Mamata Banerjee: বাম আমলে ১৯৯০ থেকে ২০১১ পর্যন্ত কত শিক্ষকের ‘চিরকুটে চাকরি’ হয়েছে, তা অনুসন্ধানে শিক্ষামন্ত্রীকে নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী

এখন নজরে ‘চিরকুটে চাকরি’

হাইলাইটস:

•গতকাল কালীঘাটে ছিল তৃণমূলের সাংগঠনিক বৈঠক

•পঞ্চায়েত ভোটের জন্য বৈঠকে একাধিক নেতা-মন্ত্রীকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে

•এবার এক ধাপ এগিয়ে মুখ্যমন্ত্রী শিক্ষামন্ত্রীকে নির্দেশ দিলেন বাম আমলে চিরকুটে চাকরি কত জন পেয়েছেন তার তালিকা তৈরি করার

কলকাতা: গতকাল কালীঘাটে সাংগঠনিক পরিস্থিতি নিয়ে বৈঠক ডেকেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। পঞ্চায়েত নির্বাচনকে সামনে রেখে একাধিক নেতা-মন্ত্রীকে দায়িত্ব দিয়েছেন তিনি। সেই বৈঠকেই শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুকে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ১৯৯০ থেকে ২০১১ পর্যন্ত বাম জমানায় চিরকুটে যাদের চাকরি হয়েছে, তাদের নামের তালিকা তৈরি করতে হবে। শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে যখন তৃণমূলের বিরুদ্ধে গুচ্ছগুচ্ছ অভিযোগ উঠছে, কোর্টের নির্দেশে চাকরি যাওয়াদের মধ্যে নাম থাকছে নেতা-নেত্রীর ছেলেমেয়েদের, তখন দলের বৈঠকে বড় নির্দেশ দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)।

এদিকে তৃণমূল নেতৃত্ব মাঝেমধ্যেই অভিযোগ তোলেন বাম আমলে বাম দলের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা না থাকলে চাকরি পাওয়া যেত না। বাম নেতাদের এমন কোনও পরিবার ছিল না যাদের পরিবারের সদস্যরা চাকরি পেতেন না। আর সবটাই নাকি হত পার্টি অফিস মারফৎ। এমন অভিযোগ মাঝেমধ্যেই তোলেন তৃণমূল নেতৃত্ব। এবার একেবারে তালিকা তৈরির নির্দেশ দিয়েছেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘ওরা চাকরিতে দুর্নীতি হয়েছে বলে খুব বড় বড় কথা বলছে। কিন্তু চিরকুট দিয়ে কোন কোন সিপিএম ক্যাডার চাকরি পেয়েছিল, তাদের নামও তো সামনে আসা প্রয়োজন।’ বাম জমানায় বিরোধীরা এই চিরকুটে চাকরির অভিযোগ প্রায়শই তুলত। পাল্টা আবার বামেরা বলত, গনিখান চৌধুরী রেলমন্ত্রী থাকাকালীন সিগারেটের প্যাকেটে নাম লিখে মালদহের কয়েক হাজার লোককে রেলের চাকরিতে ঢুকিয়েছিলেন।

নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে যখন তোলপাড় রাজ্য রাজনীতি তখন দলীয় নেতা মন্ত্রীদের নিয়ে সাংগঠনিক বৈঠকের ডাক দেন তৃণমূল কংগ্রেস সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। এই বৈঠকে শিক্ষক সংগঠনের দায়িত্ব দেওয়া হয় শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুকে। রাজনৈতিক মহলের ব্যাখ্যা নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডের পর আপাতত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের শিক্ষা মন্ত্রী ব্রাত্য বসুর উপরেই আস্থা রাখতে চাইছেন। অন্যদিকে তৃণমূলের ভাবমূর্তি নিয়ে প্রশ্ন তুলতে ছাড়ছে না বিরোধীরা। এবার পাল্টা চাপের কৌশল নিল তৃণমূল কংগ্রেস। রাজনৈতিক মহল মনে করছে, তৃণমূলের ওয়ার্কিং কমিটির বর্ধিত বৈঠকে চিরকুটে চাকরি দেওয়া নিয়ে তৃণমূল সুপ্রিমোর বক্তব্য রাজ্যের এই পরিস্থিতিতে তাৎপর্যপূর্ণ ৷

তৃণমূল সরকারের আসার পর সিপিএম জমানার একাধিক নিয়োগ নিয়ে সমালোচনা করত। সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক সভা থেকে বামেদের সময় চিরকুটে চাকরি হয়েছে বলে অভিযোগ তুলে সরব হয়েছেন। বাম আমলের নানা দুর্নীতির কথা তুলে বার বারই সরব হন তৃণমূল নেতৃত্ব। সূর্যকান্ত মিশ্রর মেয়ে রোশনারা মিশ্র কীভাবে রাজাবাজার সায়েন্স কলেজের অধ্যাপক হলেন এই প্রশ্ন তুলে তাঁর চাকরি খাওয়ার হুঁশিয়ারি দিতে শোনা গিয়েছিল সেই সময়ের তৃণমূল নেতা শুভেন্দু অধিকারীকে। অনিল বিশ্বাসের মেয়ের অধ্যাপনার চাকরি নিয়েও তৃণমূল সমালোচনা করেছে। কিন্তু কিছু নিয়েই তদন্ত হয়নি। অন্যদিকে দেখা যায় অনিল-কন্যা অজন্তা বিশ্বাস তৃণমূলের মুখপত্র জাগোবাংলায় কলম লিখছেন।

তৃণমূল সুপ্রিমোর এহেন বক্তব্য প্রকাশ্যে আসার পর প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী (Sujan Chakraborty)৷ তিনি বলেন, “ভালো, আমরা এই চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করছি৷ পারলে প্রমাণ করুন আমাদের সময় দুর্নীতি হয়েছে৷ তৃণমূল সরকার ক্ষমতায় আসার পর একের পর এক কমিশন গঠন করেছে৷ কিন্তু একটারও রিপোর্ট প্রকাশ করতে পারেনি৷ বাম আমলে তো বর্তমান শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুরও চাকরি হয়েছিল৷ তাহলে তিনি কি চিরকুটের মাধ্যমে চাকরি পেয়েছিলেন! পারলে তথ্য প্রকাশ্যে আনুন।”

এইরকম রাজনৈতিক বিষয়ক প্রতিবেদন পেতে ওয়ান ওয়ার্ল্ড নিউজ বাংলার সাথে যুক্ত থাকুন।

Sanjana Chakraborty

Professional Content Writer

Leave a Reply

Your email address will not be published.