Kolkata Yellow Taxi: কলকাতার রাজপথে বিলুপ্ত হয়ে যাওয়া হলুদ ট্যাক্সিকে পুনরুজ্জীবিত করতে রাজ্য সরকারের নয়া উদ্যোগ

হাইলাইটস:

•কলকাতার হলুদ ট্যাক্সি প্রায় বিলুপ্তির পথে

•তাই হলুদ ট্যাক্সি নিয়ে নতুন পরিকল্পনা রাজ্য সরকারের

•এমনটাই জানিয়েছেন রাজ্যের বিদ্যুৎ সচিব

Kolkata Yellow Taxi: ১৯৬২ সালে তিলোত্তমা নগরীর রাজপথে শুরু হয় হলুদ ট্যাক্সির যাত্রা, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এই ট্যাক্সিই হয়ে উঠে শহরের অন্যতম ‘আইকন’। ধর্মতলার ফ্রেঞ্চ মোটরকার কোম্পানির অফিসের সামনে থেকে মিটারওয়ালা ওভারল্যান্ড কোম্পানির ট্যাক্সিগাড়ি ছাড়ত। ভাড়া ছিল প্রতি মাইল ৮ টাকা। ‘রবীন্দ্র সেতু’, ‘শহিদ মিনার’ বা ‘ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল হল’-এর মতো হলুদ ট্যাক্সিও যে শহর কলকাতার ঐতিহ্যবাহী (Heritage Of Kolkata) চিহ্ন বহন করে তা নিয়ে সন্দেহের অবকাশ নেই। আধুনিক কলকাতাতে আজও শহরের ইমোশন তিলোত্তমার এই হলুদ ট্যাক্সি (Kolkata Yellow Taxi)। কিন্তু ডিজেলের দামের ছ্যাঁকা ও অ্যাপ ক্যাবের দৌরাত্মে হলুদ ট্যাক্সির সংখ্যা ক্রমশ কমছে।

সুপ্রিম কোর্ট বেশ কিছু বছর আগেই মেয়াদ ফুরিয়ে যাওয়া পেট্রল-ডিজেল চালিত যানবাহনের চলাচলের উপরে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল। সেই নির্দেশ অনুসারে সারা দেশের বিপুল সংখ্যক যানবাহনের পুরনো ইঞ্জিন পরিবর্তন করতে হয়েছিল বা সেই সব গাড়ি বাতিল পর্যন্ত করতে হয়েছিল। শহর কলকাতায় এখন যে হলুদ-ট্যাক্সি চলাচল করে সেগুলির প্রায় সবই হিন্দুস্থান মোটর কোম্পানির তৈরি ‘অ্যাম্বাসাডার’ গাড়ি। ওই কোম্পানি আর ‘অ্যাম্বাসাডার’ গাড়ি তৈরি করে না, আগেকার তৈরি সব গাড়ির ইঞ্জিনই আগামী ২০২৫ সালের মধ্যে ১৫ বছরের মেয়াদ শেষ করে ফেলবে। ফলে আগামী দু’বছরের মধ্যে কলকাতা ও শহরতলীতে চলমান হলুদ-ট্যাক্সির (Kolkata Yellow Taxi) একটা বড় অংশই ব্যবহারের অযোগ্য বলে পরিত্যক্ত হবে।

সম্প্রতি হলুদ ট্যাক্সি নিয়ে একটি সুখবরের কথা জানিয়েছে রাজ্য সরকার। শহরের ঐতিহ্যের সঙ্গে জড়িয়ে থাকার হলুদ ট্যাক্সির বিলুপ্তি রুখতে তাদের রূপান্তরিত করা নিয়ে পরিকল্পনা করছে রাজ্য সরকার। ডিজেলচালিত হলুদ ট্যাক্সির ইঞ্জিন বদলে তাদের ই-ভেহিকলে বদলে ফেলার চিন্তাভাবনা করছে সরকার। যেসব হলুদ ট্যাক্সির ১৫ বছর হয়ে গিয়েছে সেগুলিকে নতুন করে গড়ে তোলা হবে। সেগুলিকে ইলেকট্রিক যানবাহনে পরিবর্তন করা হবে। তাতে শহরে দূষণ কমবে। আর পরিবেশবান্ধব যানবাহন পাবে মহানগরী।

সম্প্রতি বেঙ্গল চেম্বার অব কমার্স ও ব্রিটেন সরকারের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত বৈদ্যুতিক গাড়ির একটি সেমিনারে এমনই ইঙ্গিত দিয়েছেন রাজ্যের বিদ্যুৎ সচিব এস সুরেশ কুমার। তিনি বলেন, “কলকাতার পরিচিতির সঙ্গে জড়িত হলুদ ট্যাক্সি এত তাড়াতাড়ি অবলুপ্ত হতে দেওয়া ঠিক হবে না। হলুদ ট্যাক্সি বাতিলের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে সেই নিয়ে পরিকল্পনা করছে সরকার।”

অ্যাকিসিলারেটিং স্মার্ট পাওয়ার অ্যান্ড রিনিউবেল এনার্জি ইন ইন্ডিয়া বা ASPIRE-র আওতায় একটি বিশেষ কর্মশালারও আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানে রাজ্যের বিদ্যুৎ সচিব আরও জানিয়েছেন, সরকার বিদ্যুতচালিত যানবাহনের উপর বাড়তি জোর দিতে চাইছে। তিনি বলেন, “আমরা চাইছি দেশে বিদেশের বিভিন্ন ই-ভেহিকল নির্মাতা কোম্পানিগুলি বাংলায় আসুক এবং এখানে বিদ্যুৎচালিত গাড়ি চলাচলের উপর বাড়তি জোর দিক।” ২০২৫ সালে আড়াই হাজার ডি এবং ই–সিরিজের অ্যাম্বাসেডর বাতিলের তালিকায় ঢুকে পড়বে। তাই এই জরুরি উদ্যোগ।

সূত্রের খবর, এই পরিকল্পনাকে স্বাগত জানাল বেঙ্গল ট্যাক্সি অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যরা। সংগঠনের যুগ্ম সচিব সঞ্জীব রায় বলেন, ‘‌এটা খুব ভালো খবর যে ডিজেল চালিত ট্যাক্সিতে নতুন করে ইভি ইঞ্জিন লাগানো যাবে। এখানে খরচ একটা বড় বিষয়। যদি বেশি খরচ হয় তাহলে চালকরা তা বাতিলের পথেই হাঁটবে।’‌ আর বিদ্যুৎ সচিবের কথায়, ‘‌খুব শীঘ্রই ইভি বন্ধু অ্যাপ চালু করা হবে। আর রাজ্যে ২০০টি ইভি চার্জিং স্টেশন তৈরি হবে।’‌ একটি কথা সত্যি যে গাড়িগুলিকে ডিজেল থেকে ইভি ইঞ্জিনে পরিবর্তন করতে যে বিপুল খরচ হবে তা কতজন ট্যাক্সি-মালিক বহন করতে পারবেন, সেটা নিয়েও সন্দেহ থেকে যাচ্ছে।

এইরকম গুরুত্বপূর্ণ আপডেট পেতে ওয়ান ওয়ার্ল্ড নিউজ বাংলার সাথে যুক্ত থাকুন।

Sanjana Chakraborty

Professional Content Writer

Leave a Reply

Your email address will not be published.