Mamata Banerjee: অভিষেককে সিবিআই হাজিরার নোটিশ পাঠানোর পরেই আক্রমনাত্মক মুখ্যমন্ত্রী

Mamata Banerjee: তিনি বলেন, ‘অভিষেককে আটকালে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যাবে নবজোয়ার যাত্রায়’

হাইলাইটস:

• অভিষেককে গতকাল সিবিআইয়ের তরফে হাজিরার নোটিশ হয়েছিল

• ফলে তিনি রাতেই বাঁকুড়া থেকে ফিরেছেন কলকাতায়

• তাঁর অনুপস্থিতিতে বাঁকুড়ার জনসভায় ভার্চুয়ালি বক্তব্য রেখেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

Mamata Banerjee: নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে ধৃত কুন্তল ঘোষের চিঠি সংক্রান্ত মামলায় তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে (Abhishek Banerjee) জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আজ সকাল ১১টায় নিজাম প্যালেসে হাজিরার নোটিশ পাঠানো হয়েছিল গতকালই। হাইকোর্টে স্বস্তি মেলেনি। ফলে সিবিআইয়ের ডাকে সাড়া দিয়ে বাঁকুড়ার সোনামুখীর জনসভা সেরে গতকাল রাতেই কলকাতায় পৌঁছেছেন অভিষেক। অন্যদিকে অভিষেক না থাকায় পত্রসায়রের জনসভায় ভার্চুয়ালি বক্তব্য রেখেছেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। সূত্রের খবর, ২২শে মে ফের সোনামুখী থেকে নবজোয়ার যাত্রা শুরু করবেন অভিষেক। আজ তিনি সকাল ১১টায় উপস্থিত হয়েছেন নিজাম প্যালেসে। তিনি তদন্তে পূর্ণ সহযোগিতা করার আশ্বাসও দিয়েছেন।

এদিকে অভিষেকের অনুপস্থিতিতে পত্রসায়রের ওই জনসভায় ভার্চুয়ালি হাজির ছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অভিষেককে সিবিআই নোটিশ পাঠানো নিয়ে তিনি তীব্র আক্রমণ করলেন বিজেপি এবং কেন্দ্রীয় সরকারকে। তিনি বলেন, ‘ইডি-সিবিআই তৃণমূলকে খুব ভয় পায়। অভিষেক ২৫ দিন ধরে রাস্তায় পড়ে আছে। ঘুম নেই, খাওয়া নেই, পরিবার পরিজন ছেড়ে। মানুষের কাজ করার জন্য মানুষের পাশে থাকার জন্য। নবজোয়ার দেখে বিজেপির ভয় হয়েছে। নবজোয়ার কর্মসূচি আটকাতেই অভিষেককে নোটিস দিয়েছে। আসলে অভিষেককে ভয় পায় বিজেপি। বিজেপির ঘুম উড়ে গিয়েছে। নবজোয়ার আটকাতে মাঠে নেমে পড়েছে। বিজেপিকে যতদিন না দেশ থেকে বের করছি, ততদিন পর্যন্ত আমাদের লড়াই থামবে না।’ তাঁর সাফ বার্তা, ‘আমি ভয় পাই না, অভিষেককে আটকালে আমি নবজোয়ারে যাব। নবজোয়ারকে নবপ্লাবনে পরিণত করব।’ তিনি আরও বলেন, ‘রাজনৈতিকভাবে লড়াই করতে পারছে না বলে অভিষেককে এজেন্সি দিয়ে ডেকে পাঠাচ্ছে।’

নবজোয়ার কর্মসূচিতে অভিষেকের ভূমিকার প্রশংসা করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন,’ অভিষেকের সঙ্গে আজ আমার তিনবার কথা হয়েছে। আমি ওকে বললাম সময় নিয়ে নে। বাঁকুড়া, পুরুলিয়া করে চলে আসবি। ও বলল না দিদি। ওরা যখন ডেকেছে, আমিও যোগ্য জবাব দেওয়ার জন্য তৈরি।’ তিনি বলেন, অভিষেককে তর্জন, গর্জন করে আটানোর চেষ্টা করে কিছু করতে পারবে না। তৃণমূল কংগ্রেস শুধু জনগণের পরিবার। এত মার খেয়েও আমি এখনও যা করতে পারি, বিজেপির ট্রাবল ইঞ্জিন তা করতে পারে না। বিজেপি নেতারা আমার দল, আমার পরিবারের পেছনে লেগে আছে। কর্ণাটকে শুধু ব্যর্থতা নয়, দেখবেন বাকি সব জায়গায় হারবে। উত্তরপ্রদেশ ও গুজরাত নিয়ে থাকবে। অভিষেক বন্দোপাধ্যায়কে আটকে দিয়ে যদি কেউ ভাবে নবজোয়ার আটকে দেবে সে ভুল করছে।’

