শুষ্ক কাশি কমানোর ৫টি ঘরোয়া টোটকার কথা এখানে বলা হয়েছে

শুষ্ক কাশি কমবে কিছু ঘরোয়া টোটকায়

মরসুম পরিবর্তনের ফলে শুকনো কাশিতে আক্রান্তের সংখ্যা এখন ঘরে ঘরে। জ্বর-সর্দি-কাশি এই তিন নিয়ে আমাদের জীবন। জ্বর বা সর্দি কয়েকদিন পরে কমে গেলেও কাশি কিছুতেই কমতে চায় না। শ্লেষ্মাযুক্ত কাশি বাচ্চাদেরও হতে পারে, আর বড়োদের ক্ষেত্রে অ্যালার্জি, অ্যাজমা, শুষ্ক আবহাওয়া ও ধূমপানের কারণেও কাশি হয়ে থাকে।

কাশির চেয়েও বেশি কষ্টকর হল শুষ্ক কাশি। ব্রঙ্কাইটিস বা অ্যালার্জির কারণে এই ধরনের কাশি হতে পারে। আবার অনেক সময় ঠান্ডা লাগার কারণেও হয়। অনেক সময় হতে পারে খাবার ঠিকমতো হজম না হওয়ার জন্য শুষ্ক কাশি হচ্ছে। যাদের হাঁপানির সমস্যা রয়েছে, তাদের সতর্ক হওয়া দরকার, কারণ শুষ্ক কাশি হওয়ার ঝোঁক এদের সবচেয়ে বেশি।

শুষ্ক কাশির বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য কিছু ঘরোয়া টোটকা রয়েছে, যেগুলি আপনার রান্নাঘরেই পেয়ে যাবেন। আসুন দেখে নেওয়া যাক সেই ঘরোয়া টোটকাগুলির বিষয়ে-

মধু:

মধুতে রয়েছে অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল উপাদান। ফলে এই খাবার ১ বছরের উপরে যেকোনও বয়সি মানুষই খেতে পারেন মধু। একটি গবেষণায় দেখা যায় যে, ছোটদের কাশি দূর করার ক্ষেত্রে দারুণ কার্যকরী এই খাবার। তবে বড়োরাও খেতে পারেন অনায়াসে। প্রতিদিন দু থেকে তিনবার ১ চামচ করে মধু খান। আবার চা বা গরম জলে মিশিয়েও খেতে পারেন। শীতকালে ঠান্ডা জল খাওয়া এড়িয়ে চলুন এবং গরম জলের ব্যবহারের পরিমাণ বাড়ান। এক গ্লাস কুসুম কুসুম গরম জলে ১ চামচ মধু মিশিয়ে খেলে শুষ্ক কাশি থেকে সম্পূর্ণ মুক্তি পাবেন। এছাড়াও আপনি এটি নিয়মিত খেলে অন্যান্য রোগও প্রতিরোধ হয়।

হলুদ:

হলুদে রয়েছে অ্যান্টিইনফ্লেমেটরি এবং অ্যান্টিভাইরাল গুণ। ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধেও লড়াই করতে পারে এই খাদ্য। মূলত হলুদ কাঁচা খাওয়ার চেষ্টা করুন। হলুদে থাকা কারকুমিন নামের উপাদান বুক থেকে কফ, শ্লেষ্মা দূর করে বুকে ব্যথা, শ্বাসকষ্ট দ্রুত কমিয়ে দেয়। এর অ্যান্টি ইনফ্লামেটরি উপাদান গলা খুসখুস ও বুকের জ্বালা, ব্যথা দূর করতে সাহায্য করে। এক গ্লাস সামান্য উষ্ণ জলেতে এক চিমটে হলুদের গুঁড়ো মিশিয়ে নিন। এটি দিয়ে প্রতিদিন  কুলকুচি করুন। এছাড়া এক গ্লাস দুধে আধা চা চামচ হলুদের গুঁড়ো মিশিয়ে ফুটিয়ে নিন। সম্ভব হলে এর সঙ্গে দু’ চা চামচ মধু এবং এক চিমটে গোল মরিচের গুঁড়ো মিশিয়ে এই দুধ দিনে দুই থেকে তিনবার পান করুন। শুষ্ক কাশি অনেক কমে যাবে।

আদা:

এক টেবিল চামচ আদা কুচি এক গ্লাস জলে মেশান। এ বার এটি ঢাকনা দিয়ে ঢেকে ৫-১০ মিনিট ফুটিয়ে নিন। ঠাণ্ডা হলে এতে সামান্য মধু দিয়ে দিন। দিনে অন্তত তিনবার এই পানীয়টি পান করুন। এছাড়া এক চা চামচ আদা কুচি, গোল মরিচের গুঁড়ো, এবং লবঙ্গের গুঁড়ো দুধ বা মধুর সঙ্গে মিশিয়ে মিশ্রণটি দিনে তিনবার পান করুন। অথবা চায়ের সঙ্গেও আদা মিশিয়ে খেতে পারেন। আপনি চাইলে এক টুকরো আদা নিয়ে মুখে চিবোতে পারেন। আদার রস বুকের কফ বা শ্লেষ্মা শরীর থেকে বের করে দিতে সাহায্য করবে।

তুলসী পাতা:

সর্দি, কাশি দূর করতে তুলসী পাতার রস খুবই উপকারী। শিশুদের জন্য কয়েকটি তাজা তুলসী পাতার রসের সঙ্গে একটু আদার রস ও মধু দিয়ে খেলে খুব উপকার পাবেন। তুলসি পাতা শুকনো কাশির জন্য খুবই কার্যকরী। সকালে খালি পেটে তিন থেকে চারটি তুলসী পাতা খেতে পারেন। তাছাড়া তুলসি পাতা ফুটিয়ে চা তৈরি করে পান করতে পারেন।

মশলা চা:

মশলা চা খেতে এখন আমরা সবাই ভালোবাসি। এই চায়ে থাকে তুলসী থেকে শুরু করে লবঙ্গ, দারচিনি, আদা প্রায় সবকিছুই। এই চা কিন্তু শুষ্ক কাশি দূর করে দিতে পারে। তাই আপনি অবশ্যই এই চা নিয়মিত পান করুন। তবে কাশি অনেকদিন ভালো না হলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন।

Sanjana Chakraborty

My name is Sanjana Chakraborty. I'm a content writer. Writing is my passion. I studied literature, so I love writing.

Leave a Reply

Your email address will not be published.