শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে এবার উঠে এসেছে রহস্যময়ী এক নারীর নাম! জেনে নিন তার পরিচয়

অর্পিতার পর এবার নজরে আরও এক মহিলা

হাইলাইটস:

•শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে নয়া দাবি কুন্তল ঘোষের

•গোপাল দলপতির দ্বিতীয় স্ত্রী হলেন হৈমন্তী গঙ্গোপাধ্যায়

•গোপাল এবং হৈমন্তীর বিপুল পরিমান সম্পত্তির হদিশ

কলকাতা: শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে এবার কুন্তল ঘোষের মুখে হৈমন্তী গঙ্গোপাধ্যায়ের নাম। আদালত থেকে বেরোনোর পথে হুগলির যুব তৃণমূল নেতা জানিয়েছেন, সব টাকা আছে হৈমন্তী গঙ্গোপাধ্যায়ের কাছে। নিয়োগ দুর্নীতিতে অর্পিতার পর আবারও এক মহিলার নাম। শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে কেন বার বার মহিলাদের নাম উঠে আসছে এই নিয়ে রাজনৈতিক মহলে উঠছে প্রশ্ন। কিন্তু কে এই হৈমন্তী গঙ্গোপাধ্যায়? হুগলির যুব নেতার বয়ানে নিয়োগ কেলেঙ্কারিতে পরপর সামনে আসছে আরও অনেক বিস্ফোরক তথ্য। এর আগে গোপাল দলপতির বিরুদ্ধে চাকরিপ্রার্থীদের কাছ থেকে টাকা তোলা সহ একাধিক অভিযোগ করেন কুন্তল। তাকেই দুর্নীতিকাণ্ডে প্রধান লোক বলেও অভিযোগ করেন তিনি।

সূত্রের খবর, গোপাল দলপতির আর এক নাম আরমান গঙ্গোপাধ্যায়। তার দ্বিতীয় স্ত্রী হলেন হৈমন্ত্রী গঙ্গোপাধ্যায়। গোপাল দলপতির নথিতে নমিনি হিসেবে হৈমন্তীর নাম উল্লেখ আছে। সিবিআই সূত্রে খবর, গোপাল দলপতির লিভ ইন পার্টনার ছিলেন হৈমন্তী গঙ্গোপাধ্যায়। গোপালের আগে একটি বিয়ে ছিল সেই স্ত্রীকে ছেড়ে হৈমন্তীর প্রেমে পড়ে লিভ ইন শুরু করেন, যদিও কুন্তলের দাবি, গোপালের দ্বিতীয় স্ত্রী হৈমন্তী। তদন্তকারীদের দাবি, গোপালের ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্টে একটি সংস্থার হদিশ পেয়েছেন তারা। গোপালের দ্বিতীয় স্ত্রী হৈমন্তীর কাছেই নাকি রয়েছে সব টাকা, এমনই দাবি করেছেন কুন্তল ঘোষ।

নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে গত ২১শে জানুয়ারি গ্রেফতার করা হয় কুন্তলকে। এরপরই তাপসের বিরুদ্ধে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ করেন যুব তৃণমূল নেতা। পাল্টা কুন্তলকেই নিশানা করেন তাপস। এই সময়ই গোপাল দলপতির নাম উঠে আসে। টাকা লেনদেনে গোপালও জড়িত বলে জানতে পারেন তদন্তকারীরা। গোপালকে কয়েক দফায় জিজ্ঞাসাবাদও করেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। গত রবিবার তাপসকে গ্রেফতার করে সিবিআই। এর পরই হৈমন্তীর নাম প্রকাশ করেন কুন্তল। পাশাপাশি গোপালেরই আরও এক নাম আরমান বলে দাবি করেন তিনি।

জানা গেছে, গোপাল দলপতি নাকি পার্টনারশিপে কোম্পানিও খুলেছিলেন হৈমন্তীর সঙ্গে। নাম দিয়েছিলেন হৈমন্তী অ্যাগ্রো প্রাইভেট লিমিটেড। সেই কোম্পানিতে ডিরেক্টর ছিলেন স্বামী-স্ত্রী দুজনেই। ৯ বছর পর রাতারাতি বন্ধ হয়ে যায় কোম্পানিটি। বছর দুয়েক আগে অন্য মামলায় গ্রেফতার হন গোপাল। তিহার জেলে ছিলেন বন্দি।পরে জামিনে মুক্তি পান। শুধুই হৈমন্তীর সঙ্গে এই সংস্থা নয় সিবিআইয়ের তথ্য তলাশে উঠে আসছে গোপালের আরও পাঁচটি সংস্থার নাম। হাওড়ার বাকসাড়া এলাকায় পৈতৃক বাড়ি রয়েছে হৈমন্তী গঙ্গোপাধ্যায়ের। পরিবার সূত্রে খবর, তিনি পেশায় ছিলেন মডেল। প্রতিবেশীরা জানাচ্ছেন, হৈমন্তীর বাবা-মা এলাকায় বলতেন, মেয়ে সিরিয়াল, সিনেমা করেন। গভীর রাত পর্যন্ত বাকসাড়ার বাড়ির সামনে বিলাসবহুল সব গাড়ি দাঁড়িয়ে থাকত বলেও দাবি স্থানীয়দের। টালিগঞ্জেও তার একটি ফ্ল্যাট রয়েছে। আবার বেহালা চৌরাস্তায় রাজা রামমোহন রায় রোডে রাস্তার পাশেই হৈমন্তী গঙ্গোপাধ্যায়ের আরও একটি ফ্ল্যাট রয়েছে। জানা গিয়েছে, গোপাল দলপতির সঙ্গে এই হৈমন্তীর বিয়ে হলেও বছর তিনেক আগে ডিভোর্স হয়ে যায়। কুন্তল দাবি করেছেন, হৈমন্তীর কাছে নিয়োগ দুর্নীতির বিরাট অঙ্কের টাকা পৌঁছেছিল।

২০১৮ সালের পর থেকে গোপাল ও হৈমন্তী দুজনই আলাদা থাকতেন। মুম্বাইতে হৈমন্তীর কোম্পানিতে গোপাল বিপুল পরিমান টাকা ট্রান্সফার করেছিল। এমনকী গোপালের বিপুল পরিমান জমি ও হৈমন্তীর কোম্পানির নামে। ফলে কুন্তল যে বার বার অভিযোগ করছে এজেন্ট মারফত কোটি কোটি টাকা কুন্তলের থেকে গোপাল দলপতি মুম্বাইতে নিজের স্ত্রী কোম্পানির ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টয়ে টাকা ট্রান্সফার করেছিল বলে অভিযোগ। সিবিআই সূত্রে খবর, গোপালের প্রায় ২৪টি জমি প্লট রয়েছে পূর্ব মেদিনীপুর, হাওড়া, হুগলি-সহ এ রাজ্য বিভিন্ন জায়গায় এই বিপুল জমি রয়েছে। বেশিরভাগ জমি গোপালের স্ত্রী এবং স্ত্রীয়ের কোম্পানির নামে। এত জমি কেনার টাকা কোথা থেকে পেলেন গোপাল? সিবিআই গোপালকে প্রশ্ন করেছিল। কিন্তু উত্তরে অসঙ্গতি মেলে। ফলে শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলাটি নয়া মোড় নিয়েছে।

Sanjana Chakraborty

Professional Content Writer

Leave a Reply

Your email address will not be published.