এরপর হুঁশিয়ারির সুরেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘মানুষের কাজ করতে গেলে মানুষের পাশে থাকতে হবে। এটা অভিষেককে আমি বলেছিলাম। আমিও জনসংযোগ করে এসেছি এভাবেই। আমি ওকে আশ্বাস দিয়ে বললাম, ভাবিস না তুই চলে আয়। তোর ছোট দু’টো বাচ্চা আছে, ঘরে বউ আছে, বাবা-মা বৃদ্ধ। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এই ঝড় জলের মধ্যে থাকিস না। সাতদিনের জন্য এই কর্মসূচি বাতিল কর। তোর হয়ে আমি ভার্চুয়ালি মিটিং করে দেব। কিন্তু ও আমায় বলল, না দিদি আমি যখন দু’মাস করব বলেছি, তখন এই কর্মসূচি শেষ না করে আসব না। যদি কেউ ভেবে থাকে অভিষেককে আটকে দিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আটকে দেওয়া যাবে, ভুল ভাবছেন। ওর মিটিং আমি করে দেব। জেনে রাখুন আমি ভয় পাই না। দরকার হলে জেলায় আমি যাব। দেখি কার কত শক্তি।’

অন্যদিকে গতকাল বাঁকুড়ার শেষ সভা থেকে বিজেপির উদ্দেশ্যে কড়া হুঁশিয়ারি দিয়েছেন অভিষেকও। তিনি বলেন, ‘আমি রাজনীতি করি। আমার দায়বদ্ধতা মানুষের কাছে। মাথানত করলে ইশ্বরের কাছে করব, ভগবানের কাছে করব, আর আগামীদিনে আপনাদের কাছে করব, আর কারও কাছে করব না। আজকে কলকাতা ফিরছি। আগামিকাল সিবিআইয়ের মুখোমুখি হব। ওরা নবজোয়ার যাত্রাকে ভয় পাচ্ছে। আমি কথা দিচ্ছি বাঁকুড়া থেকে শুরু করব। যদি কারও পারে ক্ষমতা থাকে আটকে দেখাক। বিজেপি নেতাদের বলব এসে মিছিল করে দেখাও এই বৃষ্টিতে। আমার বিরুদ্ধে এত ইডি, সিবিআই লাগিয়েছে। ৩ বছর আগে বলেছিলাম সিবিআইকে। বাংলার মানুষ মেরুদণ্ড সোজা রেখে চলে। ইন্দাসে আমার মিটিং করার কথা ছিল। আমাকে আটকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নামিয়ে দিলেন৷ দেখুন এবার…।’

তিনি আরও বলেন, ‘যাঁরা আমাদের বিরুদ্ধে রায় দিয়েছেন, সম্মান করি। যদি আমার বিরুদ্ধে কোনও প্রমাণ মেলে, আমি সেই বিচারপতিকেই বলব ফাঁসির আদেশ দিতে।’ বিজেপিকেও আক্রমণ করে অভিষেক বলেন, ‘ওদের কাছে আমি মাথা নিচু করিনি। আমি মাথা নিচু করব মানুষের কাছে, বাবা-মায়ের কাছে, দলনেত্রীর কাছে। কিন্তু দিল্লির বহিরাগতদের কাছে মাথা নত করব না। এসএসসিতে যদি আমার বিরুদ্ধে কিছু পাওয়া যায় আমি ফাঁসির মঞ্চে জীবন দেব। ‘সারদা, নারদ, কয়লা, গরু— কোনও মামলাতেই আমার বিরুদ্ধে কিচ্ছু পায়নি। ওরা আমার স্ত্রী, আইনজীবী এমনকি আপ্তসহায়ককেও ছাড়েনি। কিন্তু কিচ্ছু পায়নি। আমার গলা কেটে ফেললেও জয় বাংলাই বেরোবে।’ ইতিমধ্যে আজ সকাল ১১টায় তিনি নিজাম প্যালেসে প্রবেশ করেছেন, এখন দেখার বিষয় নিজাম প্যালেস থেকে বেরিয়ে তিনি সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে কী বক্তব্য রাখেন?

এইরকম রাজনৈতিক বিষয়ক প্রতিবেদন পেতে ওয়ান ওয়ার্ল্ড নিউজ বাংলার সাথে যুক্ত থাকুন। 

Sanjana Chakraborty

Professional Content Writer

Leave a Reply

Your email address will not be published.