মেঘালয় বিধানসভা নির্বাচন ২০২৩: মেঘের রাজ্যে তৃণমূল কী খাতা খুলতে পারবে?

কোন দিকে তৃণমূলের রাজনৈতিক সমীকরণ?

হাইলাইটস:

•উত্তর-পূর্ব ভারতের মেঘালয়ে খাতা খুলতে চলেছে ঘাসফুল।

•ত্রিপুরার পাশাপাশি ‘ফোকাস’ ছিল মেঘালয়ও।

•নির্বাচনের ফলাফলের ট্রেন্ড দেখে উচ্ছসিত তৃণমূল কংগ্রেস

আজ ভারতের উত্তর-পূর্বের তিন রাজ্যে ত্রিপুরা, নাগাল্যান্ড এবং মেঘালয় বিধানসভা নির্বাচনের ফল ঘোষণা। ২০২১ সালে পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেস জয়ের হ্যাটট্রিক করেছিল। বাংলায় সর্ব শক্তি দিয়ে ঝাঁপিয়ে পরেও বিজেপির ক্ষমতা দখলের আশা ভঙ্গ করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একা হাতেই। এই জয় তৃণমূলকে অন্যই একটা আত্মবিশ্বাস এনে দিয়েছে। বাংলায় তৃতীয়বার ক্ষমতা দখলের পর তৃণমূলের পাখির চোখ এখন দিল্লি, অর্থাৎ ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচন। আর ঠিক সেই কারণেই ছোটো ছোটো রাজ্যে নিজেদের প্রভাব বিস্তার করতে চেয়েছিল বাংলার শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস।

বাংলায় তৃতীয়বার জয়ের মুহূর্ত থেকেই উত্তর-পূর্ব ও বাংলার বাইরে বিভিন্ন রাজ্যে ঘাসফুল ফোটানোর পরিকল্পনা করে তৃণমূল কংগ্রেস। উত্তর-পূর্ব ভারতের রাজ্যগুলিতে সবুজ ঝড় তুলতে প্রথম থেকেই ঝাঁপিয়েছিল বাংলার শাসক দল। ত্রিপুরার পাশাপাশি ‘ফোকাস’ ছিল মেঘালয়ও। আর ব্লু প্রিন্ট তৈরির দায়িত্ব দেওয়া হয় তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সভাপতি এবং তৃণমূলের সেকেন্ড ইন কম্যান্ড অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতে। এদিকে এই দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকে কখনও ত্রিপুরা, গোয়া আবার কখনও মেঘালয়ে উড়ে গিয়েছেন তিনি। সেখানে জনসংযোগ কর্মসূচিতে যোগ দিয়েছেন। গত বছর গোয়াr বিধানসভা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেও শূন্য হাতে ফিরতে হয়েছিল তৃণমূল কংগ্রেসকে। সেই পরাজয়ের পর ২০২৩ সালে ত্রিপুরা ও মেঘালয় নির্বাচনের আরও একবার ক্ষমতা পরখের লড়াই। কারণ রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, মেঘালয়ের উপর তৃণমূলের বিস্তার পরিকল্পনা অনেকাংশেই নির্ভরশীল এবং মেঘালয়ে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পেলেও সেই রাজ্যে অন্যতম বড় রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে উত্থান হতে পারে তৃণমূল কংগ্রেসের। এবার শুধুই নির্বাচনের ফলাফল দেখার পালা।

মেঘালয়ে জনসংযোগ কর্মসূচিতে কোনও খামতি রাখেনি তৃণমূল। তৃণমূল কংগ্রেস সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে শুরু করে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় মেঘালয়ে নির্বাচননী প্রচারে ঝড় তুলেছিল। তবে মেঘালয়ে পা রাখার পর থেকে খেলাটা তৃণমূলের পক্ষেই ছিল। ২০২১ সালে মেঘালয় কংগ্রেসের ১৭ জন বিধায়কের মধ্যে ১২ জন বিধায়কই তৃণমূলে যোগ দেন। কংগ্রেসের হাত ছেড়ে এসেছিলেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মুকুল সাংমাও। ফলে তাঁর নেতৃত্বে মেঘালয়ে ক্ষমতা বেড়েছে তৃণমূলের, দাবি দলীয় নেতৃত্বের। সংশ্লিষ্ট রাজ্যে ৫৬টি আসনে প্রার্থী দিয়েছে তৃণমূল। মুকুল সাংমা দুটি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। নির্বাচনের অন্তত পাঁচ মাস আগে তৃণমূল এই মেঘের রাজ্যে প্রচার শুরু করেছে। এক বছরের বেশি সময় ধরে রাজ্যে ধীরে ধীরে নিজেদের জমি তৈরি করেছে তারা। এখনও পর্যন্ত যা ট্রেন্ড দেখা যাচ্ছে তাতে বলা যায়, মেঘালয়ে ভালো ফল করবে তৃণমূল কংগ্রেস। উল্লেখ্য, লোকসভা নির্বাচনের আগে উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলির নির্বাচন সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলির জন্যই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল। ত্রিপুরাতেও বিশেষ নজর দিয়েছিল তৃণমূল। ত্রিপুরাতে খাতা খুলতে না পারলেও মেঘের রাজ্যে ভালো ফল করতে চলেছে তৃণমূল, আর এই বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই।

অন্যদিকে নাগাল্যান্ডে এনডিপিপি ও বিজেপি জোট ক্ষমতাসীন। মুখ্যমন্ত্রী নেইফিউ রিও এনডিপিপির নেতা। রিও বিভিন্ন দফায় পৃথকভাবে ১৮ বছর ধরে নাগাল্যান্ডের মুখ্যমন্ত্রী। নাগাল্যান্ডে এনডিপিপি লড়েছে ৪০টি আসনে, বিজেপি ২০টিতে। কোনো বিশ্বাসযোগ্য বিরোধী দল না থাকার ফলে নিশ্চিতভাবেই বলা যেতে পারে এনডিপিপি-বিজেপি জোটই সেখানে ক্ষমতায় আসবে। তবে মেঘালয়ে ভালো রকম অস্বস্তিতে রয়েছে বিজেপি। এর কারণ, মেঘালয়ের ক্ষমতাসীন দল ন্যাশনাল পিপলস পার্টি (এনপিপি) বিজেপিসহ অন্যান্য দলের সঙ্গে মিলে ২০১৮ সাল থেকে সেখানে সরকার চালালেও, নির্বাচন লড়ছে পৃথক ও এককভাবে। কিন্তু ত্রিপুরাতে বিজেপি আবারও সরকার গঠন করতে চলেছে।

ত্রিপুরা বিধানসভা নির্বাচন ২০২৩ (দুপুর ১২টা):

বিজেপি – ৩৩

বাম-কংগ্রেস জোট – ১৬

তৃণমূল কংগ্রেস – ০০

মেঘালয় বিধানসভা নির্বাচন ২০২৩ (দুপুর ১২টা):

বিজেপি – ০৫

এনপিপি – ২৬

তৃণমূল কংগ্রেস – ০৫

কংগ্রেস – ০৫

নাগাল্যান্ড বিধানসভা নির্বাচন ২০২৩ (দুপুর ১২টা):

এনডিপিপি – ২০

বিজেপি – ২০

এনপিএফ – ৩

এইরকম রাজনৈতিক বিষয়ক প্রতিবেদন পেতে ওয়ান ওয়ার্ল্ড নিউজ বাংলার সাথে যুক্ত থাকুন।

Sanjana Chakraborty

Professional Content Writer

Leave a Reply

Your email address will not be published.