Cyclone Mocha: সুপার সাইক্লোন মোকার তান্ডবে কার্যত তছনছ বাংলাদেশে এবং মায়ানমারের সমুদ্র উপকূলবর্তী এলাকা

Cyclone Mocha: মায়ানমারের সিতওয়ে উপকূলে ১৮০-২১০ কিমি বেগে আছড়ে পড়ল ঘূর্ণিঝড় মোকা

হাইলাইটস:

• ঘূর্ণিঝড় মোকা দানবের জন্য তান্ডব চালিয়েছে মায়ানমারে

• মোকার জেরে ক্ষতিগ্রস্ত বাংলাদেশও

• মোকার তান্ডবে মায়ানমার কার্যত তছনছ, ৭০০ জনের বেশি মানুষ গুরুতর জখম, বিচ্ছিন্ন যোগাযোগ ব্যবস্থা

Cyclone Mocha: রবিবার দুপুরে মায়ানমারের সিতওয়ে বন্দরের কাছে স্থলভাগে আছড়ে পড়েছে ঘূর্ণিঝড় মোকা (Cyclone Mocha)। বাংলাদেশের কক্সবাজার সংলগ্ন এলাকা এটি। ফলে কক্সবাজারেও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। সিতওয়ে উপকূলে ১৮০-২১০ কিমি বেগে আছড়ে পড়ে ঘূর্ণিঝড় মোকা। তখন কক্সবাজারেও ২০০ কিমি বেগেই হাওয়া বইতে থাকে। মোকার তাণ্ডবে প্রায় লন্ডভন্ড মায়ানমার। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সিতওয়ে। সূত্রের খবর, ঝড়ের দাপটে কমপক্ষে ৭০০ জন মানুষ আহত হয়েছে। বিচ্ছিন্ন দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থাও। মায়ানমারের স্থানীয় সংবাদ সংস্থা সূত্রের খবর, ঝড়ের কারণে গাছ উপড়ে গেছে এবং একটি টেলিকম টাওয়ারও উপড়ে গেছে। ঘূর্ণিঝড়টি প্রায় সম্পূর্ণভাবে পশ্চিম মায়ানমারে তাণ্ডব চালিয়েছে।

গতকাল দিনভর মোকা তাণ্ডব চালানোর পর উদ্ধারকাজে নেমেছে মায়ানমারের প্রশাসন। পশ্চিম মায়ানমারের সমুদ্র উপকূলবর্তী জেলাগুলিতে প্রায় ১২ ফুট জলোচ্ছাসের ফলে বহু এলাকা প্লাবিত হয়। এমনকি বহু ঘরবাড়ি ভেঙে পড়ায় বহু মানুষ ঘরছাড়া। আজ ঝড়ের তাণ্ডব কমায় শুরু হয়েছে উদ্ধার কাজ। উদ্ধারকারীদের একটি দল প্লাবন এলাকা থেকে প্রায় ১০০০ মানুষকে উদ্ধার করে নিরাপদ স্থানে নিয়ে গিয়েছে। উদ্ধার কাজে প্রশাসনকে সাহায্য করার জন্য স্থানীয়দের কাছে মায়ানমারের সামরিক প্রশাসনের তরফে আবেদন জানানো হয়েছে। তবে মৃত্যুর সংখ্যা এখনও পর্যন্ত স্পষ্ট না।

এর আগে ২০০৮ সালের মে মাসে ঘূর্ণিঝড় নার্গিস আঘাত হেনেছিল মায়ানমারে। ইরাবতি নদীর আশপাশের এলাকাগুলি সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল। কমপক্ষে ১ লক্ষের বেশি মানুষ মারা যায়। কয়েক হাজার ঘরবাড়ি ভেঙে পড়েছিল। তবে সেখানকার হাওয়া অফিস জানিয়েছে, তাণ্ডব চালানোর পরে ঘূর্ণিঝড় মোকা দ্রুত দুর্বল হয়ে পড়েছে। যদিও এখনও মায়ানমার জুড়ে চলছে ঝড়ো হাওয়া ও ভারী বর্ষণ। অনুমান করা হচ্ছে, ঘূর্ণিঝড় মোকা আজ অর্থাৎ সোমবার রাতে অথবা মঙ্গলবার সকালের মধ্যে পশ্চিম প্রান্ত থেকে মায়ানমারের উত্তরপ্রান্তে মোকা ছড়িয়ে পড়বে। সেখানকার সরকার ভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাসের পাশাপাশি ভূমিধসের সতর্কতাও জারি করেছে। প্রয়োজন ছাড়া বাড়ির বাইরে বের না হতে বলা হয়েছে।

অন্যদিকে মোকার তাণ্ডবে বাংলাদেশের কক্সবাজার, মহেশখালি, টেকনাফ এবং সেন্ট মার্টিন দ্বীপে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া বেশ কয়েকটি ভিডিও ফুটেজে দেখা গিয়েছে বেশ কিছু বাড়ির ছাদ এবং বিদ্যুতের পোস্ট ভেঙে পড়ে গিয়েছে। মোকার প্রভাবে দক্ষিণ-পূর্ব বাংলাদেশের বিভিন্ন উপকূলীয় জায়গায় ব্যাপক ঝড়বৃষ্টি হয়েছে। কক্সবাজারে প্রায় ১২,৫০০ ঘববাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। প্রভাব পড়েছে তিন লাখের বেশি মানুষের উপর। সেন্ট মার্টিন দ্বীপে অন্তত ৩৪০টি বাড়ি ভেঙে পড়েছে। ভেঙে পড়েছে প্রচুর গাছপালা। প্লাবিত হয়েছে একাধিক গ্রাম। প্রবল জলোচ্ছ্বাস হয়েছে সেন্ট মার্টিন দ্বীপে।

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেই পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন। সেই সঙ্গে ঘূর্ণিঝড় পরবর্তী অবস্থার যাবতীয় নির্দেশন দিয়েছেন। বেশ কিছু জায়গায় প্রচুর মানুষ আটকে গিয়েছেন বলে খবর। সেই সব এলাকায় দ্রুত উদ্ধারকার্য করা হচ্ছে। অতিভারী বর্ষণের প্রভাবে কক্সবাজার, বান্দরবান, রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি ও চট্টগ্রামের পাহাড়ি অঞ্চলের কোথাও কোথাও ভূমিধসের আশঙ্কা এখনও রয়েছে। অবশ্য বাংলাদেশে আবহাওয়া দফতর সূত্রে খবর, স্থলভাগে আছড়ে পড়ে ঘূর্ণিঝড় মোকা অনেকটা দুর্বল হয়ে পড়েছে। তাই গতকাল রাতেই খুলে গেছে চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দর। এবং আজ থেকে চট্টগ্রামের শাহ আমানত বিমানবন্দরও খুলে গেছে। তবে এই ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে উত্তর পূর্ব ভারতে বৃষ্টিপাত হয়ে পারে।

এইরকম গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন পেতে ওয়ান ওয়ার্ল্ড নিউজ বাংলার সাথে যুক্ত থাকুন। 

Sanjana Chakraborty

Professional Content Writer

Leave a Reply

Your email address will not be published.