আবারও বাংলার উন্নয়নের মুকুটে নয়া পালক, এবার পর্যটন ক্ষেত্রে

‘দেশেরও গর্ব’, উচ্ছ্বাসে টুইট রাজ্যপালের

হাইলাইটস:

•বার্লিনের আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ও পর্যটন মেলা চলবে ৭ই মার্চ থেকে ৯ই মার্চ পর্যন্ত

•বাংলা পেতে চলেছে পর্যটন ক্ষেত্রে সেরার শিরোপা

•পুরস্কারটি আনতে বার্লিন যাচ্ছেন পর্যটন দফতরের নয়া সচিব নন্দিনী চক্রবর্তী

বার্লিনের আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ও পর্যটন মেলা শুরু হতে চলেছে গতকাল অর্থাৎ ৭ই মার্চ থেকে। আর চলবে আগামী ৯ই মার্চ পর্যন্ত। দীর্ঘ বেশ কয়েক বছর পর বার্লিনের আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ও পর্যটন মেলায় অংশ নিতে চলেছে পশ্চিমবঙ্গ। রাজ্যের নামীদামি পর্যটন সংস্থা এই মেলায় যোগ দিচ্ছে। এই মেলাতে সাংস্কৃতিক-পর্যটন ক্ষেত্রে সবচেয়ে আকর্ষণীয় গন্তব্যস্থল হিসেবে পুরস্কৃত হচ্ছে বাংলা। আন্তর্জাতিক স্তরের একটি পর্যটন সংস্থা এই পুরস্কার দিচ্ছে। সূত্রের খবর, এই পুরস্কার আনতে নন্দিনী চক্রবর্তী যাচ্ছেন বার্লিন। যিনি এতদিন রাজ্যপালের প্রধান সচিব পদে ছিলেন। যদিও গত মাসেই তাঁকে অব্যাহতি দেওয়া হয় রাজভবনের তরফে। এরপরই মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়-র দফতর পর্যটনের সচিবের দায়িত্ব পান নন্দিনী। আর তাঁকেই এই দায়িত্ব দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এরপরই বাংলার এই স্বীকৃতির সম্মানপ্রদান অনুষ্ঠানে যাচ্ছেন নন্দিনী। তাঁর সঙ্গে বার্লিন যাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রীর দফতরের (CMO) সচিব পিবি সেলিম।

জানা গিয়েছে, আইটিবি বার্লিন (ITB- Berlin) বা ইন্টারন্যাশনাল ট্যুরিজম বোরসে-র তরফে এক পর্যটন মেলার আয়োজন করা হয়। এটি বিশ্বের সবথেকে বড় ট্যুরিজম ট্রেড ফেয়ার বলে জানা গিয়েছে। সেখানে প্রতি বছরই বিশ্বের বিভিন্ন হোটেল, ট্যুরিজম বোর্ড, ট্যুর অপারেটর, সিস্টেম প্রোভাইডার, বিমান সংস্থা সহ পর্যটনের সঙ্গে যুক্ত বিভিন্ন সংস্থা অংশ নেয়। পাশাপাশি বিভিন্ন দেশের সরকার তথা পর্যটন দফতরও অংশ নিয়ে থাকে।

