ে এই সময় শিশু নিজেকে নিরাপদ অনুভব করবে। এর ফলে ধীরে ধীরে তার রাগও নিয়ন্ত্রণে আসবে। কারণ পোষ্যটি জানে তাকে কী ভাবে শান্ত করতে হয়। সে ঠিক তার কাজটি করে দেবে।

Sanjana Chakraborty

My name is Sanjana Chakraborty. I'm a content writer. Writing is my passion. I studied literature, so I love writing.

Leave a Reply

Your email address will not be published.