অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ক্যামাক স্ট্রিটের অফিসে খড়্গপুরের বিজেপি বিধায়ক হিরণ চট্টোপাধ্যায়ের ভাইরাল হয়ে যাওয়া ছবি ঘিরে বঙ্গ-রাজনীতিতে শুরু হয়েছে জোর জল্পনা

তিনি খড়্গপুরের বিজেপি বিধায়ক

খড়্গপুর সদরের বিজেপি বিধায়ক হিরণ চট্টোপাধ্যায় বাংলার বিধানসভা ভোটের আগে তৃণমূলেই ছিলেন। তারপর ভোটের আবহে তিনি বিজেপিতে যোগদান করেন এবং খড়্গপুর সদর থেকে বিজেপির টিকিটে জিতে বিধায়ক হন। কিন্তু খড়্গপুরের রাজনৈতিক অলিন্দে কান পাতলে শোনা যায়, দলীয় সাংসদ তথা প্রাক্তন বিধায়ক দিলীপ ঘোষের সঙ্গে মতানৈক্য তৈরি হয়েছে হিরণের। একাধিক দলীয় বৈঠকে তিনি ডাক পাননি বলে অভিযোগ করেছেন। যদিও সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন দিলীপ ঘোষ। তবে দলের অন্দরে যে হিরণের সঙ্গে একটা দূরত্ব বেড়েছে, তা একপ্রকার স্পষ্ট। মাঝে তাঁর সঙ্গে আলাদা করে বৈঠক করেন রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। তখন মনে করা হয়েছিল, বিষয়টির মিটমাট হয়ে গিয়েছে।

হিরণ চট্টোপাধ্যায়ের রাজনৈতিক অবস্থান নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরেই জল্পনা চলছিল বিজেপির অন্দরে। সম্প্রতি তৃণমূলের সেকেন্ড-ইন-কম্যান্ড অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ক্যামাক স্ট্রিটের অফিসেও হিরণ গিয়েছিলেন বলে একটি খবর প্রকাশ্যে এসেছিল। যদিও সেকথা উড়িয়ে দিয়েছেন হিরণ। কিন্তু এই আবহে তৃণমূলের প্রতীক সম্বলিত একটি দেওয়ালের সামনে পিংলার বিধায়ক তথা পশ্চিম মেদিনীপুর তৃণমূল জেলা সভাপতি অজিত মাইতির পাশে বসে আছেন তিনি। যা নিয়ে নতুন করে জল্পনা শুরু হয়েছে। হিরণের তরফে সরাসরি কোনও প্রতিক্রিয়া আসেনি। তবে একটি পুরনো ভিডিও টুইট করেছেন তিনি। দেখা যাচ্ছে, বিজেপির একটি সভায় ভাষণ দিচ্ছেন। ওই ভিডিওয় তিনি শুভেন্দু অধিকারী, দিলীপ ঘোষ, সুকান্ত মজুমদার ও অমিত মালব্যদের ট্যাগ করেছেন। রাজ্য বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য হিরণের তৃণমূলে যোগদানের জল্পনা খারিজ করে দিয়ে বলেন যে, এটি তাঁর পুরোনো ছবি।

কিছুদিন আগে এক জনসভায় তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি করেছিলেন, তৃণমূল যদি একবার দরজা খোলে বিজেপির বহু নেতা-কর্মী স্রোতের মতো তৃণমূলে যোগ দিতে হাজির হবেন। বিজেপির বহু তারকা নেতাও তৃণমূলে যোগ দেবেন বলে দাবি জানান তিনি। অভিষেকের সেই মন্তব্যের পরই রাজনৈতিক মহলে শোরগল শুরু হয়েছিল। এরপরই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ক্যামাক স্ট্রিটের অফিসে দুই বিজেপি বিধায়ক হাজির হয়েছেন বলে সূত্রের খবর প্রকাশ্যে এসেছিল। কিন্তু ওই দুই বিজেপি বিধায়ক কারা ছিলেন, তা জানা যায় নি। তবে তাঁদের মধ্যে একজন খড়্গপুর সদরের বিধায়ক হিরণ চট্টোপাধ্যায় ছিলেন বলে জোড় জল্পনা শুরু হয়েছে। কিন্তু হিরণের তরফে সরাসরি কোনও প্রতিক্রিয়া আসেনি।

খড়্গপুরের বিধায়ক হিরণ এবং বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষের দ্বন্দ্বের কারণেই কী তৃণমূলে পুনরায় ফিরতে চলেছেন তিনি? এখন এই প্রশ্নই ঘুরছে রাজনৈতিক মহলে। দীর্ঘদিন ধরেই এই জল্পনা চলছিল। ঘরওয়াপসি কী হতে চলেছে তাঁর? এই রহস্য থেকে পর্দা উন্মোচন করতে পারেন বিজেপি বিধায়ক হিরণই। যদিও এই ভাইরাল ছবিটিকে বিশেষ গুরুত্ব দিতে নারাজ রাজ্য বিজেপি। কিন্তু রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই ভাইরাল ছবিটি ঘিরে এখন রাজ্য বিজেপি কিছুটা চাপে পরে গেছে। বাংলার পঞ্চায়েত ভোটের আগে হিরণের ঘরওয়াপসি এখন খালি সময়ের অপেক্ষা।

Sanjana Chakraborty

Professional Content Writer

Leave a Reply

Your email address will not be published.