সাংস্কৃতিক পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে সেরার তকমা দেওয়ার জন্য বেছে নেওয়া হয়েছে আমাদের রাজ্যকে। এ রাজ্যে তৃণমূল সরকার ক্ষমতায় আসার পর পর্যটন ক্ষেত্রে আমূল পরিবর্তন হয়েছে। ভেঙে পড়া পর্যটন কেন্দ্রগুলি ও তীর্থক্ষেত্রগুলিতে ঢালাও টাকা অনুমোদন করে সেগুলির পুনরুজ্জীবন ঘটিয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। মুখ্যমন্ত্রী নিজে উদ্যোগ নিয়ে অনেক মন্দির ও মন্দির চত্বর সংস্কার করিয়েছেন। যেসব পর্যটন কেন্দ্রগুলি সরকারি উদ্যোগের অভাবে ক্ষতিগ্রস্ত ছিল, সেগুলিকে পুনর্গঠন করে নতুন করে সাজিয়ে তোলা হয়েছে। বহু জায়গায় হোম স্টে-র মাধ্যমে পর্যটকদের কম পয়সায় থাকার সুযোগের সঙ্গে স্থানীয় মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ বৃদ্ধি ঘটানো হয়েছে। পাহাড়ি এলাকাগুলির নির্জন স্পটগুলিকে নতুন পর্যটনের ঠিকানা হিসেবে গড়ে তুলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। পাহাড় থেকে সাগর, দার্জিলিং থেকে দিঘা বাংলা জুড়ে ছড়ানো পর্যটনের নানা ক্ষেত্র। তবে তার থেকেও বড় কথা বাংলার পর্যটনের একটি ভিন্ন ব্যাপার রয়েছে। বাংলার পর্যটনের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে সেই অঞ্চলের সংস্কৃতির বিষয়টিও। এটা পর্যটনের সঙ্গেই যুক্ত। সেই সাংস্কৃতিক পর্যটনও এবার স্বীকৃতি পাচ্ছে। ফলে বাংলার মুকুটে যোগ হল নয়া পালক। “বেস্ট ডেস্টিনেশন ফর কালচার” অ্যাওয়ার্ড পেল পশ্চিমবঙ্গ।

বিশ্ব শিরোপা বাংলার কথা, আগেই নবান্ন সূত্রে খবর প্রকাশ্যে এসেছিল। এবার এই স্বীকৃতির কথা জানিয়ে টুইট করলেন বাংলার নয়া রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। রবিবার টুইটারে তিনি লেখেন, “২০২০ সালে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী কলকাতায় বলেছিলেন, ভারত হেরিটেজ টুরিজমের হাব হয়ে উঠবে। এই জাতীয় প্রতিশ্রুতিকে অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে দেখেছে পশ্চিমবঙ্গ। মুখ্যমন্ত্রীর হাত ধরে তা আজ উন্মোচিত হয়েছে। রাজ্যপাল তাঁর টুইটে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথাও উল্লেখ করেছেন। তিনি লিখেছেন, “Cooperative Federalism in Tourism Promotion।” অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণভাবে তিনি একথা উল্লেখ করেছেন। এর পাশাপাশি তিনি আরও জানান, ‘বেস্ট ডেস্টিনেশন ফর কালচার’ বিভাগে বাংলার পুরস্কার জেতা জাতির জন্যও অত্যন্ত গর্বের। আগামী ৯ই মার্চ ২০২৩ ওয়ার্ল্ড টুরিজম অ্যান্ড অ্যাভিয়েশন লিডার্স সামিট হবে বার্লিনে। সেখানেই এই সম্মান দেওয়া হবে। যা দেশের জন্যও গর্বের” বলেই উল্লেখ করেন রাজ্যপাল।

রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, পর্যটন ক্ষেত্রে নিঃসন্দেহে বড় স্বীকৃতি। যে বাংলার দুর্গাপুজোকে স্বীকৃতি দিয়েছে ইউনেস্কো, সেই বাংলারই সাংস্কৃতিক পর্যটনকে বিরাট গুরুত্ব দিচ্ছে আন্তর্জাতিক মঞ্চ। বার্লিনের এই পর্যটন মেলার যথেষ্ট কদর রয়েছে বিশ্ব পর্যটন মানচিত্রে। তাই সেখানে বিশ্বের অন্যান্য বৃহৎ দেশগুলির মধ্যে ঠাঁই পেতে চলেছে পশ্চিমবঙ্গ, যা নিঃসন্দেহে একটি গর্বের বিষয়।এটি রাজ্য সরকারের কাছে অত্যন্ত গর্বের। এটি গোটা রাজ্য তথা দেশের কাছেও গর্বের। তবে একদিকে পর্যটন ক্ষেত্রে বাংলার বিরাট স্বীকৃতি এবং অন্যদিকে এই বিষয়ে স্বয়ং রাজ্যপালের টুইট দুটোই অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে।

এইরকম রাজনৈতিক বিষয়ক প্রতিবেদন পেতে ওয়ান ওয়ার্ল্ড নিউজ বাংলার সাথে যুক্ত থাকুন।

Sanjana Chakraborty

Professional Content Writer

Leave a Reply

Your email address will not be published.